অসম ক্ৰমশ মানুষ পাচারের মৃগয়া ক্ষেত্ৰ হয়ে উঠছে

অসম ক্ৰমশ মানুষ পাচারের মৃগয়া ক্ষেত্ৰ হয়ে উঠছে

গুয়াহাটিঃ অসম ক্ৰমশ মানুষ পাচারকারীদের মৃগয়া ক্ষেত্ৰ হয়ে উঠছে। স্থানীয় এই সব মানুষ পাচারকারী চক্ৰের আন্তঃরাজ্য এবং আন্তর্জাতিক স্তরেও অশুভ আঁতাত রয়েছে। মানুষ পাচারের এই লাভজনক ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে পাচারকারী অসাধু চক্ৰগুলি তাদের কাজ কর্মের কৌশল প্ৰতিনিয়ত পাল্টাচ্ছে পুলিশ ও প্ৰশাসনের চোখে ধুলো দিতে। আর্থিক দিক থেকে দুর্বল পরিবারের ছেলেমেয়েদেরই তারা নিশানা করছে। টোপ দিচ্ছে ভাল চাকরি পাইয়ে দেওয়ার। অসাধু মানুষ পাচারকারী চক্ৰগুলি সোশিয়াল মিডিয়াকেই তাদের কাজ হাসিল করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। মানুষ পাচারকারী চক্ৰগুলির পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ৮০ শতাংশ মহিলা ও শিশু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্ৰস্ত হচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্ৰে এই চক্ৰগুলি মহিলাদেরই টার্গেট করছে। তাছাড়াও ২০ বছরেরও কম বয়েসি ছেলে-মেয়েরা এই সব দুষ্ট চক্ৰের প্ৰলোভনের শিকার হচ্ছে।

উত্তর পূর্বাঞ্চলে মানুষ পাচারকারী চক্ৰগুলি রঙিয়া এবং গুয়াহাটিকেই তাদের ট্ৰ্যানজিট রুট হিসেবে বেশি ব্যবহার করছে। মানুষ পাচারের ক্ষেত্ৰে রাজ্যের স্পর্শকাতর জেলাগুলির তালিকায় রয়েছে শোণিতপুর,লখিমপুর,মরিগাঁও,কোকরাঝাড়,ধুবড়ি ও কার্বি আংলং। অসম পুলিশ সূত্ৰে একথা জানানো হয়েছে। সূত্ৰটি দ্য সেন্টিনেলকে জানিয়েছে যে মানুষ পাচারের অত্যন্ত লাভজনক এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পাচারকারীদের আন্তঃরাজ্যগুলির চক্ৰের সঙ্গেও একটা সংযোগ রয়েছে। এরা এই অঞ্চল থেকে মানুষ পাচার করে হরিয়ানা,রাজস্থান,দিল্লি,শিলিগুড়ি এবং কেরলে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও অরুণাচল প্ৰদেশে মানুষ পাচারের রেকর্ড রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। এমনকি পাচারকারী এই অঞ্চল থেকে মহিলা ও শিশুদের তুলে নিয়ে নেপালে পাচার করারও রিপোর্ট রয়েছে। উপসাগরীয় দেশ সহ দুবাই,শ্ৰীলংকাতে মানুষ পাচার করছে এই সব ব্যক্তিরা। শ্ৰীলংকা এবং দুবাইয়েই মানুষ পাচারের রেকর্ড পাওয়া গিয়েছে।

২০১৫ সালে মানুষ পাচারের ঘটনায় দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থানে ছিল অসম। সেবছর মানব পাচারের ১,৪৯০টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল এখানে। তবে পরবর্তী বছরগুলিতে রাজ্য থেকে এজাতীয় মানুষ পাচারের ঘটনা অনেকটাই হ্ৰাস পেতে দেখা গেছে। স্থানীয় এজেন্টরাও এসব পাচারকারীদের পরোক্ষ মদত দিচ্ছে। এজাতীয় অনেক মামলা এরাজ্যে ঘটেছে,যা নথিভুক্ত হয়নি।

পুলিশ ২০১৬ সালে এজাতীয় ৯১টি মামলা নথিভুক্ত করেছিল,২০১৭ সালে ১৭৫ মানুষ পাচারের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। এরপর ২০১৮ তে ২৩৮টি এবং ২০১৯ নথিভুক্ত হয় ৮৭টি মামলা।

২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত শোণিতপুর জেলায় রেকর্ড সংখ্যক ৫টি এজাতীয় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। এই সব পাচারের ঘটনায় অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। ওই সময়ে লখিমপুরে ৫৫টি,মরিগাঁওয়ে ৫৪ এবং কোকরাঝাড়ে ৪৬টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল। পুরুষ মানুষদের বেশির ভাগকেই অন্যত্ৰ পাচার করা হয়েছে শ্ৰমিকের কাজ করার জন্য। আর মহিলা পাচারের উদ্দেশ্য হচ্ছে বলপূর্বক বিবাহ,পতিতাবৃত্তি এবং গেরস্থালির কাজে জড়ানো।

অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ প্ৰকাশিত হলো পূর্ণাঙ্গ এনআরসি-র তালিকা

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Gang of thieves steal Wagon R car from school premises in Tinsukia | The Sentinel News | Assam News

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com