গুয়াহাটিঃ সঠিক এবং যথার্থ পরিকল্পনার অভাবে অসমে বিভিন্ন প্ৰকল্প মার খাওয়ার ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে। যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তাদের অদূরদর্শিতা ও ভুলের ফলে প্ৰকল্পগুলি মার খাচ্ছে অথবা অর্ধসমাপ্ত থেকে যাচ্ছে তাদের শাস্তি হওয়ার উদাহরণ সচরাচর নজরে পড়ে না। পরিকল্পনায় অসঙ্গতি এবং ত্ৰুটি থেকে যাওয়ায় বহু টাকা খরচ করার পরও প্ৰকল্প অসমাপ্ত অবস্থায় থেকে যায় অথবা মৃত্যুর মুখে পড়ে।
খানাপাড়া থেকে কইনাধরা হয়ে বরঝাড় বিমানবন্দর পর্যন্ত বিকল্প সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্ৰেও পরিকল্পনায় ত্ৰুটি থেকে যাওয়ার নজির দেখা গেছে। ৩৭নং রাষ্ট্ৰীয় সড়কের বিকল্প হিসেবে এই সড়কের কাজ শুরু হয়েছিল। ৮০.২০ কোটি টাকার এই সড়ক প্ৰকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। পূর্ত বিভাগ এই সড়ক প্ৰকল্পের কাজ শুরু করলেও সেটি অর্ধসমাপ্ত থেকে গেছে। মোটা অঙ্কের ৪৪.৫৯ কোটি টাকা খরচ করার পর সড়ক প্ৰকল্পটি এখন মৃত্যুর কবলে।
আসল কথা হলো,সড়ক নির্মাণে বর্তমানে যে নিয়ম নীতি রয়েছে তা লঙ্ঘন করে যদি সড়ক নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া হয় তাহলে তার পরিণতিতে যে এমনটাই হবে তা বলা বাহুল্য। ১৯৮৩ সালের রাজ্য পূর্ত বিভাগের(পিডব্লিউদি)ম্যানুয়েলের ৩০৪ ধারার মতে,অসামরিক কর্তৃপক্ষ সড়কের জন্য প্ৰয়োজনীয় জমি হস্তান্তর না করা পর্যন্ত এই জাতীয় কোনও প্ৰকল্পের কাজ শুরু করা যায় না। অনুরূপভাবে,১৯৮৮ সালের বন আইনের(সংশোধিত)২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে,কেন্দ্ৰীয় সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনও বনাঞ্চলের জমি বন বহির্ভূত কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। তবে বিকল্প এই হাইওয়ে প্ৰকল্পের বিস্তারিত প্ৰজেক্ট রিপোর্ট(ডিপিআর)প্ৰস্তুত করেছিলেন একজন ইঞ্জিনিয়ার উল্লিখিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু না মেনে। তারা ধরে নিয়েছিলেন কেন্দ্ৰীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্ৰকের অনুমোদন যথাসময়ে সংগ্ৰহ করা যাবে। আর এমনটা ভেবেই তারা প্ৰকল্পের কাজ শুরু করেছিলেন। গরভাঙ্গা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাছে গিয়ে সড়কের কাজে বাধার সৃষ্টি হয়। এই বনাঞ্চলের ৬.৫৩ হেক্টর বনভূমি সড়কের কাজে ব্যবহারের কথা ছিল। ২০১৩ সালে এই সমস্যার মুখে পড়ার পর পূর্ত বিভাগ ২০১৪ সালের ফেব্ৰুয়ারিতে কেন্দ্ৰীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্ৰকের দ্বারস্থ হয়ে প্ৰস্তাব রাখে। কিন্তু মন্ত্ৰক রাজ্য পূর্ত বিভাগের ওই প্ৰস্তাব খারিজ করে দেয়। তখন থেকেই এই বিকল্প সড়ক নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। খানাপাড়া থেকে বরঝাড় বিমানবন্দর পর্যন্ত বিকল্প সড়ক নির্মাণ অসমাপ্তই থেকে গেলো,৪৪.৫৯ কোটি টাকা খরচ করার পরও। তাই পূর্ত বিভাগের দোষী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে তা জনসমক্ষে প্ৰকাশ করার প্ৰশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ ডুমডুমায় ডাকাতদের এটিএম লুঠের চেষ্টা,গোলাগুলিতে নিহত নিরাপত্তারক্ষী
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Drug Racket Busted in Naharkatia, 10 Apprehended