আকবরের বিরুদ্ধে যৌন কেলেংকারির অভিযোগ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিকের

আকবরের বিরুদ্ধে যৌন কেলেংকারির অভিযোগ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিকের
Published on

নয়াদিল্লিঃ সাংবাদিকতা থেকে রাজনীতিতে আসা এম জে আকবর যিনি ‘মি টু’ যৌন কেলেংকারি মামলার অভিযোগে ইতিমধ্যেই কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন,কিন্তু কেলেংকারির অভিযোগ তার পিছু ছাড়ছে না। বেশকজন মহিলা সাংবাদিক আকবরের বিরুদ্ধে যৌন কেলেংকারির অভিযোগ আনার পর তিনি ইস্তফা দিয়ে কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু একের পর এক যৌন কেলেংকারিতে জড়িয়ে পড়ছেন তিনি। এবার আকবরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্ৰে কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাংবাদিক পল্লবী গগৈ। তবে আকবর ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন,পল্লবীর সঙ্গে সহমতের ভিত্তিতে তার সম্পর্কে গড়ে উঠেছিল। আকবরের স্ত্ৰী পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন গগৈ মিথ্যে বলেছেন।

আমেরিকার ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও-র চিফ বিজনেস এডিটর পল্লবী কিভাবে আকবরের লালসার শিকার হয়েছিলেন তা বিস্তারিতভাবে ওয়াশিংটন পোস্টে লিখেছেন,যা প্ৰকাশিত হয়েছে শুক্ৰবার। মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে প্ৰকাশিত দীর্ঘ ব্লগে পল্লবী অভিযোগ করেছেন,বহু বছর আগে এশিয়ান এজে-এ কাজ করার সময় আকবরের কামনার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। ওই সময় এশিয়ান এজের সম্পাদক ছিলেন আকবর। দিল্লি এবং মুম্বইয়ে দুদুবার তাঁকে আকবরের যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পল্লবী। গগৈ বর্তমানে আমেরিকার নাগরিক। জয়পুরের হোটেলে আকবর তাঁকে কিভাবে যৌন হেনস্তা করছেন তার বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন এই সাংবাদিক।

পল্লবী উল্লেখ করেছেন,একবার বিশেষ কাজে তাঁকে জয়পুরে যেতে হয়। সেখানে একটি রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার জন্য আকবর হোটেলের রুমে তাঁকে ডেকে পাঠান। ওই অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে পল্লবী লিখেছেন,হোটেলের ওই রুমে তার সঙ্গে আমাকে রীতিমতো লড়াই করতে হয়। কিন্তু তার শক্তির কাছে আমি পেরে উঠিনি। তিনি আমাকে বলপূর্বক ধর্ষণ করেন। লজ্জায়,অপমানে আমি পুলিশে অভিযোগ জানাতে পারিনি। জয়পুরের ওই ঘটনার পরও আমার ওপর যৌন হেনস্তা চলতে থাকে। আকবর আমাকে যৌনভাবে,মানসিক ও মৌখিকভাবে শেষ করে দেন। প্ৰায় ১২ জনের মতো সাংবাদিক আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনার পর গত ১৭ অক্টোবর আকবর বিদেশ প্ৰতিমন্ত্ৰীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। অভিযোগ অস্বীকার করে আকবর সাংবাদিক প্ৰিয়া রামানির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকেন। এই প্ৰিয়াই আকবরের বিরুদ্ধে প্ৰথম যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন। আকবরের সদস্য পদ এখনও বহাল রাখায় পল্লবী বিজেপিকেও আক্ৰমণ করতে ছাড়েননি।

‘পরে গগৈ লন্ডনে চলে যাওয়ার পর তিনি ভেবেছিলেন এবার আকবরের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু সেখানেও তার লোলুপ দৃষ্টি আমাকে কুরে কুরে খেয়েছে। লন্ডনে কোনও পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে কথা বললেও আকবর ওখানে আমাকে হেনস্তা করেছেন’-লিখেছেন পল্লবী। তিনি আরও বলেছেন,‘আকবরকে তিনি বিতর্কের মধ্যে টানতে চাননি। কারণ তাঁর ধারণা ছিল আকবর আইন ও বিচারের উর্ধ্বে রয়েছেন। কিন্তু যখন বেশ কজন সাংবাদিক আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার সত্য অভিযোগ এনেছেন তাই তাঁদের সমর্থনেই আমি এই লেখা প্ৰকাশ করেছি’।ওদিকে আকবর ও তার পত্নী মল্লিকা দাবি করেন,৯৪ সাল নাগাদ পল্লবীর সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল উভয়ের সম্মতিতে।

এদিকে আকবরের স্ত্ৰী মল্লিকা স্বামীর পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন,তার স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ঠিকই। কিন্তু পল্লবীর অভি্যোগ সত্য নয়। ‘আমার স্বামীর সঙ্গে পল্লবীর সম্পর্কের কথা আমি জানতাম। যখন তখন বাড়িতে পল্লবীর ফোন আসতো। আমার সামনেই পল্লবী আমার স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছেন। ঘন ঘন আমার বাড়িতেও আসতেন। এক সঙ্গে বসে মদ খেতেন। কিন্তু তখনতো তাঁর মুখে হেনস্তার কোনও ছাপ দেখেনি’-বলেছেন মল্লিকা।

logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com