হিন্দু-বাংলাদেশি সুরক্ষায় কেন্দ্ৰের নোটিফিকেশন বাতিল চেয়ে আদালতে বিরোধী মঞ্চ

হিন্দু বাংলাদেশিদের স্বার্থে কেন্দ্ৰ সরকারের জারি করা নির্দেশ বাতিলের জন্য সুপ্ৰিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন বিরোধী মঞ্চ। বাংলাদেশ সহ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের বলি হয়ে ভারতে আসা হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্ৰিস্টান,জৈন ও পার্শি ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য কেন্দ্ৰ সরকার বিগত ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ওই নির্দেশ তথা নোটিফিকেশন জারি করেছিল। পরে এই তিন রাষ্ট্ৰের ছয়টি ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব প্ৰদানের উদ্দেশ্যে সংসদে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী বিল পেশ করেছিল কেন্দ্ৰ সরকার। এই বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটির বিবেচনাধীন থাকার সময় সরকারের নোটিফিকেশনটির বিরুদ্ধে সুপ্ৰিম কোর্টে আবেদন জমা দিয়েছে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন মঞ্চ নামের সংগঠন।
মঞ্চের সভাপতি ড.হীরেন গোঁহাই ছাড়াও মনোজিৎ মহন্ত ও হরেকৃষ্ণ ডেকার স্বাক্ষরিত ওই আবেদন তিন রাষ্ট্ৰ থেকে ভারতে আসা ছয়টি ধর্মের মানুষের ক্ষেত্ৰে কেন্দ্ৰের জারি করা নির্দেশ ও নোটিফিকেশনকে প্ৰত্যাহ্বান জানিয়ে তা খারিজ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্ৰতিবেশি তিন রাষ্ট্ৰে ধর্মীয় নির্যাতনের বলি হয়ে ভারতে আসা ছয়টি ধর্মাবলম্বী মানুষের সুবিধার্থে কেন্দ্ৰ সরকার।
২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিদেশি ও তাদের পাসপোর্টের নিয়মের ক্ষেত্ৰে সংশোধন করে দুটি নির্দেশ জারি করেছিল। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর কেন্দ্ৰের স্বরাষ্ট্ৰ মন্ত্ৰণালয় এসব ধর্মীয় মানুষের স্বার্থে আরেকটি বিশেষ নির্দেশ জারি করেছিল।
মঞ্চের পক্ষে থেকে সুপ্ৰিম কোর্টে দাখিল করা আবেদনে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্য করে কোনও ধরনের নিয়ম বা আইন প্ৰয়োগের চেষ্টাকে অসাংবিধানিক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সেসঙ্গে সাতটি রাজ্যের জেলা কর্তৃপক্ষকে কিভাবে কেন্দ্ৰ সরকার ছয়টি বিশেষ ধর্মের মানুষের নাগরিকত্বের আবেদনকে বিবেচনার জন্য কর্তৃত্ব প্ৰদান করেছে,সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য,স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰকের জারি করা ২০১৫ সালের পাসপোর্ট নিয়ম সংশোধনের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট তিনটি রাষ্ট্ৰের ছয়টি ধর্মাবলম্বীদের ভারতে প্ৰবেশ করার ক্ষেত্ৰে পাসপোর্টের প্ৰয়োজন থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছিল। তবে তার জন্য তাদেরকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে প্ৰবেশের সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ২০১৫ সালের বিদেশি আইন সংশোধনী বিলের মাধ্যমে তাদেরকে ১৯৪৬ সালের বিদেশি আইন থেকে রেহাই দেওয়ার প্ৰস্তাব করা হয়। এদিকে,২০১৬ সালের নির্দেশের দ্বারা ভারতের নাগরিকত্ব প্ৰদানের জন্য ছত্তিশগড়,গুজরাট,মধ্যপ্ৰদেশ,মহারাষ্ট্ৰ,রাজস্থান,উত্তরপ্ৰদেশ ও দিল্লির একাংশ কর্তৃপক্ষকে কর্তৃত্ব করা হয়েছিল।
নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী বিরোধী মঞ্চ তাদের আবেদনে এধরনের নির্দেশনার ফলে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে উল্লিখিত অবৈধ প্ৰব্ৰজনকারীর সংজ্ঞাকে অবজ্ঞা করার কথা উল্লেখ করেছে। এই নির্দেশগুলো খারিজ করার পাশাপাশি জাতীয় অনুপ্ৰবেশকারী নীতি ও জাতীয় শরণার্থী নীতি তৈরির জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠনের জন্য সুপ্ৰিম কোর্টের কাছে মঞ্চ আবেদন জানিয়েছে।