গুয়াহাটিঃ প্ৰায় টানা দুসপ্তাহ প্ৰচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ গুয়াহাটির মানুষ বৃষ্টির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্ৰার্থনা জানাচ্ছিলেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার বহু প্ৰতীক্ষিত বৃষ্টি ঠাণ্ডা করে দিয়ে যায় মহানগরীর জনজীবন। মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় উত্তরপূর্বের প্ৰবেশদ্বার গুয়াহাটির বিভিন্ন পথে জল জমে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় আরও এক দুর্যোগের। গুয়াহাটিকে স্মার্টসিটি আখ্যা দেওয়া নিয়ে দিশপুরের বড় বড় দাবির মুখে ঝামা ঘসে দিল বৃষ্টি। ধারা বৃষ্টিতে মহানগরীর জোড়াবাটে ধস নেমে অসম-মেঘালয় সীমান্তে কেড়ে নেয় চারজনের জীবন। বৃহত্তর গুয়াহাটির বিভিন্ন স্থানে কৃত্ৰিম বন্যায় স্বাভাবিক জীবন হয়ে পড়ে স্তব্ধ। শহরের বিভিন্ন স্থানে হাঁটু ও কোমর অবধি জল দাঁড়ায়। যানজটের সৃষ্টি হয় শহরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ত পথগুলিতে। পরিবহণ ব্যবস্থার অপ্ৰতুলতায় নাকানিচোবানি খেতে হয় নিত্য যাত্ৰীদের। স্কুল,কলেজের ছাত্ৰছাত্ৰীরা দীর্ঘসময় পর বাড়িতে গিয়ে পৌঁছয়। প্ৰতি বছরই মরশুমি বৃষ্টিতে মহানগরীতে এই কৃত্ৰিম বন্যা দেখা দেয়। অথচ এই সমস্যার সুরাহায় আজ অবধি বড়সড় কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে এদিন শহরে একটা বিশৃঙ্খল,বেসামাল পরিস্থিতি দেখা দেয়।
গুয়াহাটি উন্নয়ন মন্ত্ৰী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য শুক্ৰবার এক বিবৃতিতে বলেন,শহরের বিভিন্ন পথে জল জমলেও পূর্বের বছরগুলির তুলনায় তা অনেকটাই কম। ফলে মানুষজনকে বেশি দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়নি। তবে কৃত্ৰিম বন্যায় ক্ষতিগ্ৰস্ত ভুক্তভোগীদের একাংশ ভট্টাচার্যের ওই মন্তব্য ক্ষোভ প্ৰকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য,বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে জোড়াবাটের শঙ্করদেব নগরে ধসে ইন্দিরা দর্জি ও মেঘালয়ের রিভোই জেলার ১৩ মাইলে বিলাদ দৈমারির মৃত্যু হয়। শুক্ৰবার সকালের বৃষ্টিতে জোড়াবাটের হস্তিনাপুরে ধসে চাপা পড়ে মারা যান রাখি চুবেদি ও তার ছোট ছেলে আয়ুস চুবেদি। নিহত তিনজন দর্জি,রাখি ও আয়ুসের জন্য ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে সরকার। এদিন পাঞ্জাবাড়ি এলাকার ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ নগরে অনেক বাড়িতে বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ে। পাঞ্জাবাড়ির বাসিন্দা দেবাশিস ঠাকুর বলেন ‘আমি বেশ কবছর ধরে এখানে বাস করছি। কিন্তু এমন ভাবে জল জমা হতে আগে কখনো দেখিনি’।