গুজরাটের নর্মদা তীরে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’-র উন্মোচন করলেন প্ৰধানমন্ত্ৰী

গুজরাটের নর্মদা তীরে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’-র উন্মোচন করলেন প্ৰধানমন্ত্ৰী

প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি আজ সকালে গুজরাটে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করলেন। লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের স্মরণে বিশ্বের সর্বোচ্চ এই প্ৰতিমূর্তি আজ দেশবাসীর উদ্দেশে উৎসর্গ করেন প্ৰধানমন্ত্ৰী। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্ৰামে অগ্ৰণী ভূমিকা নেওয়া তথা দেশের প্ৰথম স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ২৪৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। ভারত এই মহান নেতার প্ৰতি শ্ৰদ্ধা জানাতে আজকের দিনটি রাষ্ট্ৰীয় একতা দিবস হিসেবে পালন করছে। স্বাধীন ভারতের রূপকার হিসেবে পরিচিত সর্দার প্যাটেল ছিলেন কৃষক কল্যাণে সমর্পিত প্ৰাণ।

ঐক্যের প্ৰতিমূর্তি প্যাটেল ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়তে ৫৫০-টির বেশি রাজকীয় রাজ্যকে এক সুতোয় গেঁথেছিলেন। ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার কারিগর লৌহমানব প্যাটেলের প্ৰতি কৃতজ্ঞ সারা দেশ। দেশমাতৃর একনিষ্ঠ পূজারী সর্দার প্যাটেলের প্ৰতি শ্ৰদ্ধা জানাতে আজ গুজরাটের নর্মদার নদীর তীরে সর্দার সরোবর বাঁধের পাশে প্যাটেলের ১৮২ মিটার উঁচু বিশাল প্ৰতিমূর্তি উন্মোচন করা হয়। প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি সকাল ১০টায় অগণিত মানুষের উপস্থিতিতে প্যাটেলের ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ রাষ্ট্ৰের উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। বিশ্বের বৃহত্তম এই মূর্তি প্যাটেলের কর্মরাজির মতোই বিশাল। দেশের এই মহান নেতার প্ৰতি শ্ৰদ্ধা জানাতে বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় একতা দৌড়ের।

সারা বিশ্বে বিভিন্ন ব্যক্তির স্মৃতিতে এধরনের অনেক প্ৰতিমূর্তি স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু প্যাটেলের এই প্ৰতিমূর্তির উচ্চতা বিশ্বের সব প্ৰতিমূর্তিকে ছাপিয়ে গেছে। গোটা দুনিয়ায় ১৮২ মিটার উঁচু প্যাটেলের এই মূর্তি বিশ্বের দীর্ঘতম।

চিনে রয়েছে স্প্ৰিং টেম্পলের বুদ্ধদেবের প্ৰতিমূর্তির উচ্চতা ১৫৩ মিটার,মায়ানমারের সেটকায়ারে ল্যানকিউইন-এর মূর্তির উচ্চতা ১১৬ মিটার,জাপানে উশিকু দাইবুৎসুর মূর্তির উচ্চতা ১১০ মিটার,আমেরিকার স্ট্যাচু অব লিবার্টির উচ্চতা ৯৭ মিটার,থাইল্যান্ডে দ্য গ্ৰেট বুদ্ধের উচ্চতা ৯১ মিটার এবং দ্য মাদার ল্যান্ড কলস,রাশিয়ার উচ্চতা ৮৭ মিটার। এই সব প্ৰতিমূর্তিকে ছাপিয়ে গুজরাটের মাটিতে মহীয়ান হয়ে উঠেছে সর্দার প্যাটেলের প্ৰতিমূর্তি।

গুজরাটের নর্মদা নদীর উপর রাজপিপলায় নির্মিত প্ৰতিমূর্তিটি উন্মোচন করে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদি। রাষ্ট্ৰীয় একতা দিবসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গুজরাট সরকার। অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য প্ৰধানমন্ত্ৰী মঙ্গলবার রাতেই আহমেদাবাদে গিয়ে উপস্থিত হন।

২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে এই প্ৰতিমূর্তির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূর্তিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২,৯৮৯ কোটি টাকা। মূর্তিটি নির্মাণে প্ৰায় ৫০ লক্ষ কিলোগ্ৰাম লোহা ও ২ কোটি ২৫ লক্ষ কিলোগ্ৰাম সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়।

পদ্মশ্ৰী ও পদ্মভূষণ সম্মানপ্ৰাপ্ত প্ৰখ্যাত ভাস্কর শিল্পী রাম ভাঞ্জি সুটার-এর নেতৃত্বে প্ৰায় ৩,৪০০ কর্মী এই বিশাল প্ৰতিমূর্তিটি নির্মাণ করেছেন। সর্দার প্যাটেলের স্মরণে প্ৰতিমূর্তিটি নির্মাণ করেছে গুজরাট সরকার। ২০১০ সালে মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্ৰী থাকাকালে এই প্ৰকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এই বিশাল প্ৰতিমূর্তি দর্শনের জন্য দৈনিক ১৫ হাজার পর্যটকের সমাগম হবে বলে আশা করছে গুজরাট সরকার। গুজরাটের বিধানসভা আসন সংখ্যা ১৮২ সেইহেতু প্ৰতিমূর্তিটি ১৮২ মিটার উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্ৰতি ঘণ্টায় ২২০ বেগে আসা তুফান এবং ৬.৫ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে প্ৰতিমূর্তির কোনও ক্ষতি হবে না। ভাস্কর্য শিল্পী রাম ভাঞ্জি প্যাটেলের ২০০০ ছবি অধ্যয়ন করে প্ৰতিমূর্তির নকশা করেছেন। পর্যটকদের সুবিধার্থে প্ৰতিমূর্তিতে দুটো করে এলেভেটরের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ১৩৫ মিটার উচ্চতায় গ্যালারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্ৰধানমন্ত্ৰী ছাড়াও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্ৰী বিজয় রূপানি,মধ্যপ্ৰদেশের রাজ্যপাল আনন্দিবেন প্যাটেল,বিজেপির জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com