বাজেটে সরকারের মানসিকতা ও দর্শনের ছাপ স্পষ্ট,দাবি হিমন্তের

বাজেটে সরকারের মানসিকতা ও দর্শনের ছাপ স্পষ্ট,দাবি হিমন্তের

গুয়াহাটিঃ ২০১৯-২০ অর্থ বছরের রাজ্য বাজেটকে নির্বাচনমুখি এবং সুবিধাভোগী সৃষ্টিকারী বলে বিরোধীরা যে সমালোচনা করেছে শুক্ৰবার বিধানসভায় দীর্ঘ ভাষণে তা এক এক করে খণ্ডন করেন অর্থমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বাজেট পেশ হবার পরপরই বিরোধীরা বলেছিলেন এই বাজেট পুরোপুরি নির্বাচনমুখি। প্ৰতিশ্ৰুতির ফুলঝড়ি ছড়িয়ে বাজেটে শুধু সুবিধাভোগী সৃষ্টি করা হয়েছে। রাজ্যের বন্যা,ভাঙন প্ৰতিরোধ এবং উন্নয়নের কোনও পথই বাজেটে বাতলানো হয়নি বলে কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধীরা।

শুক্ৰবার বিধানসভায় বাজেট নিয়ে আলোচনাকালে শর্মা বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন,বাজেটে সরকারের মানসিকতা,দর্শন ও দায়বদ্ধতার রূপকেই তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন,সদনের এটা জানা উচিত যে চতুর্দশ অর্থ কমিশন রাজ্যের জন্য ৩৪ হাজার কোটি টাকা ধার্য করেছে। বাজেট নিয়ে এদিন বিরোধীদের সব অভিযোগ খণ্ডন করে শর্মা বলেন,বাজেট মোটেও নির্বাচনমুখি নয়। বাজেটের প্ৰতিটি স্কিমে সরকারের দর্শন লুকিয়ে আছে।

অরুন্ধতী প্ৰকল্পের সমালোচনা করে বিরোধীরা বলেছিলেন সরকার এই প্ৰকল্পের মাধ্যমে পণ প্ৰথাকেই উৎসাহ দিতে চাইছে। বিবাহযোগ্য কন্যাকে নামমাত্ৰ এক তোলা সোনা দেওয়ার পিছনে সরকারের যে কতবড় দর্শন লুকিয়ে আছে তা রীতিমতো বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দেন হিমন্ত। বলেন,বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে এই প্ৰকল্পের সুবিধা লাভ করতে হলে কন্যার সামাজিক বিয়ের আগে অথবা পরে আইনিভাবে রেজিস্ট্ৰেশন করতে হবে। এই সোনা শুধু কন্যাকে দেওয়া হবে,বরকে নয়। তাই এটা কোনওভাবেই পণ হতে পারে না। ওইটুকু সোনা রাজ্যে মেয়েদের যে সুরক্ষা দেবে সেটা কেউই তলিয়ে দেখেনি। রেজিস্ট্ৰি ম্যারেজ হলে কেউ স্ত্ৰীকে ছেড়ে যেতে পারবে না। ছাড়তে হলে আইনি পথে বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে। এই প্ৰকল্পের সুবিধা পেতে হলে কনের বয়স ১৮ এবং বরের ২১ হওয়া চাই। এরফলে বন্ধ হবে বাল্যবিবাহ। বন্ধ হবে বহু বিবাহ। তাই একতোলা সোনাকে যৌতুকের সঙ্গে তুলনা করা চলে না। গায়ে পড়ে কাউকে সুবিধাভোগী সাজানোর প্ৰয়োজন সরকারের আদৌ নেই। শর্মা বলেন,আমরা দেবালয়গুলির উন্নতি বিধানের কথা বলেছি।

বাজেটের এই প্ৰস্তাবে কোন সুবিধাভোগী সাজানোর কথা বোঝায় না। বোঝায় না নির্বাচনে ভোট আদায়ের কথা। আমরা বিধবাদের সাহায্যের প্ৰস্তাব রেখেছি। এটা মায়েদের প্ৰতি আমাদের শ্ৰদ্ধাকেই বোঝায়। তাই একজন মাকে সুবিধাভোগী হিসেবে গণ্য করা চলে না। মোটের ওপর আমরা মানুষ। অভাবগ্ৰস্তদের প্ৰতি আমাদের সাহায্যের হাত বাড়ানো উচিত। বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে রাজ্যে বৃদ্ধকালীন পেনশনের পরিমাণ ছিল মাসে ৫০ টাকা। আমরা তা বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করেছি। ভবিষ্যতে এই অঙ্ক আরও বাড়বে-বলেন শর্মা। গত বছরের বাজেটের বহু প্ৰকল্প বাস্তবায়িত হয়নি বলে বিরোধীদের আনা অভিযোগে প্ৰতিক্ৰিয়া ব্যক্ত করতে অর্থমন্ত্ৰী বলেন,এটা সত্য নয়। গত বছরের ১৮টি ফ্ল্যাগশিপ স্কিমের মধ্যে ১৭টি রূপায়ণের পর্যায়ে রয়েছে। রাজ্যের প্ৰায় প্ৰতিটি বিধানসভা খণ্ডে কমপক্ষেও ২০ কোটি টাকার সড়কের কাজ চলছে। পূর্বতন সরকারের জমানায় ৫ কোটি টাকার সড়কের কাজ হয়েছিল। বাজেটে উল্লেখ করা প্ৰতিটি প্ৰকল্পের আড়ালে সরকারের দর্শন,মানসিকতা ও দায়বদ্ধতার ইঙ্গিত রয়েছে-বলেন শর্মা।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com