অবৈধ বাংলাদেশি ইস্যুতে প্ৰ তিশ্ৰুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন প্ৰধানমন্ত্ৰীঃ আসু

গুয়াহাটিঃ প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি অসম থেকে অবৈধ বাংলাদেশি বিতাড়নে তাঁর প্ৰতিশ্ৰুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। এই প্ৰশ্ন তুলেছে সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা(আসু)।
আসুর সভাপতি দীপাঙ্ক কুমার নাথ এবং সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কড়া ভাষায় এক যৌথ বিবৃতিতে প্ৰধানমন্ত্ৰীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন,২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনী প্ৰচার সভায় প্ৰধানমন্ত্ৰী ওই বছরই ১৬ মে-র পরে তল্পিতল্পা সহ সব বাংলাদেশিদের অসম থেকে ফেরত পাঠানোর প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন কেটে যাওয়ার পরও একজনও বাংলাদেশিকে অসম থেকে ফেরত পাঠানো হয়নি বলে উভয় আসু নেতা উল্লেখ করেন। ‘একজন প্ৰধানমন্ত্ৰী হিসেবে তিনি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ প্ৰতিশ্ৰুতি লঙ্ঘন করেছেন। এটা কি প্ৰধানমন্ত্ৰীর প্ৰতিশ্ৰুতি খেলাপের প্ৰমাণ তুলে ধরার ক্ষেত্ৰে যথেষ্ট নয়’। বিবৃতিতে প্ৰশ্ন তুলেছেন আসুর উভয় নেতা।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পেশ করা নিয়ে সোমবার নয়াদিল্লিতে যৌথ সংসদীয় কমিটির(জেপিসি)বৈঠকে কিছু বিরোধী সদস্য আপত্তি ও সুপারিশ উত্থাপন করার একদিন পরই আসু এই বিবৃতি প্ৰকাশ করে। এদিন যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্ৰস্তাবটি ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যায়।
আসু বলেছে,২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং ২০১৬-র অসম বিধানসভা নির্বাচনের সময় শাসক বিজেপি দল প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিল রাজ্যের স্থানীয় ভূমিপুত্ৰদের অস্তিত্ব রক্ষা করা হবে। কিন্তু নির্বাচনে উতরে যাওয়ার পরই দল এই বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ বেঁকে বসে এবং তারা ঐতিহাসিক অসম চুক্তি লঙ্ঘন করে নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল আনতে উঠেপড়ে লাগে। ‘বিজেপি ২০১৬-সালের বিধানসভা নির্বাচনকে অসমীয়া মানুষের জন্য শরাইঘাটের শেষ লড়াই বলে অভিহিত করেছিল। তাহলে শরাইঘাটের ওই শেষ লড়াইয়ের অর্থ কি অবৈধ বাংলাদেশিদের রক্ষণাবেক্ষণ দেওয়ার স্বার্থেই ছিল?
আসু নেতা লুরিনজ্যোতি গগৈ বলেন,যৌথ সংসদীয় কমিটি(জেডিপি)নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষ ও সংগঠনগুলির মতামত ও সুপারিশগুলি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে চলেছে। তিনি বলেন,জেপিসি-র এধরনের একরোখা অবস্থান আসু কখনোই বরদাস্ত করবে না। আসু এর বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে তিনি জানান।
যৌথ সংসদীয় কমিটির(জেপিসি)বৈঠক সোমবার নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় কমিটির চেয়ারম্যান রাজেন্দ্ৰ প্ৰসাদের নেতৃত্বে। ওই বৈঠকে বিরোধী সদস্যদের উত্থাপিত প্ৰধান আপত্তি ও সুপারিশগুলি ভোটাভুটির জন্য তোলেন চেয়ারম্যান। বিরোধীদেগ উত্থাপিত ইস্যুগুলি ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে যায়। এই ভোটাভুটির ফলে বিতর্কিত বিলটি সংসদে পাশ হওয়ার ক্ষেত্ৰে আরও একধাপ এগলো।
এদিকে আসু বলেছে,আগামি ৫ জানুয়ারি নাগরিকত্ব বিল ইস্যু নিয়ে তারা গুয়াহাটিতে অন্যান্য ৩০টি জাতীয় সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ভবিষ্যৎ আন্দোলন কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য। বর্তমানে বরাক উপত্যকায় বিলের পক্ষে জোর হাওয়া বইলেও ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকায় তার উল্টো চিত্ৰই দেখা যাচ্ছে। ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকায় বিভিন্ন দল,সংগঠন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।