লখিমপুরে বন্যা-ভাঙন বিধ্বস্ত বহু ভূমিহীন পরিবারের পঞ্চায়েত নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত

লখিমপুরঃ ঢকুয়াখানা বিধানসভা কেন্দ্ৰের দুটো গ্ৰাম পঞ্চায়েতের অধীন বন্যা ও ভাঙন বিধ্বস্ত প্ৰায় চারশো ক্ষতিগ্ৰস্ত পরিবার পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কোনওরকম আগ্ৰহই দেখাচ্ছেন না। উল্টে ওই সব অঞ্চলের ক্ষতিগ্ৰস্ত মানুষ-পঞ্চায়েত নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এবং সরকারি প্ৰকল্পগুলি থেকে কোনওভাবে উপকৃত না হওয়ায় এই সব ক্ষতিগ্ৰস্ত মানুষ পঞ্চায়েত ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন।
এই চারশোটি কৃষক পরিবার উজনি অরকেপ,নামনি অরকেপ,খামন বিরিনা,উজনি জাজি,নামনি জাজি,মাতমরা,জুরিয়া,উজনি মিশিংবালি,নামনি মিশিংবালি,মদারগুড়ি,বাহির মদারগুড়ি,মাঝ টেকেলিফুটা এবং বাহির টেকেলিফুটা ইত্যাদি অঞ্চলের বাসিন্দা। এই সব এলাকা লখিমপুর জেলার ঢকুয়াখানা রাজস্ব সার্কলের মাতমরা এবং খেরকটা জিপির অধীন মহাবাহু ব্ৰহ্মপুত্ৰের পাড় ঘেঁষে রয়েছে। ১৯৯৮ সালের বিধ্বংসী বন্যা ও নদী ভাঙনে এই অঞ্চলগুলির মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়েছিলেন। ফের নতুন করে বন্যা ও ভাঙনে এই সব মানুষের জমিজমা ও ঘরবাড়ির বিস্তর ক্ষতি হয়েছিল। বন্যার ফলে তাদের ফসলি জমি বালু,কাঁকরে ছেয়ে গেছে। নদীর ভয়ঙ্কর ভাঙনে বিভিন্ন সরকারি শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। ওই সময় থেকেই গ্ৰামগুলির মানুষ সরকারি সংরক্ষিত জমি অথবা ব্ৰহ্মপুত্ৰের মাতমরা বাঁধের ওপর বসবাস করছেন। এরপরও ২০০৭,২০০৮,২০০৯,২০১০ ও ২০১৬ সালে উপর্যুপরি বন্যার কবলে পড়তে হয় এই এলাকাগুলির মানুষজনকে।
কিন্তু হত দরিদ্ৰ এই সব মানুষের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে আজ অবধি সরকারের তরফে কোনও ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হয়নি। নাওপরিয়া পুনঃসংস্থাপন দাবি সমিতির সভাপতি অভিরাম পেগু এবং সম্পাদক নবকুমার পেগু বলেন,পূর্বতম কংগ্ৰেস সরকার ক্ষতিগ্ৰস্ত কয়েকটি পরিবারকে জমির পাট্টা দিয়েছিল,তাদের পুনর্বাসন দেওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু আজ অবধি এই সব মানুষের হাতে বরাদ্দ জমি হস্তান্তর করা হয়নি। তাই অধিকাংশ মানুষ গৃহহীন রয়েছেন আজও। অঞ্চলগুলিতে কোনও উন্নয়নমূলক স্কিমও রূপায়ণ করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গ্ৰামগুলির মানুষ স্থানীয় বিধায়ক তথা পঞ্চায়েত ও গ্ৰামোন্নয়ন মন্ত্ৰী নব কুমার দোলের কঠোর সমালোচনা করেছেন। দোলে গৃহহীন মানুষগুলির সঙ্গে প্ৰতারণা করেছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। প্ৰধানমন্ত্ৰী আবাস যোজনা ও সেনেটারি লেট্ৰিনের স্কিম থেকে গ্ৰামবাসীরা বঞ্চিত হয়েছেন নিজেদের জমি না থাকায়।