
ডিগবয়ঃ তিনসুকিয়া জেলার সৈখোয়া থানা এলাকার ধলা-শদিয়া সেতুর কাছে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ পথপাশের একটি মুদি দোকান থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সেনার পোষাকে আসা বন্দুকধারী দুষ্কৃতীরা কমপক্ষেও পাঁচ ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। গুলিতে গুরুতর আহত হন আরও ২ জন। সাত জনের দুর্বৃত্ত দলটি এই সব ব্যক্তিদের ডেকে নিয়ে গিয়ে লাইন দাঁড় করিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায় বলে জানা গেছে।
তিনসুকিয়ার পুলিশ সুপারের মতে,সশস্ত্ৰ দুষ্কৃতীরা লুডো খেলায় ব্যস্ত পাঁচ ব্যক্তিকে খুব কাছে থেকেই গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই পাঁচ ব্যক্তি। তিনসুকিয়ার অ্যাডিশনাল এসপি প্ৰকাশ সোনোয়ালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে ছুটে গেছে। নিহত ব্যক্তিদের অনন্ত বিশ্বাস,অবিনাশ বিশ্বাস,শ্যামল বিশ্বাস,ধনঞ্জয় নমঃশূত্ৰ এবং সুবল দাস বলে শনাক্ত করা হয়েছে। আশংকা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
ঘটনাস্থল থেকে প্ৰাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে আসা ১৭ বছরের ছেলে চাদু বিশ্বাস জানায়,‘খেরবাড়ি গ্ৰামে থাকা শ্যামল বিশ্বাসের মুদি দোকানে বসে অনন্ত বিশ্বাস,অবিনাশ বিশ্বাস,শ্যামল বিশ্বাস,ধনঞ্জয় নমঃশূত্ৰ,সুবল দাস ও সে আড্ডা দিচ্ছিল। ওই সময়ে সেনার পোষাকে ৭ জনের দুষ্কৃতী দলটি দোকানের কাছে আসে। এদের সেনা বলেই ভেবে নেন তারা। ওই দলের একজন সদস্য হিন্দিতে তাদের সঙ্গে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। বন্দুকধারী সেনার নির্দেশ অমান্য করার সাহস না দেখিয়ে তারা তাদের সঙ্গে চলতে শুরু করে। এরপর রাত ৮টা নাগাদ ধলা শদিয়ার ভূপেন হাজরিকা সেতু থেকে ৫০০ মিটার দূরে নিয়ে গিয়ে তাদের সবাইকে লাইনে দাঁড়াতে বলে। এরপরই নির্বিচারে গুলি চালিয়ে কিছুদূরে থামিয়ে রাখা গাড়িতে উঠে পালিয়ে যায়’।
চাদু আরও জানায়,গুলি চালাতে দেখে ভয়ে মূর্চ্ছা যাওয়ার মতো সে মাটিতে পড়ে যায়। বন্দুকধারী দুর্বৃত্তরা তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে নিয়ে ওই স্থান থেকে চলে যায়। এই নৃশংস ঘটনার পিছনে প্ৰথমে আলফার হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হলেও আলফা তা অস্বীকার করেছে। ঘটনার প্ৰতিবাদে অসম বাঙালি যুব ফেডারেশন আজ সকাল ৫টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তিনসুকিয়া বনধ ডাকে। হামলাকারীদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি অভিযানে নেমেছে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল কড়া ভাষায় এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করে বলেছেন যে এই পরিস্থিতির কঠোর হাতে মোকাবিলা করা হবে। ‘নিরীহ মানুষকে মেরে কোনও সমস্যা মিটবে না’-বলেন সোনোয়াল। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য মন্ত্ৰী কেশব মহন্ত এবং তপন কুমার গগৈ,ডিজিপি কুলধর শইকিয়া ও এডিজিপি মুকেশ আগরওয়ালকে ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্ৰী। রাজ্যের সব জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সোনোয়াল।