ন্যাশনাল

পুলওয়ামার বদলা,পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বায়ু সেনার বোমা হামলায় ধ্বংস জইশের বেশকটি ঘাঁটি

Sentinel Digital Desk

গুয়াহাটিঃ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ-এর কনভয়ে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার পর ভারত তার মোক্ষম জবাব দিল মঙ্গলবার ভোর রাতে। গত ১৪ ফেব্ৰিয়ারি পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের আত্মঘাতী জঙ্গি আইইডি বোঝাই গাড়ি নিয়ে সিআরপিএফ-এর কনভয়ে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্ৰায় ৫০ জন জওয়ানের দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল।

জইশ-ই-মহম্মদের ওই আক্ৰমণের পর সারা ভারত জুড়ে ক্ষোভ ও প্ৰতিহিংসার আগুন জ্বলে উঠে। প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি জঙ্গিদের ওই বর্বর আক্ৰমণের জবাব দিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওপর সম্পূর্ণ দায়িত্ব অর্পন করেন। এরপরই পুলওয়ামার বদলা নিতে নড়েচড়ে বসে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতীয় বায়ু সেনার কমপক্ষেও ১২টি মিরেজ ২০০০ লড়াকু জেট বিমান সোমবার শেষ রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের(পাক)বালাকেট,চাকোটি এবং মুজাফরাবাদে হামলা চালিয়ে জইশ-ই-মহম্মদের নির্দিষ্ট ঘাঁটিগুলি গুড়িয়ে দেয়। প্ৰচার মাধ্যমের রিপোর্ট অনু্যায়ী বেশকটি মিরেজ ২০০০ লড়াকু বিমান এলওসি বরাবর জইশ-এর প্ৰধান ঘাঁটিগুলি বোমার আঘাতে সম্পূর্ণ ধরাশায়ী করে নির্বিঘ্নে ফিরে আসে।

পুলওয়ামায় জইশের আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় কমপক্ষেও ৫০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হওয়ার পর ভারতের সন্ত্ৰাস বিরধী অভি্যানের এটাই এখন পর্যন্ত বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। প্ৰাপ্ত খবরে জানা গিয়েছে জইশের ঘাঁটিতে সেনার হামলায় কমপক্ষেও ২০০-৩০০ জঙ্গি প্ৰাণ হারিয়েছে। পুলওয়ামায় সিআরপিএফ-এর কনভয়ে জঙ্গি হামলার পর সন্ত্ৰাসীদের বিরুদ্ধে সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য দেশজুড়ে আওয়াজ উঠেছিল। বায়ুসেনার এই সাফল্য দেশবাসীর ক্ষোভের আগুন প্ৰশমিত করতে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বলে আঁচ করা হচ্ছে। জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল।

এদিকে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি বলেছিলেন,জওয়ানদের ওই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এর মোক্ষম জবাব দেবেই। বায়ু সেনার লড়াকু বিমানগুলি শেষরাত ৩.৩০ থেকে ২০-২১ মিনিট বালাকোট,চাকোটি এবং মুজাফরাবাদের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি বোমা ফেলে সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেয়।

এদিকে ভারতীয় বায়ু সেনা নিয়ন্ত্ৰণ রেখা লঙ্ঘন করেছে বলে পাকিস্তানের তরফে দাবি করা হয়েছে বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে। প্ৰাপ্ত খবরে জানা গেছে বায়ুসেনার লড়াকু বিমান থেকে প্ৰায় ১০০০ কেজি লেসার গাইডেড বোমা ফেলা হয়েছে। বায়ুসেনার অভি্যানে ২০০-৩০০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে আঁচ করা হচ্ছে।

এদিকে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং,অর্থমন্ত্ৰী অরুণ জেটলি,বিদেশমন্ত্ৰী সুষমা স্বরাজ,প্ৰতিরক্ষামন্ত্ৰী নির্মলা সীতারমন ও রাষ্ট্ৰীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অর্জিত দোভালের সঙ্গে এক বৈঠকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন।

সূত্ৰটির মতে, পাকিস্তানের বালাকোটে ৬ থেকে ৭ একর জমিতে থাকা শিবিরটি জইশের সবচেয়ে বড় প্ৰশিক্ষণ শিবির। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্ৰথম ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করল। অথচ ১৯৯৯-এর কারগিল লড়াইয়ের সময়ও ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান এলওসির সীমা লণ্গ্ঘন করেনি।

এদিকে কংগ্ৰেস সভাপতি রাহুল গান্ধী,দিল্লির মুখ্যমন্ত্ৰী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতারা সশস্ত্ৰ বাহিনীর এই অভি্যানের প্ৰতি স্যালুট জানিয়েছেন।