গুয়াহাটিঃ ভারতের উপ রাষ্ট্ৰপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু অফিসে মাতৃভাষা ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। মাতৃভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি গ্ৰন্থাগার ইত্যাদির সংরক্ষণ ও এর শ্ৰীবৃদ্ধি ও প্ৰচারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি। শুক্ৰবার এখানে আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের মাঠে ২১তম উত্তর পূর্ব বইমেলা উদ্বোধন করেন নাইডু। উদ্বোধনী ভাষণে তিনি মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও এর প্ৰচারে গুরুত্ব দেন। ‘পরিবারে থাকাকালে এবং পাড়া পড়শিদের সঙ্গেও নিজের মাতৃভাষায় কথা বলুন। আমি অন্য কোনও ভাষার বিরোধী নই,তবে মাতৃভাষার প্ৰতি আলোকপাত করাটাই শ্ৰেয়। রাজ্য সরকারেরও প্ৰশাসনিক পর্যায়ে মাতৃভাষা ব্যবহার করা উচিত। মাতৃভাষার পাশাপাশি হিন্দি,ইংরেজির মতো অন্যান্য ভাষা রয়েইছে। তবে মাতৃভাষাতেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়াটা প্ৰয়োজন। মানুষের নিজস্ব ভাষার বিকাশ ও তা প্ৰচারের একান্ত প্ৰয়োজন’।
উপরাষ্ট্ৰপতি এদিন অসমিয়া ভাষায়ই তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। বলেন,‘আধ্যাত্মিকতার উন্মেষে রাজ্যের প্ৰতিটি গ্ৰামে দেবালয় থাকা প্ৰয়োজন। দুস্থ মানুষের জন্য সেবালয় এবং জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য গ্ৰন্থাগার স্থাপন অতীব জরুরি। দেশে ডিজিটেল ব্যবস্থা আমাদের চিন্তা ভাবনায় একটা আমূল পরিবর্তন এনেছে। তথ্য প্ৰযুক্তি ছাড়াও সারা বিশ্বকে জানতে এবং জ্ঞান আহরণের জন্য গ্ৰন্থ হচ্ছে একটা বিরাট মাধ্যম।
দেশের বিভিন্ন স্থানে চলা গ্ৰান্থাগার আন্দোলন গোটা দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নব জাগরণে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন,সাক্ষরতা ও শিক্ষার প্ৰসার ঘটানো ছাড়াও গ্ৰন্থাগারগুলো গণতন্ত্ৰের সুরক্ষা এবং মানুষের মধ্যে শান্তি,সংস্কৃতি ও ভ্ৰাতৃত্ব বোধের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। ‘আমাদের পাঠাভ্যাসের প্ৰয়োজন এবং প্ৰয়োজন গ্ৰন্থ থেকে জ্ঞান আহরণ করা। আমাদের জীবনধারাকে সমৃদ্ধ করতে চাই আরও ভালো গ্ৰন্থ। তবে আমি এটা লক্ষ্য করেছি মানুষের বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে বই পড়ার আগ্ৰহ অনেকটাই হ্ৰাস পেয়েছে,যা খুবই উদ্বেগের বিষয়’।
উপরাষ্ট্ৰপতি তাঁর বক্তব্যে বিদগ্ধ অসমিয়া সাহিত্যিক তথা লেখক শ্ৰীমন্ত শঙ্করদেব,লক্ষীনাথ বেজবরুয়া,জ্যোতিপ্ৰসাদ আগরওয়ালা এবং ড. ভূপেন হাজরিকা মানুষের কল্যাণে রেখে যাওয়া অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
অসমের রাজ্যপাল অধ্যাপক জগদীশ মুখি ১৯৯৮ সাল থেকে বইমেলা আয়োজন করে আসায় অসম পাবলিসার্স অ্যান্ড বুক সেলার অ্যাসোসিয়েশনের প্ৰশংসা করে বলেন,উত্তর পূর্ব গ্ৰন্থমেলা এই অঞ্চলে মেগা বইমেলা হিসেবে তার সুনাম অর্জনে সক্ষম হয়েছে। কারণ সর্বস্তরের মানুষ গ্ৰন্থ মেলার প্ৰতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন,স্থানীয় উদ্যোগীরা বই প্ৰকাশ করলে তা বেকার সমস্যা লাঘবে অনেকটাই সাহা্য্য করবে। কারণ এটা হলে স্থানীয় যুবকদের এই ইন্ডাস্ট্ৰিতে নিয়োগ করা যাবে।
মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন,বইমেলা হচ্ছে এমনই একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা তরুণ প্ৰজন্মকে বই পড়ার অভ্যেস গড়ে তুলতে সাহা্য্য করে। অসমের সংস্কৃতি,সাহিত্য,পরম্পরা এবং রাজ্যের বিভিন্ন উপজাতির ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য গ্ৰন্থকে জনপ্ৰিয় করে তুলতে বইমেলা এজেন্টের ভূমিকা পালন করে আসছে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ বেসরকারি স্কুলের মাশুল নির্ধারণে প্ৰাথমিক কাজ শুরু করেছে দিশপুর
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Midday meal workers stage protest in Lakhimpur