
নাগরিকত্ব বিল,‘ডি’-ভোটার এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকে কেন্দ্ৰ করে রাজ্যের রাজনীতি যখন তোলপার,ঠিক তখনই বরাক উপত্যকার শিলচরে লোকসভা নির্বাচনের ভোট প্ৰচারে সূচনা করবেন প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী।২০১৯-এর অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্ৰচারের জন্য এরাজ্যের পারি রাখবেন প্ৰধানমন্ত্ৰী।
এদিন রাজ্য বিজেপি-র গুয়াহাটিস্থিত সদর দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দলটির রাজ্যিক সভাপতি রঞ্জিতকুমার দাস একথা জানান। সোমবার দলীয় কার্যালয় সাংবাদিকের সামনে তিনি বলেন,এবারের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্ৰ করে দেশের বিভিন্ন প্ৰান্ত এখন থেকেই সভা-সমিতি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আগামি ৪ জানুয়ারি শিলচরে অনুষ্ঠিত করা হবে রাজনৈতিক সভা। যেখানে উপস্থিত থেকবেন মোদী।
অসম তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নির্বাচন কেন্দ্ৰীক সভা এটাই প্ৰথম। এই সভার মাধ্যমেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি মারবেন প্ৰধানমন্ত্ৰী। উল্লেখ্য,প্ৰধানমন্ত্ৰীর ওই সভা সফল করার জন্য এখন থেকেই দলীয় নেতৃত্ব কোমর কেঁচে ময়দানে নামতে চাইছেন। সম্ভবত এরজন্যই আগামি ২৭ এবং ২৮ ডিসেম্বর করিমগঞ্জ,শিলচর ফসরে যাচ্ছেন রাজ্যিক সভাপতি। এনিয়ে তিনি বলেন,দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করাটা খুবই জরুরী।
এছাড়া,করিমগঞ্জ শিলচরে নি্যুক্তি দেওয়া হবে পৃষ্ঠা প্ৰমুখ। প্ৰতিজন ভোটারের সঙ্গে মত বিনিময়ের ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে,রাজ্যিক সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়া দ্বিতীয় বছর পূর্ণ করেছেন রঞ্জিতবাবু। এরজন্য বিগত দিনের চেয়ে আরও অধিক শক্তিশালীভাবে দলকে এগিয়ে নিতে চাইছেন। তাঁর কথায় দল পূর্বের চেয়ে অনেকটা শক্তিশালীভাবে অগ্ৰসর হচ্ছে। কেন না ২৭ লক্ষ সদস্যের মধ্যে অধিকাংশই ‘ডেডিকেটেড’।
অন্যদিকে,আগামি ১৯ জানুয়ারি ডিমা-হাসাও স্বশাসিত পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এনিয়ে অনেকটা আত্মবিশ্বাসী রঞ্জিত দাস। তিনি বলেন,পরিষদ বিজেপি গঠন করবে। এতে কোনও সন্দেহ নেই। সেইসঙ্গে তিনি এও জানান,আগামী ২ জানুয়ারির মধ্যে দলের প্ৰার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তবে এনিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই নির্বাচনি প্ৰস্তুতি কমিটিতে রয়েছেন রঞ্জিতকুমার দাস,মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সনোয়াল,নেডা-র আহ্বায়ক তথা মন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা,দলের সাংগঠনিক সাধারন সম্পাদক ফনিন্দ্ৰনাথ শর্মা,মন্ত্ৰী সুম রংহাং,মন্ত্ৰী পীযুষ হাজরিকা,বিধায়ক বীরভদ্ৰ হাগজের,বিধায়ক ডা নোমল মমিন,সাধারণ সম্পাদকদ্বয় ক্ৰমে দীলিপ শইকিয়া,পূলক গোহাঁই,জেলা প্ৰভারী রামকৃষ্ণ ঘোষকে রাখা হয়েছে।
সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শরিক দল অগপ-র প্ৰসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে আঞ্চলিক দলটি সাথে যেভাবে তিক্ততাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল,তা নিয়ে বিস্তৃতভাবে দলের রাষ্ট্ৰীয় সভাপতি অমিত শাহকে জানানো হয়েছে। কেন না মিত্ৰতার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে প্ৰধানমন্ত্ৰী ও রাষ্ট্ৰীয় সভাপতি অমিত শাহের পর। তবে রঞ্জিত দাসের এদিনের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা গেল যে,অগপ-র সঙ্গে মিত্ৰতার বিষয়টি নিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছেন। ব্যাকফুতেই বলা চলে।তবে কংগ্ৰেস ও এআইইউডিএফ দলকে সমালোচনা করতে চাড়লেন না সভাপতি দাস।
বলেন,ওই দুই দল একই পইচার এপিঠ-ওপিঠ। তাঁর কথাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি-র ভোট ভাঙেনি। এর পরিবর্তে এআইইউডিএফ-এর ভোট কংগ্ৰেসের ঝুলিতে গেছে। উল্লেখ্য,জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নবায়ন প্ৰক্ৰিয়া নিয়ে কংগ্ৰেসের দিকে ঢিল ছুড়ে তিনি বলেন,এনআরসি-র কাজ কংগ্ৰেস ঠিকঠাক করতে পারেনি। এরজন্য বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে অসমে ৪০ লক্ষ খসড়া ছুটকে দলের রাষ্ট্ৰীয় সভাপতি ‘ঘুসপেটিয়া’ বলে মন্তব্য করার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা প্ৰতিক্ৰিয়া জানতে চান। কিন্তু বিষয়টি কৌশলগতভাবে অন্যদিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করলেন তিনি।