নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি একজোট হয়ে লড়বেঃ নেসো

গুয়াহাটিঃ উত্তর পূর্বাঞ্চলের আটটি প্ৰভাবশালী ছাত্ৰ সংগঠনের নেতা ও সমর্থকরা মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে একজোট হয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬-র বিরুদ্ধে সোচ্চার প্ৰতিবাদ জানান। কেন্দ্ৰীয় সরকার বিতর্কিত বিলটি সংসদে পাস করানোর যে চেষ্টা করছে তারই বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ জানাতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্ৰ সংগঠনগুলির নেতা,সমর্থকরা এখানে গুয়াহাটি ক্লাবের কাছে এসে সমবেত হন মঙ্গলবার। উত্তর পূর্ব ছাত্ৰ সংগঠন এনইএসও(নেসো)-এর ব্যানারে প্ৰতিবাদকারীরা কেন্দ্ৰকে এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল যদি পাস করা হয় তাহলে ব্যাপক আকারে আন্দোলন শুরু করা হবে,যা এর আগে কেউ কখনও দেখেনি।
প্ৰতিবাদকারীদের সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে নেসোর উপ সভাপতি উপেন্দ্ৰ দেববর্মন বলেন,ত্ৰিপুরার স্থানীয় ভূমিপুত্ৰরা তাদের নিজের গৃহভূমিতেই ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্ৰবেশের ফলে ওই রাজ্যের এমন অবস্থা হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অবৈধ অনুপ্ৰবেশের মোকাবিলায় কেন্দ্ৰের ভুল নীতির জন্যই ত্ৰিপুরায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ‘ত্ৰিপুরার ৪০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ভূমিপুত্ৰদের সংখ্যা মাত্ৰ ১০ লক্ষ। বাকি জনসংখ্যার অধিকাংশই অবৈধ অনুপ্ৰবেশকারী। ত্ৰিপুরায় পরিস্থিতি এমন একটা পর্যায়ে এসে গেছে যে বর্তমানে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰীই এখন বাংলাদেশি মূলের’-বলেন বর্মন। তিনি অভিযোগ করেন শাসক দল বিজেপি এখন শুধু তাদের ভোটব্যাংক নিয়েই আগ্ৰহী।
নেসোর সাধারণ সম্পাদক সিনাম প্ৰকাশ সিং সমাবেশে বলেন,অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্ৰবেশ ইস্যুটি আর বেশি দিন শুধু ত্ৰিপুরা,অসমের সমস্যা হয়ে থাকবে না,গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। ‘কেন্দ্ৰ উত্তর পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশিদের ডাম্পিং গ্ৰাউণ্ডে পরিণত করতে চাইছে’-বলেন তিনি।
আসুর সভাপতি দীপাঙ্ক কুমার নাথ নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে মেঘালয় সরকার ক্যাবিনেটে যে প্ৰস্তাব গ্ৰহণ করছে,অসম সরকারকেও তা অনুসরণ করার আহ্বান জানান। অন্যদিকে আসুর সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ বলেন,ভোটের স্বার্থে বিজেপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি অসমকে বাংলাদেশিদের বিচরণভূমি করতে চাইছে।
নেসো উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য বলেন,ত্ৰিপুরা এখন একা নয়। এই অঞ্চলের সব রাজ্য ত্ৰিপুরার পাশে রয়েছে। এই অঞ্চলকে বাংলাদেশিদের ডাম্পিং গ্ৰাউন্ডে পরিণত করার বর্তমান প্ৰবণতা যদি বন্ধ করা না হয় তাহলে অসম ও উত্তর পূর্বের অন্যান্য রাজ্য অচিরেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।