সংবাদ শিরোনাম

নিম্ন সুবনশিরি জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পের কাজ ফের শুরু করার সবুজ সঙ্কেত দিল গ্ৰিন ট্ৰাইব্যুনাল

Sentinel Digital Desk

নয়াদিল্লিঃ ন্যাশনাল গ্ৰিন ট্ৰাইব্যুনাল(এনজিটি)বুধবার বিতর্কিত গেরুকামুখ প্ৰকল্পের কাজ ফের শুরু করার সবুজসঙ্কেত দিয়েছে। এ সংক্ৰান্তে বিশেষজ্ঞ কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে অসম পাবলিক ওয়র্কস(এপি ডব্লিউ)যে আবেদন দাখিল করেছিল গ্ৰিন ট্ৰাইবুনাল বুধবার তা খারিজ করে দেয়। ন্যাশনাল হাইড্ৰো ইলেকট্ৰিক পাওয়ার কর্পোরেশন(এনএইচপিসি)২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন যে নিম্ন সুবনশিরি বাঁধ নির্মাণ করছিল তার নিরাপত্তার বিষয়টি দেখাশোনার জন্যই এই বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এপিডব্লিউ বিশেষজ্ঞ কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্ৰশ্ন তুলে ওই আবেদনটি দাখিল করে। ট্ৰাইব্যুনাল এদিন স্পষ্ট করে জানিয়েছে,প্ৰকৃতার্থে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে নিম্ন সুবনশিরি জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পের কাজ ফের শুরু করা প্ৰয়োজন। অসম পাবলিক ওয়ার্কসের সভাপতি অভিজিৎ শর্মা ওই আবেদনটি দাখিল করেছিলেন। এপিডব্লিউ এই কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট বলে ট্ৰাইবুনালে পাল্টা দাবি জানিয়েছিল। উল্লেখ করা যেতে পারে ভূতত্ত্ববিদ আইডি গুপ্ত,ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ পিএম স্কট ও জলবিজ্ঞানী প্ৰভাস পাণ্ডেকে নিয়ে গঠিত কমিটি নিম্ন সুবনশিরি প্ৰকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই একটি প্ৰতিবেদন প্ৰকাশ করেছে। গত ২৫ জুলাই ট্ৰাইব্যুনালে বিষয়টি নিয়ে শুনানির সময় কেন্দ্ৰীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্ৰকের আইনজীবী বলেছেন,কমিটি জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পের কাজ ফের শুরু করার ছাড়পত্ৰ দিয়েছে।

ট্ৰাইব্যুনাল এদিন কমিটিকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি প্ৰকল্পের কাজ ফের শুরু করার কথাই বলেছে। আবেদনকারী এই কমিটি পক্ষপাতদুষ্ট বলে ট্ৰাইব্যুনালে পাল্টা দাবি জানিয়েছিলেন।

ট্ৰাইব্যুনালের অধ্যক্ষ আদর্শ কুমার গোয়েল,বিচারপতি এসপি ওয়াংদি,বিচারপতি কে রামকৃষ্ণন এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য ড. নাগিন নন্দাকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ এই নির্দেশ ইস্যু করেছে। বেঞ্চ এপিডব্লিউর আবেদনের মেরিট সম্পর্কে পাল্টা প্ৰশ্ন তুলেছে। মুখ্য বিচারপীঠ অভিজিৎ শর্মার আবেদন কল্পনাপ্ৰসূত বলে মন্তব্য করেছে। বিচারপতিরা বলেছেন,স্কট,গুপ্তা ও পান্ডেকে নিয়ে গঠিত কমিটির সুপারিশ মেনে সুবনশিরি বাঁধের কাজে এগোনো যেতে পারে। এদিকে এপিডব্লিউ সভাপতি অভিজিৎ শর্মা এই রায়কে সম্পূর্ণ বিস্ময়কর বলে অভিহিত করেন। ‘আমরা এব্যাপারে আগামি সপ্তাহে সুপ্ৰিমকোর্টে যাবো’-বলেন শর্মা।

এদিকে এনজিটি গত সপ্তাহে তাদের শেষ শুনানিকালে বিশেষজ্ঞ কমিটিতে কিছু স্বতন্ত্ৰ সদস্য নিয়োগ করার জন্য সরকারকে বলছিল। কেন্দ্ৰীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্ৰক এই বিশেষজ্ঞ কমিটিটি গঠন করেছে। এনজিটি ওই রায়ে আরও বলেছে এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করবে ১৫ জনের একটি এক্সপার্ট এপ্ৰাইজেল কমিটি। ট্ৰাইবুনাল এই ১৫ জনের কমিটিকে সেফ গার্ড হিসেবে অভিহিত করেছে। গোয়েল নেতৃত্বাধীন মুখ্য বিচারপীঠ বলেছে,জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে সুবনশিরি প্ৰকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়ার প্ৰয়োজন রয়েছে।

২০০২ সালে সুবনশিরি প্ৰকল্প নির্মাণ বাবদ খরচের পরিমাণ ধার্য হয়েছিল ৬,২৮,৫৩৩ কোটি টাকা। কিন্তু প্ৰকল্পের কাজ বিঘ্নিত হওয়ায় খরচের অঙ্ক বেড়ে এখন ১৮,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এই প্ৰকল্প খাতে ইতিমধ্যেই ৯,৬১০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্ৰকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ করা গেছে। প্ৰতিদিনের দেরির জন্য ১০ কোটি টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ‘প্ৰকল্পটি হলে বিদ্যুতের ক্ষেত্ৰে অসম ও অরুণাচলের উপকারই হতো’-এনএইচপিসি ইতিপূর্বে এনজিটিতে একথা বলেছিল।

বৃহৎ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে এপিডব্লিউ,আসু এবং কৃষক মুক্তি সংগ্ৰাম সমিতির আন্দোলনের জন্য সুবনশিরি জল বিদ্যুৎ প্ৰকল্পের কাজ গত কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।