বিল নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে,বিধানসভায় বললেন মুখ্যমন্ত্ৰী

গুয়াহাটিঃ মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনয়াল শুক্ৰবার নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল ২০১৯ সম্পর্কে বিধানসভায় সদস্যদের বোঝাবার চেষ্টা করেন। বলেন,বিল সম্পর্কে ভুল বার্তা ছড়ানো হছে,সমাজে অহেতুক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। সোনোয়াল বিধানসভায় আশ্বাস দিয়ে বলেন,পড়শি দেশে ধর্মীয় নির্যাতনের বলি হওয়া প্ৰকৃত ক্ষতিগ্ৰস্তদেরই প্ৰস্তাবিত আইনে নাগরিকত্ব দিতে চাওয়া হচ্ছে। রাজ্য ও কেন্দ্ৰীয় সরকারের তরফে অনুপুঙ্খ তদন্ত ও পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই এদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে। কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক ইতিমধ্যেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে,রাজ্য সরকারের মতামতের পরই এদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। রাজ্যপালের ভাষণের ওপর শুক্ৰবার বিধানসভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে সোনোয়াল বলেন,নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। অযথা অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমনও বলা হচ্ছে বিলটি আইনে পরিণত হলে পড়শি দেশ থেকে আসা প্ৰত্যেকেই ঢালাও হারে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হবে। এটা মোটেই ঠিক নয়। তিনি বলেন,মোদ্দা কথা হলো,ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে যারা এদেশে এসেছে,বিল হচ্ছে সেই সব ‘প্ৰকৃত ক্ষতিগ্ৰস্তদের’ নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর একটা সু্যোগ।
সোনোয়ালের মতে,ধর্মীয় নিপীড়নের বলি ওই সব লোকেদের ভারতে আসার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে প্ৰথমে হলফনামা সহ জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানাতে হবে। জীবন সংশয়ের ভয়ে পড়শি দেশ থেকে পালিয়ে আসার কারণ হলফনামায় উল্লেখ করতে হবে তাদের। এরপর জেলাশাসক তাদের সংস্থার মাধ্যমে আবেদনগুলির তদন্ত ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন। এব্যাপারে জেলাশাসক আবেদনকারীর আশেপাশে থাকা লোকজনের মতামত নেবেন। জেলাশাসক এরপর সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট দাখিল করবেন।
রাজ্য সরকার এরপর বিষয়টি নিয়ে নিজস্বভাবে তদন্ত ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে কেন্দ্ৰের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ পেশ করার আগে। পরবর্তী পর্যায়ে কেন্দ্ৰীয় সরকারও ধর্মীয় নিপীড়নের বলি ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব মঞ্জুর করার আগে রাজ্য সরকারের সুপারিশ সম্পর্কে নিজস্বভাবে তদন্ত ও পরীক্ষা চালাবে-উল্লেখ করেন সোনোয়াল। তিনি বলেন,নাগরিকত্ব মঞ্জুর করার বিষয়টি এক দীর্ঘ প্ৰক্ৰিয়া,হুটহাট করে কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া পড়শি দেশে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে কেন্দ্ৰীয় সরকারই নাগরিকত্ব বিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নাগরিক বিল পাস হলে ১.৯০ কোটি লোক বাংলাদেশ থেকে অসমে চলে আসবে বলে ন্যস্ত স্বার্থান্বেষীরা যে প্ৰচার চালাচ্ছে তা সর্বৈব মিথ্যে বলে সোনোয়াল উল্লেখ করেন।
মুখ্যমন্ত্ৰী এদিন সতর্ক করে দিয়ে বলেন,কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন। কারণ সমাজে অস্থিরতা,অশান্তি জিইয়ে রাখতে কেউ যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেয় তাহলে সরকার ঠুঠো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকবে না। ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে সমাজের স্বার্থে-বলেন সোনোয়াল।