রাজ্যের তিনটি স্থানে বিষ মদে মৃত্যু বেড়ে ৬৯

গুয়াহাটিঃ উজান অসমের চা বাগানে বিষাক্ত মদ খেয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এপর্যন্ত ৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার বিষ মদের ক্ৰিয়ায় আরও ৩২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। গোলাঘাটের শালমরা চা বাগানে সর্বপ্ৰথম বিষ মদে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর মেরাপানি এবং যোরহাট জেলার তিতাবর থেকেও বিষ মদে একের পর এক মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করে। স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা গোলাঘাট সিভিল হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থদের অবস্থার খোঁজ নেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষাক্ত মদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া কমপক্ষেও আরও ২০০ জন গোলাঘাট সিভিল হাসপাতলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গোলাঘাট জেলার শালমরা চা বাগানের চারজন শ্ৰমিক বিষাক্ত মদ খেয়ে বৃহস্পতিবার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওখানেই ওই দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তাদের মৃত্যু হয়। ওই মদে বিষাক্ত মিথাইল মেশানো থাকতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা সন্দেহ ব্যক্ত করেছেন। চা বাগান শ্ৰমিকদের মধ্যে চোলাই খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশই হচ্ছেন বাগান শ্ৰমিক। একাংশ বাগান শ্ৰমিক বলেছেন,দেশি মদ তৈরিতে সম্ভবত গবাদি পশুর কিছু খাদ্য মেশানো হয়েছিল,যার দরুন ওই মদ বিষাক্ত হয়ে পড়ে। চোলাই মদের বিরুদ্ধে বহুবার অভি্যান চালানোর পরও বাগান শ্ৰমিকরা ওই নেশা থেকে মুক্ত হতে পারেননি।
স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী শর্মা আজ যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। রোগীর চিকিৎসায় আরও ডাক্তারের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
চোলাই মদের বিষক্ৰিয়ার ঘটনা রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। রাজ্য সরকার বিষ মদে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য দুই লক্ষ টাকা এবং অসুস্থ প্ৰত্যেকের চিকিৎসা বাবদ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ওদিকে আবগারি বিভাগ চোলাই মদ উৎপাদন ও তা চা বাগানে বিক্ৰি করার বিরুদ্ধে অভি্যানে নেমেছে। মুখ্যমন্ত্ৰী আজ সকালে এই ইস্যু নিয়ে বরিষ্ঠ সরকারি কর্তাদের সঙ্গে একপ্ৰস্ত বৈঠক করে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী শর্মা বলেন,অসুস্থদের উন্নত চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি,তেজপুর,ডিব্ৰুগড় থেকে ডাক্তারদের ডাকা হয়েছে।
এদিকে নিখিল আদিবাসী ছাত্ৰ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেবেন ওরাং ‘এই ঘটনার জন্য রাজ্য আবগারি বিভাগকে দোষারোপ করেছেন। চোলাই মদের বিশেষ করে চা বাগানে এর অবাধ ব্যবহার রুখতে আবগারি বিভাগ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে’-অভিযোগ করেন ওরাং। যোরহাটের সাংসদ কামাখ্যা প্ৰসাদ তাসা বলেন,চোলাই তৈরিতে পশু খাদ্য ব্যবহার এবং চা বাগানে তা সরবরাহকারী চক্ৰের বিরুদ্ধে জোর অভিযান শুরু করা হয়েছে।