গুয়াহাটিঃ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর্যাপ্ত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও অসমে বিদ্যুৎ সংকট লাগাতার সমস্যা হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে দিশপুরের সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও দূরদৃষ্টির যে অভাব রয়েছে তা অস্বীকার করা যাবে না।
বর্তমানে রাজ্যে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা হচ্ছে ১,৮৫০ মেগাওয়াট। অথচ সেই জায়গায় রাজ্যের হাতে বিদ্যুৎ রয়েছে মাত্ৰ ১,৩০০ মেগাওয়াট। ২০১৭-১৮ সালে রাজ্যে পিক আওয়ারে ১,৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্ৰয়োজন ছিল। কিন্তু রাজ্য ওই সময় ১,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কোনও ক্ৰমে সংগ্ৰহ করতে পেরেছিল। সাম্প্ৰতিক বছরগুলোতে রাজ্যে বার্ষিক বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিমাণ হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ মেগাওয়াটের মধ্যে। অবস্থা দিনকে দিন খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছে। এরকারণ হচ্ছে,রাজ্য নিজস্ব সূত্ৰ থেকে ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সমর্থ নয়। রাজ্যকে এখন বাইরের সূত্ৰ থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কেনার ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। ২০২২-২৩ সালে রাজ্যে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা গিয়ে দাঁড়াবে ৩,০০০ মেগাওয়াটে। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্ৰশ্ন হচ্ছে অসম বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি(এপিডিসিএল)এই বিদ্যুৎ ঘাটতি থেকে পার পেতে সক্ষম হবে কিনা।
এপিডিসিএল-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাকেশ আগরওয়াল দ্য সেন্টিনেলকে বলেন,২০২২-২৩ সাল নাগাদ রাজ্যের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে তার কোম্পানি ১,৪২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে পড়শি দেশ ভুটান সহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ইতিমধ্যেই চুক্তি করেছে। তিনি বলেন,রাজ্য আশা করছে বিভিন্ন প্ৰকল্প থেকে পাইপলাইনে প্ৰায় ৬০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তাছাড়া সৌর শক্তি সহ বিভিন্ন রিনিউয়েবল এনার্জি থেকে ১৭ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বঙাইগাঁও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্ৰটিও পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে।
আগরওয়াল আরও বলেন,আগামি দিনে বিদ্যুৎ সংকটের সমস্যা অনেকটা হ্ৰাস করা সম্ভব হবে। কারণ এপিডিসিএল বর্তমানে বাইরের সূত্ৰ থেকে বিদ্যুৎ কেনার মতো অবস্থায় রয়েছে। ‘কিছু কিছু ক্ষেত্ৰে রাজ্যের নিজস্ব সূত্ৰে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ পড়ে তার তুলনায় বাইরে থেকে বিদ্যুৎ কিনলে খরচ কিছুটা কমই হবে’। তিনি বলেন এপিডিসিএল বাইরের সূত্ৰ থেকে প্ৰতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৭ থেকে ৭.৫০ টাকা দূরে কিনছে এবং ওই বিদ্যুৎ একইদরে বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদেরও সরবরাহ করছে। আগরওয়ালের মতে,এপিডিসিএল-এর ৯৯.৫ শতাংশ গ্ৰাহক যেহেতু ডোমেস্টিক বা ঘরোয়া সেই হেতু একটা নির্দিষ্ট সীমার বাইরে বিদ্যুতের মূল বৃদ্ধি করা যায় না।
এপিডিসিএল কেন্দ্ৰীয় সরকারের সৌভাগ্য স্কিমের অধীনে ১৭ লাখ অতিরিক্ত গ্ৰাহককে বিদ্যুৎ দিতে সফল হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰীর স্কিমের অধীনেও এপিডিসিএল ৫২ লক্ষ গৃহস্থকে বিনামূল্যে ৪টি করে এলইডি বাল্ব বণ্টন করেছে। আরও ১০ লক্ষ গৃহস্থ এলইডি বাল্ব পাবেন।