মেঘালয়ের খনিতে আটকে পড়া শ্ৰমিকদের উদ্ধারে রাজ্য সরকারকে কড়া নির্দেশ সুপ্ৰিম কোর্টের

নয়াদিল্লিঃ মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তীয়া পাহাড়ের ’রেট হোল’ খনি বিপর্যয়ের ঘটনায় রাজ্যের কনরাড সাংমা সরকারের ভূমিকার বৃহস্পতিবার কড়া সমালোচনা করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। ওই খনিতে আটকে পড়া ১৫ জন খনি শ্ৰমিকের উদ্ধারে দ্ৰুত,সক্ৰিয় কার্যকরী অভি্যান চালাতে বলেছে সুপ্ৰিমকোর্ট। জলে ভরা অন্ধকার খনি গহ্বর থেকে ১৫ শ্ৰমিকের উদ্ধারে রাজ্য সরকার এপর্যন্ত যে সব ব্যবস্থা গ্ৰহণ করেছে তাতে মোটেই সন্তুষ্ট নয় সর্বোচ্চ আদালত। কোর্ট মনে করে,আটক খনি শ্ৰমিকদের উদ্ধারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়নি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্ৰে সমন্বয়য়েরও অভাব রয়েছে। উদ্ধার আভিযানে এখনও পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে কেন নামানো হলো না শীর্ষ আদালত এমন প্ৰশ্নও তুলেছে।
বিচারপতি একে সিকরি এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরের নেতৃত্বে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে,জল থইথই খনিতে আটকে পড়া শ্ৰমিকদের এখানে জীবন মরণের প্ৰশ্ন জড়িয়ে আছে। শ্ৰমিকরা জীবিত অথনা মৃত যে অবস্থায় থাকুক তাদের উদ্ধার করতেই হবে-বলেছে বেঞ্চ। ‘রাজ্য সরকারের চালানো উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে আমরা মোটেই খুশি নই। আটকে পড়া শ্ৰমিকরা সবাই জীবিত আছেন না মারা গেছেন সেটা বড় কথা নয়। যেকোনওভাবেই তাদের উদ্ধার করতে হবে। তবে শ্ৰমিকরা যাতে বেঁচে থাকে তার জন্য আমরা ইশ্বরের কাছে প্ৰার্থনা জানাচ্ছি’। বর্তমানে চলা উদ্ধার আভিযান সম্পর্কে রাজ্য সরকারকে এক ঝাড় দিয়েই কথাগুলি বলেন বিচারপতি সিকরি। উদ্ধার আভিযানে সময়মতো সেনাবাহিনীকে কেন নামানো হলো না সিকরি সেই প্ৰশ্নও তোলেন। উদ্ধার আভিযান কীভাবে চলছে সে ব্যাপারে শুক্ৰবার আদালতকে জানাতেও নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ।
‘সময়মতো জানানো হলে কেন্দ্ৰীয় সরকারও কিছু ব্যবস্থা নিতে পারতো। খনিতে আটক শ্ৰমিকদের উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর সাহা্য্য চাওয়া উচিত ছিল রাজ্য সরকারের। কেন রাজ্য সরকার সেনাবাহিনীর সাহা্য্য চায়নি বেঞ্চ ওই প্ৰশ্নও তুলেছে। ওখানে যারা উদ্ধার অভি্যান চালাচ্ছে তাদের মধ্যে সময়েরও ঘাটতি রয়েছে’। বিচারপতি সিকরি উদ্ধার অভি্যানের প্ৰতি নজর রাখতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলে পাঠিয়েছেন।
রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য বলা হয়েছে এনডিএফবি,নৌসেনা ও কোল ইন্ডিয়ার আধিকারিক ও কর্মীরা খনিতে আটকে পড়া শ্ৰমিকদের উদ্ধারে টানা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মেঘালয়ের এই খনি বিপর্যয় নিয়ে আইনজীবী আদিত্য এন প্ৰসাদের এক হলফনামার পরিপ্ৰেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার জরুরি শুনানি গ্ৰহণ করে ওই রায় দেন শীর্ষ আদালত।হলফনামায় প্ৰসাদ জানিয়েছিলেন,মেঘালয়ের ‘রেট হোল’ খনিতে জলের মধ্যে আটকে পড়া শ্ৰমিকদের উদ্ধারে কিরলস্কর ও টাটা ট্ৰাস্ট শক্তিশালী পাম্প মেশিন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাই বিমানে পাম্প আনা হলে সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু করা যাবে। প্ৰসাদের এই যুক্তি মেনেই সুপ্ৰিমকোর্ট মামলা নিয়ে শুনানি গ্ৰহণ করে। প্ৰায় কুড়ি দিন ধরে ওই ১৫ শ্ৰমিক খনিতে আবদ্ধ রয়েছেন। এরা জীবিত আছেন কি না সে ব্যাপারে এই মুহূর্তে হলপ করে কিছু বলা যাচ্ছে না।