অসম চুক্তির ছয় নম্বর দফা কবে রূপায়িত হবে?

গুয়াহাটিঃ তদানীন্তন কংগ্ৰেস জমানা এবং বিজেপি শাসিত বর্তমান জোট সরকারের সময়ে অসম সরকার বেশকটি ক্যাবিনেট সাব-কমিটি গঠন করার পরও অসম চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ছয় নম্বর দফা রূপায়ণ এবং অসমিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণের কাজে আজ অবধি কোনও অগ্ৰগতি না হওয়ার বিষয়টি বাস্তবিকই আশ্চয্যের। দীর্ঘ ছয় বছর আন্দোলনের পর ১৯৮৫ সালের ১৫ আগস্ট ঐতিহাসিক অসম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্ৰবেশের বিরুদ্ধে অসমের খিলঞ্জিয়া মানুষের সাংবিধানিক,আইনগত ও প্ৰশাসনিক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করার কথা সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে অসম চুক্তির ছয় নম্বর দফায়। ক্যাবিনেট সাব-কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য সরকার এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কিছু সুপারিশ কেন্দ্ৰের দরবারে পেশ করেছিল। সময়ে সময়ে কিছু ক্যাবিনেট সাব কমিটি বৈঠকে মিলিত হওয়া সত্ত্বেও বিষয়গুলি নিয়ে কোনও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি।
২০০৬ সালে কংগ্ৰেস দ্বিতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর তদানীন্তন রাজস্বমন্ত্ৰী ড.ভূমিধর বর্মনের নেতৃত্বে এধরনের সাব-কমিটি প্ৰথমবার গঠন করা হয়েছিল। পাঁচ সদস্যের এই ক্যাবিনেট সাব-কমিটি বিষয়টি নিয়ে চার দফা বৈঠক করেছিল। এরপর ২০১১ সালে কংগ্ৰেস তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয়বার এধরনের প্যানেল গঠন করে। সেবার তদানীন্তন মন্ত্ৰী পৃথ্বী মাঝিকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়ে গঠন করা হয়েছিল আটজনের এই প্যানেল। আট সদস্যের এই প্যানেল তিনবার বৈঠকে মিলিত হয়। এরপর ২০১৬ সালে দিশপুরে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। ক্ষমতায় আসে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। প্ৰাক নির্বাচনি প্ৰতিশ্ৰুতির অংশ হিসেবে মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল অসম চুক্তির ৬নম্বর দফা ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি) সম্পর্কে আরও একটি ক্যাবিনেট সাব কমিটি গঠন করেছিলেন। বর্তমান অর্থমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটি ইতিমধ্যে দুদুবার বৈঠকে বসলেও বিষয়টি নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট সমাধানে পৌঁছতে পারেনি।
অসম চুক্তির ছয় নম্বর দফা রূপায়ণে সম্প্ৰতি স্বরাষ্ট্ৰ মন্ত্ৰকের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির অধিকাংশ সদস্য ওই কমিটি থেকে বেরিয়ে আসেন কেন্দ্ৰীয় সরকার বিতর্কিত নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল লোকসভায় পাস করার পর। বর্তমানে নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল বাতিলের দাবিতে অসম ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্ৰতিবাদের আগুন জ্বলছে। তাই রাজ্য সরকার বর্তমান পরিস্থিতিতে অসম চুক্তির ৬নং দফা ও অসমিয়ার সজ্ঞা নির্ধারণের বিষয়ে কীভাবে এগোবে সেটাই লক্ষ্যণীয়।