সংবাদ শিরোনাম

রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি এখনও শোচনীয়,জেলাশাসকদের ত্ৰাণ বণ্টনের নির্দেশ হিমন্তের

Sentinel Digital Desk

গুয়াহাটিঃ রাজ্যে প্ৰলয় বন্যায় গত ২৪ ঘন্টায় আরও নজন লোকের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে চলতি বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯ জনে দাঁড়ালো। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নদীর জলস্তর হ্ৰাস পেলেও বন্যা পরিস্থিতি এখনো শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে। মরশুমের চলতি দফার বন্যায় রাজ্যের ২৮টি জেলার ১০৩টি রাজস্ব সার্কলের অধীন ৪,১২৮টি গ্ৰামের প্ৰায় ৫৩,৫২,১০৭ জন বানভাসি হয়েছেন।

দ্য সেন্টিনেলের সঙ্গে কথা বলার সময় সিডব্লিউসি-র সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার(হাইড্ৰোলজিক্যাল অবজারভেশন সার্কল)গুয়াহাটি-র বিষ্ণু দেবরায় বলেন,ধুবড়ি জেলায় এবার ব্ৰহ্মপুত্ৰের বন্যা গত ৩১ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। অনুরূপভাবে বঙাইগাঁওয়ে আই নদীর বন্যা গত চার বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। ধুবড়িতে ১৯৮৮ সালের ২৯ আগস্টের সন্ধে ৬টায় সর্বোচ্চ ফ্লাড লেভেল ছিল ৩০.৩৬ মিটার। গত বুধবার সন্ধে ৬টায় ধুবড়িতে ব্ৰহ্মপুত্ৰ এই মাত্ৰা স্পর্শ করে এবং ওই দিন রাত ৯.৩০ নাগাদ আরও ১ সেন্টিমিটার অতিক্ৰম করে। অনুরূপ ভাবে ২০১৫-র ২১ আগস্ট বঙাইগাঁওয়ে আই নদীর সর্বোচ্চ ফ্লাড লেভেল ছিল ৫৩.২৬ মিটার। এবছর ১১ জুলাইয়ে আই নদী এই সীমার এক সেন্টিমিটার অতিক্ৰম করে যায়।

বৰ্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন বন্যা কবলিত জেলায় ৬৮৯টি ত্ৰাণ শিবির কর্মক্ষম রয়েছে। এই শিবির সমূহে আশ্ৰয় নিয়েছেন ২,২৫,৭৩৭ জন মানুষ।

বন্যায় ২,১২,১২২.৭৪ হেক্টর খেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। ২৫,১৮,৮২৫টি জীবজন্তু ক্ষতির মুখে পড়েছে। হাঁস,মুরগির খামার ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়েছে ২২,৫৯,৪১৩টি।

এদিকে অর্থমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বৃহস্পতিবার বন্যাক্ৰান্ত এলাকার সব দুর্গতদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সাহায্য দেওয়ার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলাশাসকদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সের সময় ওই নির্দেশ দেন শর্মা। ভিডিও কনফারেন্সের সিদ্ধান্ত অনু্যায়ী জেলাশাসকরা প্ৰতিটি কেন্দ্ৰে কমপক্ষেও ৫টি মেডিক্যাল ও ভেটেরিনারি ক্যাম্প পরিচালনা করবেন এবং এজাতীয় শিবিরের খরচ খবচার অর্থ অনুমোদন করবেন। প্ৰতিটি চিকিৎসা শিবিরের জন্য ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে এবং পশু পালন সংক্ৰান্ত ক্যাম্পের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। যারা ত্ৰাণ শিবিরে পৌঁছতে পারেননি সেই সব ক্ষতিগ্ৰস্তরাও এই সাহা্য্য পাবেন। বন্যায় কতটি রাজস্ব গ্ৰামের ক্ষতি হয়েছে,জলবন্দি ও ত্ৰাণ শিবিরে আশ্ৰিত মানুষ এবং কী পরিমাণ জীবজন্তু ভেসে গেছে তার একটি সুষ্ঠু তালিকা প্ৰস্তুত করার বিষয়টি জেলাশাসকদের সুনিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলা ও মহকুমা সদরে পর্যাপ্ত খাদ্য ভান্ডার মজুত রাখার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে জেলাশাসকদের। ছোট ছেলে-মেয়ে এবং শিশুদের নিরাপত্তায় উচ্চ অগ্ৰাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই ভিত্তিও কনফারেন্সে। ত্ৰাণ শিবির এবং জলবন্দি এলাকায় থাকা শিশুদের শিশু খাদ্য বিতরণ করতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এদিনের কনফারেন্সে।

বন্যা দুর্গতদের কাপড়চোপড় ও বাসনকোসন কেনার জন্য ৩,৮০০ টাকা ক্ষতিগ্ৰস্ত পরিবারগুলোর প্ৰধানদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ট্ৰ্যান্সফার করতে বলা হয়েছে জেলাশাসকদের। বন্যা কবলিত এলাকার পোষা গবাদি পশুর জন্য খাদ্যও জেলাশাসকদের বিতরণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এসডিআরএফ-এর গাইড লাইন অনু্যায়ী একাজ করা হবে।

বন্যায় যাদের বাড়িঘর আংশিক অথবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের পুনর্বাসনের টাকা এক মাসের মধ্যে দেওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে জেলাশাসকদের বলা হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্ৰস্ত ছাত্ৰদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই দিতেও বলা হয়েছে জেলাশাসকদের।

অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ বন্যা ও ধসে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০