গুয়াহাটিঃ নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল ২০১৯(ক্যাব)রাজ্যসভায় পাস হলে উত্তর পূর্বাঞ্চলে অশান্তির আগুন জ্বলবে। প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদির অসম,অরুণাচল প্ৰদেশ ও ত্ৰিপুরা সফরকালে উত্তর পূর্ব ছাত্ৰ সংগঠন(নেসো)শুক্ৰবার এই ভাষায়ই তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছে। নেসোর তরফ থেকে এই বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে বিতর্কিত বিলটি যদি আইনে পরিণত হয় তাহলে তা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে এবং এধরনের পরিণতির জন্য একমাত্ৰ কেন্দ্ৰীয় সরকারকেই দায়ী থাকতে হবে।
শুক্ৰবার সন্ধ্যায় নেসোর চেয়ারম্যান,সেক্ৰেটারি জেনারেল এবং উপদেষ্টা ক্ৰমে স্যামুয়েল বি জিরওয়া,সিনাম প্ৰকাশ সিং এবং ড.সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক যৌথ প্ৰেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে,বিভিন্ন স্থানীয় সংগঠন,ব্যক্তি বিশেষ এবং কয়েকটি রাজ্য সরকারও বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্ৰতর করে তোলা সত্ত্বেও কেন্দ্ৰ বলপূর্বকভাবে বিলটি লোকসভায় পাস করিয়ে নেয়। ‘এটা রাজনৈতিক অবিচারের আরও এক নজির। উত্তর পুবের স্থানীয় মানুষের প্ৰতি কেন্দ্ৰের যে কোনও শ্ৰদ্ধাই নেই তাদের এই ভূমিকায় তারই স্পষ্ট আভাস ফুটে উঠছে। কেন্দ্ৰ জেনে বুঝে এবং ইছাকৃত ভাবেই বিলটি পাস করাতে চাইছে যাতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ভূমিপুত্ৰরা নিজেদের স্বভূমিতেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে’-উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
নেসোর সেক্ৰেটারি জেনারেল সিনম প্ৰকাশ সিং বলেন,নেসো প্ৰধানমন্ত্ৰী এবং কেন্দ্ৰীয় সরকারকে এটা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিতে চায় যে কোনও পরিস্থিতিতেই এই অঞ্চলের মানুষ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মেনে নেবেন না। বিলটি রাজ্যসভায় যাতে পাস না হয় তার ব্যবস্থা করতে তিনি কেন্দ্ৰের কাছে আর্জি জানান।
অন্যদিকে সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা(আসু),৩০টি অন্যান্য জাতীয় সংগঠন শুক্ৰবার রাজ্যজুড়ে বিলের বিরুদ্ধে উত্তাল প্ৰতিবাদ জানায়। প্ৰতিবাদস্বরূপ তারা বিলের কপি পর্যন্ত পোড়ায়। এই একই ইস্যু নিয়ে সংগঠনগুলি আজ(শনিবার)প্ৰধানমন্ত্ৰীর কুশপুতুল দাহ করবে। আসু সভাপতি দীপাঙ্ক কুমার নাথ বলেন,২০১৪ সালে ‘প্ৰধানমন্ত্ৰী অসমের মানুষকে বাংলাদেশিদের তাড়ানোর প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন সেই বাংলাদেশিদের স্বাগত জানাতে তিনি আইন আনতে চলেছেন। এটা সত্যিই দুঃখজনক’।
নাথ বলেন,নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল ২০১৯ অসমের ভূমিপুত্ৰ খিলঞ্জিয়াদের সামনে শুধু হুমকিই নয়,এটা ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্ৰেও আঘাত হানবে। ‘অসমের মানুষের অস্তিত্ব,মর্যাদা এবং আবেগ অনুভূতির প্ৰতি প্ৰধানমন্ত্ৰীর যদি এতটুকু দরদ থাকে তাহলে তাঁর ওই আইনটি অবিলম্বে রদ করা উচিত’-বলেন নাথ। রাজ্যসভায় নাগরিক বিল পাসের মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে বাংলাদেশিদের নিয়ে বৈষম্য সৃষ্টি না করতে আসু প্ৰধনমন্ত্ৰীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।