অসম চুক্তির ৬ নং দফা রূপায়ণে উচ্চস্তরীয় কমিটি গড়ছে কেন্দ্ৰঃ রাজনাথ

নয়াদিল্লিঃ কেন্দ্ৰীয় ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকে বুধবার অসম চুক্তির ৬ নং দফা রূপায়ণে এবং ২০০৩ সালে স্বাক্ষরিত বোড়ো সমঝোতা চুক্তির ভিত্তিতে বোড়োদের অন্যান্য সমস্যা সমাধানে একটি উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠনে অনুমোদন জানানো হয়। ক্যাবিনেট কমিটির এই বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন খোদ প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি। বৈঠকে অসম চুক্তির ৬নং দফা অনু্যায়ী ভূমিপুত্ৰ খিলঞ্জিয়াদের সাংবিধানিক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করতেই এই উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠন করছে কেন্দ্ৰ। ভূমিপুত্ৰদের রক্ষাকবচ হিসেবে অসম বিধানসভা,স্থানীয় নিগমসমূহে ভূমিপুত্ৰদের জন্য আসন সংরক্ষণ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্যাবিনেট কমিটি।
১৯৭৯ সাল থেকে টানা ৬ বছর অসম আন্দোলনের পর ১৯৮৫ সালের ১৫ আগস্ট ঐতিহাসিক অসম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। অসম চুক্তির ৬ নং দফায় রাজ্যের ভূমিপুত্ৰদের সাংবিধানিক,আইনগত ও প্ৰশাসনিক রক্ষাকবচের ব্যবস্থা রয়েছে। চুক্তি অনু্যায়ী অসমের সাংস্কৃতিক,সামাজিক,ভাষিক পরিচয় এবং ঐতিহ্য রক্ষা ও সংরক্ষণে যথোপযুক্ত সাংবিধানিক রক্ষাকবচ সুনিশ্চিত করার প্ৰতিশ্ৰুতি দেওয়া হয়েছে কমিটির এই বৈঠকে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন,আগামি দুই তিনদিনের মধ্যেই এই উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠন করা হবে। অসম চুক্তির ৬ নং দফায় উল্লেখিত রাজ্যের ভূমিপুত্ৰদের সাংবিধানিক,আইনগত এবং প্ৰশাসনিক রক্ষাকবচের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে প্ৰয়োজনীয় পরামর্শ দেবে এই উচ্চস্তরীয় কমিটি। এই কমিটিতে অসমের প্ৰতিনিধিও থাকবেন বলে রাজনাথ জানান। ১৯৮৫ সালে অসম চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর গত ৩৩ বছরে চুক্তির দফাগুলি কতটুকু রূপায়ণ করা হয়েছে কমিটি তা খতিয়ে দেখবে। অসমিয়াদের জন্য বিধানসভা,সরকারি চাকরি ও অন্যান্য স্থানীয় পর্ষদে আসন সংরক্ষণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব দাবিদারদের সঙ্গে আলোচনা করেই প্ৰয়োজনীয় পরামর্শ দেবে এই উচ্চস্তরীয় কমিটি।
অসমিয়া এবং অসমের অন্যান্য স্থানীয় ভাষাগুলি সংরক্ষণে প্ৰয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা সম্পর্কেও কমিটি সুপারিশ রাখবে। অসমিয়া মানুষের সাংস্কৃতিক,সামাজিক,ভাষিক ও পরম্পরা সুরক্ষায়ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে কমিটি।
এদিনের ক্যাবিনেট বৈঠকে বোড়ো চুক্তি ও বোড়ো সমস্যা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে রাজনাথ সাংবাদিকদের বলেন। ৩৩ বছরেও অসম চুক্তির বিভিন্ন দফা যথাযথভাবে রূপায়িত না হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী। তবে তিনি বলেন,এখন কেন্দ্ৰ সরকার অসম চুক্তি বাস্তবায়নে দায়বদ্ধ। তিনি আরও বলেন,বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনু্যায়ী বিটিএডি এলাকায় একটি বোড়ো জাদুঘর স্থাপন করা হবে। সংস্কৃতি মন্ত্ৰক এই জাদুঘর নির্মাণে উদ্যোগ নেবে। কোকরাঝাড়ে অল ইন্ডিয়া রেডিও ও দূরদর্শন কেন্দ্ৰের বিকাশ ও আধুনিকীকরণের দায়িত্ব নেবে কেন্দ্ৰীয় তথ্য ও সম্প্ৰচার মন্ত্ৰক। এছাড়াও দ্ৰুতগামী ‘আরনাই এক্সপ্ৰেস’ বিটিএডি হয়ে চলাচল করবে। উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠিত হলে অসম চুক্তি রূপায়ণের কাজে গতি আসবে বলে রাজনাথ মনে করেন। এই কমিটি অসমিয়া মানুষের দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সহায়ক হবে-বলেন স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী। অসমের ভূমিনীতি তথা ভূমি আইন পরিবর্তনের বিষয়টি রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। তাছাড়া গবেষণা প্ৰতিষ্ঠান,ভূমিপুত্ৰদের রীতিনীতি,ঐতিহ্য ও ভাষার দলিল প্ৰস্তুতের দায়িত্ব রাজ্য সরকারকে অর্পণ করা হয়েছে বলে রাজনাথ জানান।