Begin typing your search above and press return to search.

মহানগরীতে জল সংকটঃ কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙবে কবে?

মহানগরীতে জল সংকটঃ কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙবে কবে?

Sentinel Digital DeskBy : Sentinel Digital Desk

  |  9 July 2019 11:03 AM GMT

গুয়াহাটিঃ প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি,নীতি আয়োগ,সেণ্ট্ৰাল গ্ৰাউন্ড ওয়াটার কমিশন(সিজিডব্লিউসি)এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থা দেশে ক্ৰমবর্ধমান জল সংকট নিয়ে প্ৰচণ্ড উৎকণ্ঠা ব্যক্ত করেছেন। জল সংকট থেকে পার পেতে তারা বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা বলে সেগুলো রূপায়ণে জোর দিচ্ছেন। অসমে বিশেষ করে গুয়াহাটি মহানগরীর মানুষ জল সংকটের জন্য প্ৰচণ্ড দুর্ভোগ ভুগছেন। এই সমস্যা নিরসনে বাস্তবসম্মত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। অবাঞ্ছিত কিছু শ্ৰেণির কাজ কর্ম এই পরিস্থিতিকে আরও বিগড়ে দিচ্ছে।

বর্তমানে মহানগরী গুয়াহাটিতে ঢালাও হারে অ্যাপার্টমেণ্ট গজিয়ে উঠছে। বিল্ডিং বাইলোর-মতে,এজাতীয় অ্যাপার্টমেণ্টে বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থা থাকা উচিত। কিন্তু কেউই এই আইন মানছেন না। উল্টে ওই আইনের শর্ত লাগাতার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কোনও রূপ ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। এরজন্য সাধারণ মানুষকেই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্ৰতিনিয়ত। গুয়াহাটির প্ৰায় ৩২ লক্ষ মানুষের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পানীয় জল সরবরাহে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হওয়ায় আজকাল এ শহরে ডিপ টিউব ওয়েল বসানোর জন্য মানুষ ঢালাও হারে বোরিং করছেন। মহানগরীর এই সব মানুষের প্ৰতিদিন ২৬৫ মিলিয়ন লিটার জলের প্ৰয়োজন হয়।

গুয়াহাটি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন(জিএমসি),জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ(পিএইচই)এবং আরবেন ওয়াটার অথরিটি এই তিনটি সংস্থা মিলে গুয়াহাটিতে প্ৰতিদিন মাত্ৰ ৭৫ মিলিয়ন লিটার জল সরবরাহ করছে,যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই শহরে এক শ্ৰেণির মানুষ ডিপ টিউব ওয়েল বসাতে ঢালাও হারে বোরিং করতে বাধ্য হচ্ছেন। ডিপ টিউব ওয়েলের জন্য কমপক্ষেও ২০০ মিটার পর্যন্ত বোরিং করতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এবং তাদের নাকের ডগা দিয়ে চলছে এজাতীয় বোরিং।

জল সংকটের এই সু্যোগ নিয়ে আরও একটা শ্ৰেণি টাকা কামানোর জন্য বাণিজ্যিকভাবে জল সরবরাহের কাজ শুরু করেছে। এই শ্ৰেণির লোকেরা ডিপ টিউব ওয়েলের জন্য ঢালাও হারে বোরিং করে ভূগর্ভের জল তুলে তা সরবরাহের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে টাকা রোজগারে নেমেছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নাগের ডগা দিয়েই ঘটে চলছে এসব এবং কর্তৃপক্ষ শুধু নীরব দর্শক হয়ে বসে আছেন। দেশে জল সংকটের গুরুত্ব উপলব্ধি করে কেন্দ্ৰীয় সরকার রাজ্যগুলোকে ভূগর্ভের ও বৃষ্টির জল পুকুর অথবা অন্যান্য জলাধারে সংগ্ৰহ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অসমে কেন্দ্ৰের ওই নির্দেশের প্ৰতি এখনও পর্যন্ত কাউকেই বিশেষ কোনও গুরুত্ব দিতে দেখা যাচ্ছে না।

উল্টে বাড়ি ঘর,কমার্শিয়াল বিল্ডিং বা প্ৰতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য জলাশয় বা পুকুর ইত্যাদি মাটি দিয়ে ভরাট করে ফেলা হচ্ছে।

রূপনগরের গুয়াহাটি ক্যান্সার হসপিটাল চত্বর,ভাঙাগড়ে নেমকেয়ার হাসপাতাল প্ৰাঙ্গণ,জিএস রোডের পাশে বিগ বাজার,ভিআইপি রোডের এক পাশের নিম্নাঞ্চলগুলো ১০-১৫ বছর আগে বৃষ্টির জল ধরে রাখতো। কিন্তু ভূগর্ভের জল ও অন্যান্য জলাশয়গুলো সংরক্ষণে সরকারের তরফেও কোনও ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হয়নি। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে বৃষ্টির জল ধরে রাখার একটা স্কিম নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারও স্কুল কর্তৃপক্ষের অবহেলার দরুন এই স্কিমটি লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন প্ৰশ্ন হলো জল সংকটের এই সমস্যা নিরসনে রাজ্য সরকার কি কোনও পাকপোক্ত ব্যবস্থা নেবে। যদি ব্যবস্থা নেয় তবে সেটা কবে? অ্যাপার্টমেণ্টগুলোতে জলাধার নির্মাণে বিল্ডারদের আইন লঙ্ঘন রুখতে সরকার ব্যবস্থা নেবে কি? শহরে ঢালাও হারে ডিপ টিউব ওয়েল বসাতে ঢালাও বোরিং বন্ধ করবে কি সরকার?

অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ গুয়াহাটিতে বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকট

Next Story
সংবাদ শিরোনাম