গুয়াহাটিঃ ২০১৬ সালে রাজ্যের উদ্যোগ মন্ত্ৰীর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার অব্যবহিত পরই চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারি এইচপিসি-র নগাঁও ও কাছাড় কাগজ কল দুটি পুনরুজ্জীবিত করার প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু গত প্ৰায় সাড়ে তিন বছরে এই পুরো বিষয়টি এক নাটকীয় মোড় নেয়। হিন্দুস্তান পেপার কর্পোরেশনের(এইচপিসি)দুটো কাগজ কলের প্ৰায় ৯০০ জন কর্মীর মাথার ওপরের ছাদ টুকু বাঁচিয়ে রাখতেও মন্ত্ৰী ব্যর্থ হয়েছেন। লিকুইডেটর কুলদীপ ভার্মার পক্ষ নিয়ে কর্তৃপক্ষ এইচপিসি কাগজ কলের প্ৰায় ৯০০ জন কর্মীকে ২০২০-র ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদের কোয়ার্টার খালি করার নোটিশ ইস্যু করেছেন। নগাঁও এবং কাছাড় কাগজ কলের স্বীকৃত ইউনিয়নের(জেএসিআরইউএনসিপিএম)যৌথ কার্যকরী কমিটির সভাপতি মানবেন্দ্ৰ চক্ৰবর্তী বলেছেন,‘যতদিন না আমাদের ৩৬ মাসের বকেয়া বেতন এবং অন্যান্য প্ৰাপ্যাদি মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে ততদিন আমরা আমাদের কোয়ার্টার ফাঁকা করবো না। সরকার যদি কোয়ার্টার খালি করার জন্য বলপ্ৰয়োগ করে তাহলে আমাদের লাশের ওপর দিতে তাদের তা করতে হবে’।
অসমের দুটো কাগজ কল পুনরুজ্জীবিত করার নামে বিষয়টিকে যেভাবে নাটকীয় মোড় দেওয়া হয়েছে যে সম্পর্কে বক্তব্য রেখে চক্ৰবর্তী বলেন,‘রাজ্য সরকার প্ৰথমে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল দুটো কাগজ কলই পুনরুজ্জীবিত করা হবে। এরপর তারা আশ্বাস দেয় কাগজ কলের কর্মীদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য প্ৰাপ্যাদি মিটিয়ে দেওয়ার। কিন্তু কোনও একটি আশ্বাস পূরণ করার পরিবর্তে এখন তারা চাইছে আমাদের মাথার ওপর থেকে ছাদটুকুও কেড়ে নিতে। এইচপিসি-র প্ৰায় ৫০০ জন কর্মী ও তাঁদের পরিবার রয়েছেন জাগিরোড কাগজ কলের কোয়ার্টারে। অন্যদিকে কাছাড় জেলার পাঁচ গ্ৰামের কোয়ার্টারগুলিতে রয়েছেন এধরনের আরও প্ৰায় ৩৫০টি পরিবার।
এনসিএলটি(ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্ৰাইব্যুনাল)২০১৯-এর ২৫ নভেম্বর এইচপিসি-র অসমে থাকা দুটো মিল সহ সমস্ত সম্পত্তি ও সরঞ্জাম নিলাম করার নির্দেশ দেওয়ায় কাগজ কল দুটো বর্তমানের এই দুর্বিষহ অবস্থায় এসে দাঁড়ায়। তবে ওই নির্দেশে সমস্ত দায়বদ্ধতা মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছিল। এদিকে কুলদীপ ভার্মা ৯৮ লক্ষ টাকা বকেয়া না পাওয়ায় এনসিএলটি-তে মামলা দায়ের করেন।
চক্ৰবর্তী বলেন,ভার্মার মাত্ৰ ৯৮ লক্ষ টাকা যখন দেওয়া সম্ভব হয়নি সেখানে ৫ হাজার কোটি টাকার এইচপিসি সম্পদের ওপর হাতুড়ি চালানোর প্ৰয়াস চলছে। এটা সত্যিই অদ্ভুত-বলেন চক্ৰবর্তী।
এব্যাপারে সমান্তরলভাবে কেরলের উদাহরণ তুলে ধরে চক্ৰবর্তী বলেন,এনসিএলটি এইচপিসি-র পরিপূরক সংস্থা হিন্দুস্তান নিউজপ্ৰিন্ট নিলাম করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু কেরল সরকার ২৫ কোটি টাকা সাহায্য দিয়ে কোম্পানিটি পুনরুজ্জীবিত করতে এগিয়ে আসে। কেরল সরকার কোম্পানিটি চালানোর দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেয়। কেরল সরকার যদি ২৫ কোটি টাকা এইচপিসিকে ভর্তুকি দিতে পারে তাহলে দিশপুর কেন মাত্ৰ ৯৮ লক্ষ টাকা দিতে পারছে না? দিশপুর ইচ্ছে করলে দুটো কলকেই ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ রং-তুলি দিয়ে ছবি এঁকে ও কবিতার মাধ্যমে ক্যার বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ গুয়াহাটিতে
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Christmas celebrated in Kokrajhar