মোট চাহিদার মাত্ৰ এক পঞ্চমাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে রাজ্য

মোট চাহিদার মাত্ৰ এক পঞ্চমাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে রাজ্য

গুয়াহাটিঃ বিদ্যুতের বেহাল অবস্থায় অসমকে শিল্পোন্নত অঞ্চলে উন্নীত করার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা হয়তো ঝুঁকির মুখেই থেকে যাবে। বিশ্বাস করুন বা না করুন,রাজ্য মোট বিদ্যুৎ চাহিদার মাত্ৰ এক পঞ্চমাংশের একটু বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।

অসম বিদ্যুৎ বিতরণ নিগম লিমিটেডের(এপিডিসিএল)আনুমানিক ৫০ লক্ষ গ্ৰাহক রয়েছে। এর মধ্যে শহরাঞ্চলের গ্ৰাহক ১০ লক্ষ এবং ৪০ লক্ষ গ্ৰামাঞ্চলের। রাজ্যে বিদ্যুতের হাল খুবই শোচনীয়। প্ৰতি বছরই রাজ্যে পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এপিডিসিএল-এর সূত্ৰ মতে ২০১৯-২০ সালের মধ্যে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৫ মেগাওয়াটে দাঁড়াতে পারে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৬ হাজার মেগাওয়াটে।

সরকারি রেকর্ড মতে,রাজ্যে ২০১৩-১৪ সালে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১,৩২৯ মেগাওয়াট। ওই সময় রাজ্যের হাতে বিদ্যুৎ ছিল ১,২২০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ পিক আওয়ারে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১০৯ মেগাওয়াট। ২০১৪-১৫-তে রাজ্যে বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিমাণ আরও তলানিতে নামে। ওই সময় রাজ্যের হাতে ১,২৫৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থাকলেও চাহিদা বৃদ্ধি পায় ১,৪২৮ মেগাওয়াটে। সেসময় পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৬৭ মেগাওয়াট। ২০১৫-১৬ সালে রাজ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। রাজ্যের হাতে ১,১৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থাকলেও চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ১,৫২৬ মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। অর্থাৎ পিক আওয়ারে ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৩২৮ মেগাওয়াট। ২০১৬-১৭ সালে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়ে পড়ে। ওই সময় ১,১০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছিল রাজ্যে,কিন্তু চাহিদা বৃদ্ধি পায় ১,৬১২ মেগাওয়াটে। অর্থাৎ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০৮ মেগাওয়াট। ২০১৭-১৮ তে পরিস্থিতির একটু উন্নতি হয়। ওই সময় পিক আওয়ারে ১,৭৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। কিন্তু রাজ্যের হাতে বিদ্যুৎ ছিল ১,৩৫১ মেগাওয়াট। ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১৯ মেগাওয়াটে।

এপিডিসিএল-এর মতে ২০১৮-১৯ সালে রাজ্যের হাতে থাকা ১,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের পরিবর্তে চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১,৮৫০ মেগাওয়াটে। এক্ষেত্ৰে পিক আওয়ারে ঘাটতির পরিমাণ ৪৫০ মেগাওয়াট।

অসম বিদ্যুৎ উৎপাদন নিগম লিমিটেড(এপিজিসিএল)নিজস্বভাবে প্ৰায় ৩২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এপিডিসিএলকে বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা বিশেষ করে নিপকো,এনটিসিপি,এনএইচপিসি এবং অন্যান্য বেসরকারি সেক্টর থেকে চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ সংগ্ৰহ করতে হচ্ছে। অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্ৰগুলি নির্মীয়মাণ অবস্থায় রয়েছে।

রাজ্যে গ্ৰাহকের সংখ্যা বেড়ে চলায় বিদ্যুতের চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এভাবে চললে রাজ্য কখনোই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে না।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com