
নয়াদিল্লিঃ ফ্ৰান্সের কাছ থেকে ৩৬টি রাফাল লড়াকু বিমান কেনা নিয়ে আদালতের তদারকিতে সিবিআই তদন্তের দাবিতে জমা পড়া চারটি আবেদনের দীর্ঘ তিনঘণ্টা শুনানির পর সুপ্ৰিমকোর্ট বুধবার তাদের রায়দান স্থগিত রাখে। ফ্ৰান্সের ডাসাল্ট অ্যাভিয়েশন ফার্মের সঙ্গে ওই চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিল কেন্দ্ৰ। রাফাল চুক্তি নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবিতে সুপ্ৰিমকোর্টে যাঁরা আবেদন করেছিলেন তাঁরা হলেন আইনজীবী মনোহরলাল শর্মা,বিনীত ধান্দা,আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিং,আইনজীবী প্ৰশান্তভূষণ,প্ৰাক্তন কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰী যশবন্ত সিনহা ও অরুণ শৌরি। আইনজীবী প্ৰশান্ত ভূষণ এদিন সর্বোচ্চ আদালতে যশবন্ত সিনহা ও শৌরির পক্ষেই সওয়াল করেন। প্ৰশান্তভূষণ রাফাল চুক্তি প্ৰকাশ্যে তুলে ধরার দাবি জানান এদিন। অন্যদিকে সরকারের হয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে ভেনুগোপাল সওয়াল করেন। ভেনুগোপাল জানান,চুক্তি নিয়ে শীর্ষ আদালতকে আর কোনওভাবে সাহায্য করা সম্ভব নয়। ভেনুগোপাল জানান দেশের সংসদকেও রাফাল যুদ্ধ বিমানের দাম সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়া হয়নি।
সুপ্ৰিমকোর্টের প্ৰধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ,বিচারপতি এসকে কৌল ও বিচারপতি কেএম যোশেফকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ এদিন আবেদনকারীদের যুক্তি ধৈর্য সহকারে শোনার পর এব্যাপারে রায়দান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। রাফাল ক্ৰয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ এনে এফআইআর দাখিলের আবেদন জানানো হয় আদালতে। আবেদনকারীরা রাফাল মামলা নিয়ে শুনানির গোড়া থেকেই কেন্দ্ৰকে একাধিক ইস্যু নিয়ে কাঠগড়ায় তোলেন। মামলাকারীরা যুক্তি দেখান রাফালের দাম খোলসা করার ক্ষেত্ৰে কোনও জাতীয় নিরাপত্তার প্ৰশ্ন নেই। মামলাকারীদের মতে,জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে কেন্দ্ৰ আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার পেয়ে যেতে চাইছে।
‘রাফালের দাম নিয়ে আলোচনা তখনই হবে যবে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। প্ৰধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছে একথা। এজি ভেনুগোপাল অবশ্য রাফাল চুক্তির বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার বিরোধিতা করেছেন। ভেনুগোপাল যুক্তি দেখান চুক্তির বিষয় খোলসা করা হলে অন্যান্যরা সু্যোগ পেয়ে যাবে। উল্লেখ করা যেতে পারে,সুপ্ৰিমকোর্টের নির্দেশ মেনেই কেন্দ্ৰ গত সোমবার বন্ধ খামে রাফাল চুক্তির যাবতীয় নথি আবেদনকারীদের হাতে তুলে দেয়। ফ্ৰান্সের কাছ থেকে কেন যুদ্ধ বিমান কিনতে চাওয়া হয়েছে,আবেদনকারীদের হাতে সেই নথিগুলিও তুলে দেওয়া হয়।
রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার জন্য কত টাকা ব্যয় হছে,কেনই বা বিমানগুলি কেনা হচ্ছে তার বিস্তারিত তথ্য বন্ধ খামে জানাতে গত ৩১ অক্টোবর কেন্দ্ৰকে নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। অ্যাটর্নি জেনারেল ভেনুগোপাল কেন্দ্ৰের ওই নির্দেশের বিরোধিতা করে যুক্তি দেখিয়েছিলেন রাফাল চুক্তি অনু্যায়ী প্ৰকাশ্যে দাম জানানো নিয়ম বহির্ভূত।
প্ৰধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বেঞ্চ ৩১ অক্টোবর খোলাখুলি জানিয়েছিল রাফাল যুদ্ধ বিমানের দাম জানাতে যে গোপনীয়তা রয়েছে, তা হলফনামা পেশ করে কেন্দ্ৰকে জানাতে হবে। রাফাল যুদ্ধ বিমান ক্ৰয়ে ডিফেন্স প্ৰকিউরমেণ্ট প্ৰসিজিওর ২০১৩ মেনে চলা হয়েছে এবং এব্যাপারে ডিফেন্স অ্যাকিউজেশন আউন্সিলের অনুমোদন থাকার কথাও কোর্টকে জানিয়েছে কেন্দ্ৰ।