অসম চুক্তি রূপায়ণে গঠিত উচ্চস্তরীয় কমিটিতে যোগ দিচ্ছে না আসু

গুয়াহাটিঃ অসম চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য কেন্দ্ৰীয় সরকার ৯ সদস্যের উচ্চস্তরীয় যে কমিটি গঠন করেছে সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা(আসু)তাতে যোগ দিচ্ছে না। আসুর তরফে জানানো হয়েছে,কেন্দ্ৰের গঠিত উচ্চস্তরীয় ওই কমিটিতে প্ৰতিনিধি রাখার প্ৰশ্নই ওঠে না।
অসম চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এমপি বরুয়ার নেতৃত্বে কেন্দ্ৰীয় সরকার নয় সদস্যের যে উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠন করেছে সে সম্পর্কে প্ৰতিক্ৰিয়া ব্যক্ত করে আসু সভাপতি দীপাঙ্ক কুমার নাথ এবং সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ রবিবার সাংবাদিকদের বলেন,আসুর তরফ থেকে কেন্দ্ৰের গঠিত ওই কমিটিতে ছাত্ৰ সংস্থার কোনও প্ৰতিনিধি দেওয়ার কোন কারণই তাঁরা দেখতে পারছেন না।
উভয় আসু নেতা বলেন,অসম চুক্তির ৫নং দফা এড়িয়ে গিয়ে ৬নং দফা রূপায়ণ করা একেবারেই ‘অর্থহীন’। তাঁদের মতে,অসম চুক্তির মূল দুটি দফা হচ্ছে ৫ ও ৬ নম্বর। নাথ ও গগৈ বলেন,অসম চুক্তির ৫নং দফায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের মাঝরাতের পর বাংলাদেশ থেকে যারা অসমে ঢুকেছে,সেই সব বিদেশিদের চিহ্নিত করে রাজ্য থেকে বহিষ্কার করতে হবে। তবে শুধুমাত্ৰ এই কাট অফ ডেটের আগে অসমে আসা বাংলাদেশিদের বোঝা অসম গ্ৰহণ করবে। তাঁরা বলেন,আশ্চর্যের কথা হচ্ছে,অসম চুক্তির ৬নং দফাকে একপাশে ঠেলে রেখে ৬নং দফা কার্যকর করতে কেন্দ্ৰীয় সরকার কমিটি গড়েছে। চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে কমিটি গঠনের মাধ্যমে কেন্দ্ৰ নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল ২০১৬ সংসদে পাস করানোর তোড়জোড় শুরু করেছে। এই বিল পাসের মাধ্যমে ১৯৭১-এর ২৪মার্চ মাঝ রাতের পর অসমে আসা সব অবৈধ বিদেশিদের আশ্ৰয় ও নাগরিকত্ব দিতে চাইছে কেন্দ্ৰীয় সরকার-বলেন আসুর উভয় নেতা। তাঁদের মতে,যৌথ সংসদীয় কমিটি(জেপিসি)অসমের জন্য কী করেছে? বিল নিয়ে জেপিসি-র শুনানি গ্ৰহণ নিছকই ভাওতাবাজি। আসু নেতাদ্বয় আরও বলেন,কেন্দ্ৰের ইশারায়ই কাজ করেছে জেপিসি। নাথ ও গগৈ বলেন,চুক্তির পাঁচ নং দফা মতে,১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর অসমে আসা হিন্দু-মুসলমান কাউকেই আশ্ৰয় দেওয়া যাবে না। কিন্তু নাগরিকত্ব বিল সংশোধন করে অসম চুক্তির ৫নং দফাকে হত্যা করতে চাওয়া হচ্ছে। আসুর মুখ্য উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য বলেন,অসম চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণের বিষয় খতিয়ে দেখতে কেন্দ্ৰে যে উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠন করেছে এটা নিঃসন্দেহে নির্বাচনমুখী একটা চাল। চুক্তি সম্পর্কে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্ৰিলের ত্ৰিপাক্ষিক বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলি কেন্দ্ৰ রূপায়ণ করুক। চুক্তির ৫ নম্বর দফাও কেন্দ্ৰের অবশ্যই রূপায়ণ করা উচিত-বলেন সমুজ্জ্বল।
আসুর তরফে জানানো হয়েছে,উচ্চস্তরীয় কমিটিতে তারা যোগ দিচ্ছে না। ধর্মের নামে বিদেশিদের মধ্যে বিভাজন আসু বরদাস্ত করবে না বলে সাফ জানিয়েছে। আসু এবং নেসো এর বিরুদ্ধে আগামিকাল গোটা উত্তরপূর্বে ১২ ঘন্টা বনধের ডাক দিয়েছে। আসুর তরফে জানানো হয়েছে বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলতে থাকবে।