প্ৰার্থীদের সম্পত্তির হিসেব,ফৌজদারি অপরাধের তথ্য সংবাদ মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে প্ৰকাশ করার ফরমান

গুয়াহাটিঃ ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের(ইসিআই)তীক্ষ্ণ নজরদারির মাধ্যমে এবার অসমে লোকসভার নির্বাচন হচ্ছে। রাজ্যের নির্দিষ্ট কিছু জটিল এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল ভোটগ্ৰহণ কেন্দ্ৰগুলিতে লাইভ ওয়েবকাস্টিং এবং ভিডিওগ্ৰাফি রেকর্ডিঙের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক মুকেশ সাহু সোমবার এখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান।
সাহু বলেন,এবার ভোটে একটা নতুন কনসেপ্ট চালু করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্ৰার্থীদের এবার সিআই ফর্ম পূরণ করতে হবে। ওই ফর্মে প্ৰার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা রয়েছে কিনা তা উল্লেখ করা চাই। ওই একই ফর্মে প্ৰার্থীদের সম্পত্তি,আয়করের বিস্তারিত তথ্য এবং তাদের দায়দায়িত্ব,অপরাধের রেকর্ড ইত্যাদি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। যদি কোনও প্ৰার্থীর ভারতের বাইরে সম্পত্তি থেকে থাকে তাহলে স্টোও ফর্মে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা চাই। প্ৰার্থীদের এই তথ্যগুলি বিজ্ঞাপন আকারে প্ৰচার মাধ্যম অথবা ইলেকট্ৰনিক মিডিয়ায় কমপক্ষেও তিন বার করে প্ৰকাশ করতে হবে,যাতে সাধারণ মানুষ সংশ্লিস্ট প্ৰার্থীর বিষয় সম্পত্তি সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল হতে পারেন। প্ৰার্থীর ব্যাকগ্ৰাউন্ড সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখার লক্ষ্যেই এমন প্ৰস্তাব রাখা হয়েছে-বলেন সাহু। এছাড়াও প্ৰার্থীদের ব্যক্তিগত অপরাধ সম্পর্কে তাদের সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকেও জানাতে হবে। এরপরই দলগুলিকে তাদের প্ৰার্থীদের এজাতীয় তথ্যগুলি ওয়েবসাইটে প্ৰদর্শনি করে এর বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাখিল করতে হবে।
সংবেদনশীল ভোটগ্ৰহণ কেন্দ্ৰগুলি চিহ্নিত করা একটা লাগাতার প্ৰক্ৰিয়া বলে উল্লেখ করে সাহু বলেন,আজকের তারিখ পর্যন্ত ১৯১৩টি ভোটকেন্দ্ৰকে জটিল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাছাড়া ৩৬৬৩টি ভোটকেন্দ্ৰকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা গেছে। সাহু বলেন,গত নির্বাচনে যে সব কেন্দ্ৰে ৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং একজন রাজনীতিক যেখানে একাই ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছেন এবং যেখান থেকে হিংসাশ্ৰয়ী ঘটনার রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছিল সেগুলিকেই জটিল কেন্দ্ৰ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে সাম্প্ৰদায়িক সুরসুড়ি থাকা,জঙ্গিপ্ৰবণ ও সীমান্ত তথা প্ৰত্যন্ত এলাকাগুলিকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর কেন্দ্ৰ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজ্যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনায় কি পরিমাণ সুরক্ষা বাহিনীর প্ৰয়োজন হবে সে সম্পর্কে সাহু বলেন,এবিষয়ে আলোচনা চলছে। এই বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানাবো।
এনআরসি-র সম্পূর্ণ খসড়া থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে তারা ভোট দিতে পারবে কিনা জানতে চাওয়া হলে সাহু বলেন,সচিত্ৰ ভোটার পরিচয়পত্ৰ যাদের রয়েছে তারা অবশ্যই ভোট দিতে পারবেন।
মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট অর্থাৎ নির্বাচনী আচরণ বিধি সম্পর্কে সাহু বলেন,চিফ ইলেকশন কমিশনার রবিবার দিল্লিতে নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট বলবৎ হয়েছে। কোথাও নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য ফ্লাইং স্কোয়াড ইতিমধ্যেই কাজে নেমে পড়েছে। এছাড়াও স্টেট সার্ভিল্যান্স টিম এবং ভিডিও সার্ভিল্যান্স টিমকে এই উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হয়েছে। প্ৰার্থীদের খরচের বিষয়টিও কঠোরভাবে তদারক করা হবে-উল্লেখ করেন সাহু। নির্বাচনী বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন আগাগোড়া নজরদারি বহাল রাখবে।