গুয়াহাটিঃ সম্প্ৰতি রাজ্যের একটি মসজিদে কিছু অজ্ঞাত দুষ্কৃতী ধর্মগ্ৰন্থ পোড়ানোর ঘটনার বুধবার সমস্বরে তীব্ৰ নিন্দা করেছে অসম বিধানসভা। বিধানসভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দুষ্কৃতীদের কোনও ধর্ম নেই এবং এধরনের লোকেদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা উচিত। বুধবার বিধানসভায় জিরো আওয়ারে এই ইস্যুটি উত্থাপন করে কংগ্ৰেস বিধায়ক নুরুল হুদা বলেন,‘বাকসা জেলার কালাপানি মসজিদে ধর্মগ্ৰন্থ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের কোনও হদিশ পুলিশ এখনও পর্যন্ত খুঁজে বার করতে সক্ষম হয়নি’। এই ইস্যু নিয়ে হুদা এর আগে তাঁর সুর চড়ান। বলেন,একটা নির্দিষ্ট শ্ৰেণির ওপরই এধরনের আক্ৰমণ হানা হচ্ছে। এর আগেও এধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে হুদা বিষয়টিতে সাম্প্ৰদায়িক রং চড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে শাসক দলের সদস্যরা হুদাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে ঘটনাটিকে ভুল পথে পরিচালনা না করার অনুরোধ জানান। সদস্যরা বলেন,মন্দির,কিংবা গির্জায়ও এমন ধরনের ঘটনা ঘটতে পারতো। ইস্যুটি নিয়ে এদিন সদনে কথা কাটাকাটিতে এক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্যি হয়। তবে অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰনাথ গোস্বামী পরিস্থিতি বাগে আনতে সমর্থ হন। ‘যে কোনও ইস্যু উত্থাপনকালে সদনের সব সদস্যর ধৈর্য ধরা উচিত। বিধানসভার প্ৰত্যেক সদস্য পরস্পরের প্ৰতি শ্ৰদ্ধাশীল হওয়া প্ৰয়োজন। মন্দির,মসজিদ,গির্জায় চুরির ঘটনা মোটেও ভাল লক্ষণ নয়। রাজ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্ম,জাতপাতের মধ্যে শতাব্দী পুরনো সম্প্ৰীতির বাঁধন আমাদের অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। জনকল্যাণের বার্তা ছড়ানোই সদনের আসল কাজ হওয়া উচিত’।
এই ইস্যু নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি বিধায়ক পদ্ম হাজরিকা বলেন,মসজিদে যা ঘটেছে আমাদের প্ৰত্যেকেরই তার নিন্দা জানানো প্ৰয়োজন। তবে দুষ্কৃতীদের কোনও ধর্ম হয় না-বলেন তিনি। বিজেপির অশোক সিংঘল বলেন,এজাতীয় ঘটনায় সাম্প্ৰদায়িক রং চড়ানো কোনভাবেই উচিত নয়। মন্দির বা গির্জায়ও এমন ঘটনা ঘটতে পারত। তাহলে এধরনের কাজের জন্য অন্য ধর্মের লোকেদের কাঁধে দোষ চাপানো কি আমাদের উচিত হতো’?
এআইইউডিএফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন,যুগ যুগ পুরনো রাজ্যের সামাজিক সম্প্ৰীতির বাঁধন আমাদের অক্ষত রাখতে হবে। তবে সমাজে কিছু শক্তি রয়েছে যারা আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টির চেষ্টা করে থাকে। সরকারকে ওই সমস্ত শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে-বলেন তিনি।
সংসদ বিষয়ক মন্ত্ৰী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারি আশ্বাস দিয়ে বয়েন,‘সরকার এধরনের দুষ্কৃতীদের কঠোর হাতে দমন করবে। সরকার এই ঘটনার নিন্দা করছে। এধরনের ঘটনা সরকার কখনো বরদাস্ত করবে না। সব ধর্ম,জাতপাতের মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় সরকার প্ৰতিশ্ৰুতিবদ্ধ’।
এদিকে বাকসা জেলার এই ঘটনার পর সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ মঙ্গলবার শালবাড়ি মহকুমার কালাপানি মসজিদে শান্তি,ভ্ৰাতৃত্বের নিদর্শন হিসেবে ৫০ কপি কোরাণ মসজিদ কর্তৃপক্ষকে দান করেন। গত রবিবার দুষ্কৃতীরা এই মসজিদের ১১ কপি কোরাণ ও অন্যান্য গ্ৰন্থাদি পুড়িয়ে ফেলেছিল।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ করোনাঃ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে বিদেশ থেকে আসা নাগরিকদের থার্মাল স্ক্ৰিনিঙের ব্যবস্থা
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Workshop Cum Training on Investigation Abroad and Extradition held at Guwahati