‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ ভারতের অস্তিত্ব নিয়ে প্ৰশ্ন উত্থাপনকারীদের মোক্ষম জবাবঃ মোদি

গুজরাটঃ লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের স্মরণে গুজরাটের নর্মদা নদীর তীরে নির্মিত স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ রাষ্ট্ৰের উদ্দেশে উৎসর্গ করে বুধবার প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি বলেন,ভারতের অস্তিত্ব নিয়ে যারা প্ৰশ্ন তুলেছিলেন,তাদের প্ৰতি এটাই হচ্ছে দেশের মোক্ষম জবাব। একইসঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলোর প্ৰয়াসের বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে একজোট হওয়ার আহ্বান জানান মোদি।
প্যাটেলের স্মরণে এখানে ১৮২ মিটার উঁচু বিশ্বের সর্বোচ্চ প্ৰতিমূর্তি নির্মাণ করা নিয়ে সমালোচকরা বিষয়টিতে রাজনৈতিক রং চড়ানোয় মোদি তাদের ক্ষুরধার সমালোচনা করেন। ‘ভারতের অস্তিত্ব নিয়ে যারা প্ৰশ্ন তুলেছে ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ এদেশের অখণ্ডতার কথাই তাদের স্মরণ করিয়ে দেবে। এই দেশ অতীত,বর্তমান ও ভবিষ্যতেও চিরন্তন থাকবে-বলেন মোদি। প্ৰধানমন্ত্ৰী আরও বলেন,সর্দার প্যাটেলের প্ৰতিমূর্তির উচ্চতা প্ৰতিক্ষণেই দেশের যুব সমাজকে স্মরণ করিয়ে দেবে যে গোটা দেশের ভবিষ্যৎ তাদের আশা-আকাঙ্খা ও প্ৰত্যাশার ওপরই নির্ভরশীল এবং এই মূর্তির মতোই সুবিশাল। আর এই আশা আকাঙ্খা ও প্ৰত্যাশা পূরণের একমাত্ৰ মন্ত্ৰ হচ্ছে এক ভারত,শ্ৰেষ্ঠ ভারত। ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারিগরি দক্ষতারও প্ৰতীক-বলেন মোদি। তিনি বলেন,দেশের ঐক্য,বৈচিত্ৰ্য ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার দায়িত্ব প্যাটেল দেশবাসীর হাতে অর্পণ করে গিয়েছিলেন। তাঁর সেই অধরা স্বপ্ন সাকারে দেশবাসীর দায়িত্ব হচ্ছে ভারতের অখণ্ডতার ক্ষেত্ৰে হুমকি হয়ে দাঁড়ানো শক্তিগুলোকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া।
সমাজ হিসেবে আমাদের আরও সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দুনিয়ার সর্বোচ্চ মূর্তি উন্মোচনকালে মোদি আবেগ জড়ানো কণ্ঠে বলেন,প্যাটেলের মতো একজন মহান নেতার মূর্তি উন্মোচনের সুযোগ পাওয়াটা আমার কাছে সত্যিই সৌভাগ্যের। এমন একটা মহান কাজের সুযোগ পাবো আগে কখনোই তা মনে আসেনি। তাই এমন কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি-বলেন মোদি। আরও বলেন,স্বাধীনতা পাওয়ার পর অনেকে ভেবেছিলেন,বিভিন্ন ভাষাভাষি,বিভিন্ন ধর্ম,বিভিন্ন জাতপাতের দেশ ভারত কখনোই ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারবে না,কিন্তু সর্দার প্যাটেল দেশবাসীকে এক সুতোয় গেঁথে তাদের সেই ধারণাকে ভুল প্ৰমাণ করে দিয়েছেন। দেশ আজ বিশ্ব দরবারের নিজের শক্তি ও সামর্থ্যের বলে মাথা উঁচু করে এগিয়ে চলেছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্যাটেলের ত্যাগ ও সুদৃঢ় সঙ্কল্পের জন্য। মোদি এদিন জোরের সঙ্গে বলেন,রাজস্থানের কচ্ছ থেকে নাগাল্যান্ডের কোহিমা এবং কারগিল থেকে তামিলনাডুর কন্যাকুমারী পর্যন্ত আজ আমরা সংযুক্ত,এক রয়েছি। এর আড়ালো রয়েছে সর্দার প্যাটেলের সঙ্কল্প ও দৃঢ় মানসিকতা। দেশকে অখণ্ড রাখার মূলে প্যাটেলের প্ৰয়াস চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মোদি বলেন,ঐতিহাসিক এই মূর্তিটি সারা দুনিয়ায় এক অসামান্য নজির। চিনের বিশ্বখ্যাত স্প্ৰিং টেম্পল বুদ্ধ(১৫৩ মিটার)এতদিন বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন ছিল। কিন্তু সুরম্য পরিবেশে স্থাপিত প্যাটেলের এই মূর্তি ওই উচ্চতাকেও ছাপিয়ে গেছে। আমেরিকার স্ট্যাচু অব লিবার্টির(৯৩ মিটার)তুলনায় প্ৰায় দ্বিগুণ নর্মদা পাড়ে প্যাটেলের এই মূর্তি,যা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২,৯৮৯ কোটি টাকা।