টংলাঃ ভারত-ভুটান সীমান্তের ওদালগুড়ি জেলার গ্ৰামগুলিতে বুনো হাতির ত্ৰাস অব্যাহত রয়েছে। হাতির আক্ৰমণের ভয়ে জেলার গ্ৰামাঞ্চলের মানুষ জেগে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। ঘাগরার কাছে বোরেঙ্গাবাড়ি গ্ৰামে বুনো হাতির পাল প্ৰতিরাতেই হানা দিচ্ছে। বিশেষ করে এই গ্ৰামটির মানুষ সারা দিন পরিশ্ৰমের পর রাতে ঘুমোবার কোন ফুরসত পাচ্ছেন না হাতির আতঙ্কে।
শনিবার রাতে বুনো হাতির পাল গ্ৰামে হানা দিয়ে দিবাকর কুমার ও প্ৰতিমা কুমারের বাড়িটি গুড়িয়ে দেয়। ‘হাতির পাল বাড়ির উঠোনে ঢুকতেই আমরা টের পেয়ে যাই। ওই সময় আমরা ঘরের জন্য একটা রুমে ছিলাম। ততক্ষণে হাতিরা বাড়ির একটা ঘর ভেঙে লণ্ডভণ্ড করে ফেলে’-জানান রিতুমণি কুমার। রিতুমণি টংলা কলেজের বিএ ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্ৰ। ‘আমি হাতির আক্ৰমণ সম্পর্কে শোণিতপুর বন বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে বার কয়েক যোগা্যোগ করেছি। কিন্তু বন বিভাগ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিষয়টিতে কোনও গুরুত্বই দেয়নি’-বলেন রিতুমণি।
টঙ্কেশ্বর ডেকা নামের আরও এক গ্ৰামবাসী বলেন,আমাদের গ্ৰাম থেকে বন বিভাগের কার্যালয় মাত্ৰ ৩ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু ঘন ঘন হাতির আক্ৰমণের কথা জেনেও বন কর্মীরা আমাদের বাঁচাতে কোনওদিনই এগিয়ে আসেনি-বলেন ডেকা। আমাদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় বন বিভাগ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে-বলেন তিনি।
এভাবে দিনের পর দিন যদি পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে তাহলে বন বিভাগ থাকার অর্থ কি?-প্ৰশ্ন তোলেন তিনি। ‘দিনের পর দিন যদি এমনটা ঘটতে থাকে তাহলে এধরনের বিভাগ দিয়ে কি হবে’?
নাম প্ৰকাশে অনিচ্ছুক একজন গ্ৰামবাসী বলেন,বন বিভাগের ঘুম যদি না ভাঙে তাহলে গ্ৰামবাসীরা আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা আক্ৰমণ হানতে পিছ পা হবে না।
বুনো হাতির পাল এলাকাটিতে সন্ত্ৰাসের রাজত্ব কায়েম রেখেছে। খাদ্যের অভাবেই হাতির পাল পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসছে। হাতিরা শুধু ঘরবাড়ি ভাঙছে এমন নয় খেতের ফসলও নষ্ট করছে। জানান ওই এলাকার একজন প্ৰকৃতি প্ৰেমী নীলোৎপল কাশ্যপ। তিনি বলেন,হাতির আতঙ্কে এলাকার মানুষ গত কিছুদিন ধরে ঘুমোতে পারছেন না। বন বিভাগ হাতি তাড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি ওই বিভাগটির সমালোচনা করেন।