অসম চুক্তি নিয়ে কেন্দ্ৰের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিছকই ভাওতাবাজিঃ আসু

গুয়াহাটিঃ অসম চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে কেন্দ্ৰীয় সরকার উচ্চস্তরীয় কমিটি গড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। এই মন্তব্য করেছে সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা(আসু)। লোকসভা নির্বাচনের মুখে মোদি সরকার অসম চুক্তির ৬ নং দফা রূপায়ণে মাঠে নামলেও রাজ্যের বিভিন্ন দল,সংগঠন তাতে মোটেই আশ্বস্ত নয়। আসু কেন্দ্ৰের এই পদক্ষেপকে অসমের মানুষের সঙ্গে প্ৰতারণা বলেই আখ্যা দিয়েছে। প্ৰভাবশালী রাজ্যের এই ছাত্ৰ সংগঠনটি বিদেশি নাগরিক বহিষ্কারের দাবিতে দীর্ঘ ৬ বছর আন্দোলনের পর ১৯৮৫ সালে অসম চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। অসম চুক্তি স্বাক্ষরকারী সংগঠন আসু কেন্দ্ৰের এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নয়। নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল ২০১৬ নিয়ে রাজ্যে যখন প্ৰতিবাদ,গণরোষ ও ক্ষোভের আগুন জ্বলছে সে সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্ৰণ করতে কেন্দ্ৰ শেষ বেলায় অসম চুক্তির ৬ নং দফা রূপায়ণে উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেছে। এটা নিছকই ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয় বলে আসু মনে করে।
আসুর মুখ্য উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য দ্য সেন্টিনেলকে বলেন,অসম চুক্তির সঙ্গে ছাত্ৰ সংগঠন আসু যেহেতু জড়িয়ে আছে সেইহেতু চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে আসুকে আস্থায় না নিয়ে কেন্দ্ৰ উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। অসম চুক্তি নিয়ে বুধবারের ক্যাবিনেট কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তে নূতনত্ব বলতে কিছুই নেই-বলেন সমুজ্জ্বল।
ড.ভট্টাচার্য আরও বলেন,২০০০ সালেও অসম চুক্তির ৬ নং দফা রূপায়ণে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক মন্ত্ৰকের যুগ্ম সচিব জিকে পিল্লাই-র নেতৃত্বে একটি সাব কমিটি গঠন করে হয়েছিল। ওই কমিটি রাজ্য বিধানসভা ও অন্যান্য নির্বাচিত সংন্থায় অসমের খিলঞ্জিয়া মানুষের জন্য ১০০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। ‘সাব কমিটির সুপারিশগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল রাজ্য বিধানসভায়ও। তাই কেন্দ্ৰের বর্তমান সরকার যদি অসম চুক্তি রূপায়ণে এতটাই আন্তরিক ও আগ্ৰহী হয় তাহলে তারা ওই সাব কমিটির সুপারিশগুলি রূপায়ণ করতে পারে। তাই একের পর এক কমিটি গড়ার কোনও প্ৰয়োজন নেই’-বলেন আসু নেতা। অসম চুক্তি নিয়ে ২০১৭ সালে কেন্দ্ৰ,রাজ্য সরকার ও আসুর মধ্যে যে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কার্যক্ষেত্ৰে তাও রূপায়ণ করা হয়নি বলে আসু নেতা উল্লেখ করেন।
ভট্টাচার্য আরও বলেন,অসম চুক্তি রূপায়ণের মূল সংস্থা হচ্ছে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক। গত সাড়ে চার বছরে কেন্দ্ৰের বর্তমান সরকার চুক্তির ৬ নং দফা রূপায়ণে মাথা ঘামায়নি। এখন দুর্ভাগ্যজনকভাবে নির্বাচনের প্ৰাকমুহূর্তে অসম চুক্তির কথা তাদের স্মরণে এসেছে। তাই অসম চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে কমিটি গড়ার পরিবর্তে গত সাড়ে চার বছরে চুক্তি রূপায়ণে কী কাজ হয়েছে সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰকের কাছে শ্বেতপত্ৰ প্ৰকাশের দাবি জানাচ্ছি আমরা-বলেন ভট্টাচার্য।
অন্যদিকে,অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্ৰ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পলাশ সাংমাই বলেন,অসম চুক্তির দফা রূপায়ণ নিয়ে কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰিসভার উচ্চস্তরীয় কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিছকই একটা রাজনৈতিক চমক। নাগরিক সংশোধনী বিল সংসদে উত্থাপনের লক্ষ্যে রাজ্যের মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতেই কেন্দ্ৰ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে ৭০টি সংগঠনের প্ৰতিবাদ চলবে বলে জানান তিনি।