নগাঁওঃ উদ্বাস্তু হিন্দু বাঙালিদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে কেন্দ্ৰীয় সরকারের নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল ২০১৬ পাসের উদ্যোগের প্ৰতিবাদে রাজ্যে যখন টালমাটাল পরিস্থিতি সে সময়ে কিছুদিন নীরব থাকার পর মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল। নগাঁওয়ের নেহরুবালিতে ভোগালি বিহুর এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্ৰী সোনোয়াল অসমিয়া মানুষের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে বলেন,বর্তমান রাজ্য সরকার জাতি,মাটি,ভেটি সুরক্ষার প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েই ক্ষমতার রাশ কাঁধে তুলে নিয়েছিল। এই প্ৰতিশ্ৰুতি রক্ষায় কোন ধরনের আপস না করেই সরকার নিজের কাজ করে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নাগরিকত্ব বিল ইস্যুতে জাতীয় নায়ক থেকে সোনোয়ালকে খলনায়ক আখ্যা দিয়েছেন একাংশ ব্যক্তি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্ৰী এসব বিষয়ে দীর্ঘ নীরবতার পর সমালোচকদের মোক্ষম জবাব দিয়ে বলেন ভূমিপুত্ৰ হিসেবে আমি আপনাদের সবাইকে আবারও এই আশ্বাস দিচ্ছি যে নিজের লোকের সঙ্গে প্ৰতারণা করার জন্য আমি মুখ্যমন্ত্ৰীর আসনে বসিনি। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে কারোই আশঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তিনি বলেন,১৯৮৬ সালে অসম চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর তিন দশক কেটে গেছে। কেন্দ্ৰ ও রাজ্যে একের পর এক সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু কেউই চুক্তির ছয় নম্বর দফা রূপায়ণে কোনও পদক্ষেপই নেয়নি। কিন্তু কেন্দ্ৰে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারই অসম চুক্তির ওই দফা রূপায়ণে উৎসাহজনক ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্যের খিলঞ্জিয়া মানুষের সাংবিধানিক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করতে কেন্দ্ৰ উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গড়ে দিয়েছে। ওই কমিটিতে আসুকে রাখা হয়েছে। কেন্দ্ৰ যে অসমের ভূমিপুত্ৰদের সুরক্ষায় দায়বদ্ধ এই কমিটি গঠনই তার জানান দেয়-বলেন সোনোয়াল। তাই আসু নেতৃত্বের এই কমিটিতে থেকে রাজ্যের ভূমিপুত্ৰদের সংরক্ষণের বিষয়টি সুনিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন সোনোয়াল।
মুখ্যমন্ত্ৰী আরও বলেন,অসমের ছয় জনগোষ্ঠীকে জনজাতির মর্যাদা দিয়ে মোদির অধীনস্থ কেন্দ্ৰীয় সরকার লোকসভায় বিল উত্থাপন করেছে এবং ওই বিল রাজ্যসভায়ও তোলা হয়েছে। এরফলে রাজ্যের এই জনগোষ্ঠীর স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন অসমের খিলঞ্জিয়া মানুষের জাতি,মাটি,ভেটির অধিকার সুরক্ষিত রাখা এবং কোনও পরিস্থিতিতেই তাতে আঁচড় লাগতে দেওয়া হবে না। সরকারের অভিপ্ৰায় স্পষ্ট করে দিয়ে সোনোয়াল বলেন,জমির ওপর খিলঞ্জিয়া মানুষের অধিকার সুনিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার এই প্ৰথমবার ১১,৫০০ জন ভূমিহীন পরিবারকে জমির পাট্টা বিতরণ করেছে। আগামি কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্যের একলক্ষ ভূমিপুত্ৰ পরিবারকে জমির পাট্টা দেওয়া হবে। রাজ্যের ১.৩০ লক্ষ চা চাষিকেও জমির পাট্টা দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। দুর্নীতি,দূষণ মুক্ত এবং বিদেশি ও সন্ত্ৰাস মুক্ত রাজ্য গঠনে সরকার তার নিরবচ্ছিন্ন প্ৰয়াস চালিয়ে যাবে-বলেন মুখ্যমন্ত্ৰী।