রাজ্যের খবর

বন্যা থেকে বাঁচতে কাজিরঙার বাঘ আশ্ৰয় নিয়েছে বাড়ির অন্দরের বিছানায়

Sentinel Digital Desk

গুয়াহাটিঃ চলতি বন্যায় রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের বন্য জীবনে নেমে আসে বিভীষিকা। বন্যার করাল স্ৰোতে ভেসে যায় হরিণ সহ বহু জীবজন্তু। কাজিরঙার বুক চিরে যাওয়া ৩৭নং রাষ্ট্ৰীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় মারা পড়ে বেশকটি বন্যপ্ৰাণী। বন্যার থাবা থেকে বাঁচতে দিশহারা হয়ে নিরাপদ আস্তানার খোঁজে পালাতে দেখা গেছে বন্য প্ৰাণীদের। সংকটের এই লগ্নে কিছু কিছু বন্য প্ৰাণী দূর দূরন্তে পাড়ি না দিয়ে উদ্যানের কাছে থাকা এলাকা এবং বাড়িতে শরণার্থী হিসেবে আশ্ৰয় নেয়। চারদিক যখন জলে জলাকার,সেই সময় নিচের ছবিতে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার উদ্যান ঘেঁষা একটি বাড়িতে শরণার্থী হিসেবে আশ্ৰয় নিয়েছে। এই ঘটনায় এলাকাটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে গৃহস্থের বাড়ির একটি বিছানায় বিশ্ৰাম নিচ্ছে বাঘ মামা। চোখে মুখে বন্যার বিভীষিকা নেই। বাড়ির অন্দরে বেশ বহাল তবিয়তে রয়েছে সে। তবে কাজিরঙার বন্য জীবন প্ৰকৃতির আকস্মিক রুদ্ৰরূপের কাছে যে কতটা অসহায়,বিশাল বাঘটির বাড়ির অন্দরে আশ্ৰয় নেওয়ার দৃশ্য তা আবারও প্ৰমাণিত করলো।

কাজিরঙার বন কর্মীরা বাঘটিকে উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা হাতে নিয়েছেন। রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের বাগারি রেঞ্জের হারমতি গ্ৰামের একটি বাড়িতে দিব্যি আশ্ৰয় নিয়েছে বাঘটি। বাড়িটি জনৈক দীপক ওরাং-এর। সম্ভবত খাদ্যের খোঁজে বেরিয়ে আশ্ৰয় স্থল হিসেবে ওরাঙের বাড়িটি বেছে নেয় বাঘটি।

ওয়াইল্ড লাইফ ট্ৰাস্ট ইন্ডিয়া এক টুইটার পোস্টে বাঘের এই ছবিটি পোস্ট করেছে। ছবিতে বাঘটিকে বিছানার ওপর বেশ আরামেই শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

ওয়াইন্ডলাইফ ট্ৰাস্ট ইন্ডিয়ার কাছ থেকে পাওয়া আরও রিপোর্টে বলা হয়েছে,সকাল ৮.৩০ নাগাদ বাঘটিকে রাষ্ট্ৰীয় সড়কের কাছে দেখা গিয়েছিল। যে বাড়িতে বাঘটি আশ্ৰয় নিয়েছে সেটি কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যান থেকে মাত্ৰ ২০০ মিটার দূরে।

ওয়াইল্ডলাইফ ট্ৰাস্ট ইন্ডিয়া আরও মজাদার টুইটে বলেছে,বাঘটি যে বিছানায় বিশ্ৰাম নিচ্ছে তার ঠিক ওপরেই ঝুলছে একটি পলিথিনের ব্যাগ,তাতে লেখা আছে বিলিয়ন চয়েসেস। টুইটে বলা হয়েছে ‘বন্যা থেকে বাঁচতে বাঘটি বিছানাকে প্ৰাতঃরাশ হিসেবে পছন্দ করেছে’।

বন কর্মকর্তারা জানান,বাঘটিকে ট্ৰ্যাকুলাইজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এরপরই সেটিকে কোনও নিরাপদ আস্তানায় নিয়ে যাওয়া হবে। গত কয়েকদিনের বন্যায় বহু মানুষ এবং বন্য ও গৃহপালিত জীবজন্তুর ব্যাপক ক্ষতি হয়। কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের ৯৫ শতাংশই বন্যার জলে ডুবে যায়। বন্যায় উদ্যানের বন্য জীবন বিরাট হুমকির সম্মুখীন হয়। ওদিকে এবারের বন্যায় পবিতরা অভয়ারণ্যের ৮৫ শতাংশ তলিয়ে গেছে বন্যার জলে।