নিভিয়ে দাও কুঠুরীর আলো......

নিভিয়ে দাও কুঠুরীর আলো......
Published on

হাতে ছাতি নিয়ে পরে ব্যাংকের দোরগোড়ায় ধর্না দিতে দিতে মাসের পর মাস কেটে যায় কিন্তু গৃহলোন আর হাতে লাগে না।

গ্ৰ্যাজুয়েট হওয়ার পরও চাকরির বাজারে চৈত্ৰের খরা। তাই কিছু টাকা লাগিয়ে ছোট মাপের ব্যবসা খোলা,ব্যবসায় আরও কিছুটা স্টকের দরকারে সামান্য লাখ খানেক ফিনান্স চাই কিন্তু কোথায় কি? দিনের পর দইন যায়,আশার পর ভরসা,কথার পর কাগজ আর ডকুমেন্টেশন,পেপার ওয়ার্কস আর শেষ হয় না,বাবার শেষ সম্বল এলআইসি-টিকে মর্টগেজ রেখেও শেষ হল না। লোন আর হল না। কারণ ব্যাংক ম্যানেজারের অন্য কিছু চাই।

এই শেষ নয়,নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত চিত্ৰ একই। চিতে ভিন্ন শুধু শেস মহলের,সেডেন সড়া বড় বড় হাউসের বিজনেস ‘ফ্ৰড টাইফুন’দের ক্ষেত্ৰে। যার সূত্ৰ ধরে ‘ব্যারন টাইফুন’,কিংফিসার কোম্পানির মালিক বিজয় মালা থেকে শুরু করে নীরব-চকসি কোঠারি-রা আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে রয়েছেন পর বছর ধরে নীরবে কণ্ঠে বিজয়ের মালা সহ উচ্চ শিখরে অতি কম সময়ে জনসাধারণের করের টাকা গায়েব করে আধিপত্য অর্জন করে। পড়ে থাকে শুধু ফাইলবন্দি দলিল। এই চিত্ৰ সারদা থেকে রোজভ্যালি,সাহারা হারায় দলিলহীন দলিত নিম্নশ্ৰেণির সাধারণ। কারণ সাধারণের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া যত সহজ ততই কঠিন উঁচুতে হাত ওঠানো। উঁচু মহলে হাত লাগানোর চেয়ে ভাল হতে ‘রোজ’ নিয়ে ‘নীরবে’ ‘সাহারা’র মুনাফা তলা আর স্বার্থসিদ্ধি করা। নীরব-কোঠারি-বিজয় মাল্য এই ত্ৰয়ী দেখিয়ে দিয়েছে সরকার ব্যাঙ্ক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে যতই ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে ততই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ঠগবাজির রাশ নিজের হাতে নিয়েছে। বেড়েছে কেলেংকারি। যার দরুন হালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বলতে শোনা যায় প্ৰতি ঘন্টায় জনা চারেক ভারতীয় ব্যাঙ্ক কর্মচারী জড়িয়ে পড়েন আর্থিক কেলেঙ্কারিতে। প্ৰশ্ন কিন্তু থেকেই যায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো অ্যাপেক্স অথরিটিকে এই চার-একের ভাগ(এক ঘন্টায় চারজন)বুঝতে এত দেরি হয়। সন্দেহের আবর্তে শীর্ষস্থানীয় কেউ থাকতেই পারে।

জনসাধারণ ব্যাঙ্কের দোরগোড়ায় প্ৰায়শই হোঁচট খাচ্ছেন আর আরবিআই কিনা তা বুঝতেই পারছে না। আর এতেই ট্যুইটার-ফেসবুক,গোটা সোশ্যাল মিডিয়া ক্ষেপে লাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন,তুলে ধরছেন কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্মীদের কালো কেচ্ছা। কিছু কিছু ব্যাঙ্কে তো দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা সেই আদি অন্ত কাল থেকে চালিয়ে যাচ্ছে। সময় এসেছে টাকা ফিরিয়ে আনার। এই টাকা সাধারণ দিনমজুর থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তএর ঘাম করানো বহু কষ্টে বাঁচিয়ে রাখা ধন,ভবিষ্যতের আশা-প্ৰত্যাশা-স্বপ্ন পূরণের শেষ সম্বলটুকু ছিনিয়ে ঠগবাজি করে এক লহমায় জনাকতেক ব্যক্তির পকেটে যাবে তা কোনও অবস্থায়ই মানা যায় না। তাই চাই ফেরত্ত,পুরো সুদ সমেত অর্থ,যে কোনও অবস্থায় চাই-ই চাই। শুধু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে জেলে জনাকয়েক অফিসারকে পুরলেই চলবে না। অনেক আগে থেকেই ‘নীরব সরকার’।

সময় এসেছে ব্যাঙ্ক পরিষেবায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের। প্ৰত্যেকটি ব্যাঙ্কের কাজকর্মই জনহিতকারী পরিষেবার চেয়ে তেল মাথায় তৈল মর্দন পরিষেবাই বেশি পরিলক্ষিত। হালের ডিমনিটাইজেশনের সময় ্যেভাবে সারা দেশে কিছু ব্যাঙ্ক কর্মী দুহাত ভরে কালো টাকাকে সাদা করতে সাহা্য্যের হাত বাড়িয়ে নিজেদের ‘তিজরি’ ভরল,তা বিরল নয়-নতুনও নয় অনেক বছরের পূরনো কৌশল। লক্ষণীয় ব্যাপারঝল চিত্ৰনাট্য কোলসা হয়ে কিছু কিছু রাঘব-বোয়াল ধারা পড়ছে হালের নরেন্দ্ৰ মোদি সরকারেরই আমলে। এই সরকারের আগে কিন্তু ধরা পড়েনি বা জনসমক্ষে আসেনি এই উঁচু মহলের সর্বনাশা-রঙবাজি কারনামা।

নীরবদের তো আর একদিনে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়নি,অনেক অনেক বছর ধরেই ‘সাহারা’ পেয়েছে সরকার বাহাদুরের। দরকারে সরকার পলিসি বদল করে একের পর এক বিজনেস টাইকুনদের হাতকে আরও শক্তিশালী করেছে। কিন্তু ‘বিগ ফিস’ যতই স্ক্যাম করুক,আর্থিক আনিয়ম করুক আইনের জালে ধরা পড়েনি। বর্তমানে কিছুটাঝলেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কালো ‘কুঠুরী’র গারদের পিছন দিকটায় ওইসব ধনকুবেরদের যে আগামীদিনে দেখা যাবে না তা বলা শক্ত। দরকার শুধু সাধারণ জনগণ তার মেরুদণ্ডটাকে একটু শক্তপোক্ত করে প্ৰতবাদ করা। তবেই কেল্লা ফতে। অনেক নতুন সূর্য আমরা দেখতে পারব। তুফানি রাতের পর স্বর্ণাভায় আলোকিত হবে দিগন্ত।

logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com