শতাব্দী পুরনো গুয়াহাটির উগ্ৰতারা মন্দিরে চুরি,তদন্তে নেমেছে পুলিশ

গুয়াহাটিঃ মহানগরীর উজানবাজার স্থিত উগ্ৰতারা দেবালয় থেকে চোরের দল শুক্ৰবার শেষ রাতে হানা দিয়ে ভগবতীর অষ্টধাতুর বিগ্ৰহ,সোনা-রুপোর অলঙ্কার ও নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে যায়। আহোম যুগে নির্মিত এই মন্দিরে অষ্টধাতুর(আটটি মূল্যবান ধাতু)বিগ্ৰহটি দিয়েছিলেন আহোম রাজ গদাধর সিংহ। পুলিশের মতে,শেষ রাত ৩টে থেকে ৪টের মধ্যে মন্দিরে চুরির ঘটনাটি ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়ালের নির্দেশে গৃহ এবং রাজনৈতিক বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ ইতিমধ্যেই মন্দির পরিদর্শন করে অপরাধীকে পাকড়াও করার পাশাপাশি বিগ্ৰহ উদ্ধারে জোর অভিযান চালাতে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। উগ্ৰতারা মন্দিরে চুরির ঘটনায় গুয়াহাটি এবং ওই এলাকার মানুষ প্ৰচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। কারণ এই মন্দিরের সঙ্গে তাঁদের আবেগ,বিশ্বাস ও অনুভূতি জড়িয়ে রয়েছে। অনেকে তো কেঁদেই ফেলেন।
সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৫১টি শক্তিপীঠের একটি হচ্ছে উগ্ৰতারা শক্তিপীঠ। এই প্ৰাচীন মন্দিরের সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের মতে,১০৪৪ এডি থেকে এই মন্দিরে মায়ের পুজো চলে আসছে। লতাশিল থানা থেকে মাত্ৰ দুশো মিটার দূরে থাকা এই মন্দিরে চুরির ঘটনা রীতিমতো ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশকে। দেবালয় পরিচালন কমিটির একজন সদস্য কৈলাশ শর্মা সাংবাদিকদের বলেছেন,‘শতাব্দী পুরনো মন্দিরের বিগ্ৰহ চুরি যাওয়ায় আমরা খুবই দুঃখ পেয়েছি। অলঙ্কার ও টাকা চুরি যাওয়া নিয়ে আমরা ততটা ভাবছি না,ভাবছি ওই বিগ্ৰহ নিয়ে। কারণ এই বিগ্ৰহের মূল্য নির্ধারণ করা যাবে না,মানুষের হৃদয় মনের সঙ্গে সম্পর্ক এই বিগ্ৰহের। আমরা চাই পুলিশ যত শীঘ্ৰ সম্ভব চুরি যাওয়া বিগ্ৰহটি উদ্ধার করুক’।
মন্দিরের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে জানতে চাওয়া হলে শর্মা বলেন,মায়ের গলার নেকলেসে ৪ থেকে ৫ কেজির মতো সোনা রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য মূল্যবান গয়নাও ছিল। ‘দান পাত্ৰটি গত পুজোর পর থেকে খোলা হয়নি। তাই টাকার পরিমাণও যথেষ্টই হবে। আমরা চাইছি যেকোনও মূল্যে বিগ্ৰহ ফিরে পেতে। কে বা কারা বিগ্ৰহ চুরি করেছে তাদের সেটা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। মন্দিরের পাহারায় একজন নিরাপত্তা রক্ষী যথেষ্ট নয়,আমরা আরও একজন নিরাপত্তারক্ষী চাই’-বলেন তিনি।
গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার প্ৰদীপ শালই ইতিমধ্যেই মন্দির পরিদর্শন করে বলেছেন,তদন্ত চলছে। ‘প্ৰয়োজন হলে আমরা একটা যৌথ তদন্তকারী দল গঠন করবো। স্লিফার কুকুরকে কাজে লাগানো হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গেছে চোরের দলে মোট ৪ জন সদস্য ছিল।