বিষ মদ কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় বিধানসভা,কংগ্ৰেসের ওয়াকআউট

গুয়াহাটিঃ রাজ্যের দুই জেলায় বিষ মদ কাণ্ড নিয়ে সোমবার বিধানসভায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিরোধীরা সদনের অন্যান্য কাজকর্ম ফেলে রেখে শুধু বিষ মদ কাণ্ড নিয়ে আলোচনার দাবিতে গো ধরে থাকেন। আনা হয় মুলতুবি প্ৰস্তাবও। শাসক-বিরোধী পক্ষের মধ্যে এই ইস্যু নিয়ে উত্তেজনা,কথা কাটাকাটি এবং হইচইয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে সদন। সভায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে অধ্যক্ষ হিতেন্দ্ৰনাথ গোস্বামী আধঘণ্টার জন্য বিধানসভা স্থগিত রাখেন। ক্ষুব্ধ কংগ্ৰেস তো রীতিমতো সভায় ওয়াকআউট করে অধ্যক্ষ তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায়।
গত বৃহস্পতিবার গোলাঘাট জেলার শালমরা চা বাগানে বিষ মদ খেয়ে প্ৰথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর মেরাপানি এবং যোরহাট জেলার তিতাবরের চা বাগান এলাকা থেকে বিষ মদের ক্ৰিয়ায় মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করে। দেখতে দেখতে উভয় জেলার হাসপাতালগুলিতে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়ে যায়। বিষাক্ত চোলাই খেয়ে উভয় জেলায় এপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫৭ ছাপিয়ে গেছে। হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন অনেকে। এদিন ইস্যুটি নিয়ে অবশেষে আলোচনা হলেও মাঝে মাঝেই চিৎকার,হৈহুল্লোড়ে বিধানসভার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
শাসক ও বিরোধী পক্ষের বিধায়করা এই ইস্যুতে পরস্পরের ওপর কাদা ছোড়াছুঁড়িতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এদিন বিরোধীদের দাবি ছিল বিধানসভার দিনের সমস্ত কাজ বাতিল করে শুধু বিষ মদ কাণ্ড নিয়েই আলোচনার সু্যোগ দিতে হবে। ওই দাবিতে বিধানসভার শুরুতেই পৃথকভাবে মুলতুবি প্ৰস্তাব আনে কংগ্ৰেস ও এআইইউডিএফ। অগপ বিধায়করা সদন মুলতুবি না করে ইস্যুটি নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। এই ইস্যুতে বিরোধীরা আলোচনার দাবিতে একমত হলেও আলোচনা কী নিয়মে হবে সে ব্যাপারে বিরোধীদের মধ্যে তালমিলের অভাব ছিল। রাজ্যের চা বাগানগুলিতে চোলাই মদের উৎপাদন ও চিক্ৰির চল রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে।
একাংশ আবগারি কর্মকর্তা ও অবৈধ ব্যবসায়ীর মধ্যে এসব মদ তৈরি নিয়ে একটা গোপন বোঝাপড়া থাকারও অভিযোগ ওঠে। বাগান কর্তৃপক্ষও এব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা গ্ৰহণ না করারও অভিযোগ রয়েছে। সভায় কেউ কেউ বলেন,চা বাগানে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক সচেতনতা গড়ে তোলার প্ৰয়োজন। কেউ কেউ আবার অসমকে মদহীন রাজ্য ঘোষণা করার দাবি তোলেন। তবে এই মর্মান্তিক ঘটনার উচ্চ পর্যায়ে তদন্তের ব্যাপারে সদন সর্বসম্মত মত প্ৰকাশ করেছে। গোলাঘাট ও যোরহাট জেলার ক্ষতিগ্ৰস্ত বাগানগুলিতে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য একটি সর্বদলীয় প্ৰতিনিধিদল পাঠানোর ব্যাপারে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।