গুয়াহাটিঃ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল শুক্ৰবার এখানে রাজস্ব এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে বন্যা বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোতে উঁচু মঞ্চ এবং বিল্ডিং নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। বন্যার সময় গ্ৰামগঞ্জ এবং প্ৰত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ যাতে ওই সব উঁচু মঞ্চ ও বাড়িতে আশ্ৰয় নিতে পারেন তার জন্যই মুখ্যমন্ত্ৰীর এই নির্দেশ।
জনতা ভবনের কনফারেন্স হলে গতকাল বিভাগগুলোর কাজ কর্ম পর্যালোচনা করে মুখ্যমন্ত্ৰী সুখা মরশুমেও এই বিল্ডিংগুলি জনগণের ব্যবহারে যাতে কাজে লাগানো যায়,তা সুনিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন। পাইলট প্ৰকল্পের ভিত্তিতে এই সব উঁচু মঞ্চ ও বাড়ি কোথায় কোথায় নির্মাণ করতে হবে তার স্থানও দুদিনের এই বৈঠকে ঠিক করা হয়েছে। মাজুলি,লখিমপুর,ধেমাজি,বরপেটা,গহপুর এবং বরাক উপত্যকায় এই সব উঁচু মঞ্চ ও বাড়ি নির্মাণের স্থান হিসেবে বাছাই করা হয়েছে।
দুদিনের এই বৈঠকে চলতি বছরের প্ৰলয় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি,ত্ৰাণ এবং পুনর্বাসন ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। চলতি বছরের বন্যায় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে যে সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেগুলো সারিয়ে তুলতে কি কি পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে রাজস্ব বিভাগ সে সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্ৰীকে অবহিত করেছে। মুখ্যমন্ত্ৰী চলতি বছর থেকে শুরু হওয়া স্কিমের মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্ৰস্ত পরিবারগুলোর সাহায্যে পরিবার পিছু ৩,৮০০ টাকা করে রিলিজ করার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতেও বিভাগটিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চলতি বছরে এ রাজ্যে বন্যা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। রাজ্যের ৩৩টি জেলার মধ্যে অধিকাংশ বন্যার জলে তলিয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্ৰস্ত জেলাগুলির তালিকায় ছিল ধেমাজি,লখিমপুর,দরং,বরপেটা,নলবাড়ি,চিরাং,বঙাইগাঁও,কোকরাঝাড়,ধুবড়ি,দক্ষিণ শালমারা,গোয়ালপাড়া,কামরূপ,কামরূপ(মেট্ৰো),মরিগাঁও,নগাঁও,যোরহাট,মাজুলি ও কাছাড় ইত্যাদি। বন্যা বহু মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি জলে তলিয়ে যায়। দুর্গত মানুষ পথের পাশে উঁচু স্থানে খোলা আকাশের নিচে রাতের পর রাত কাটান। জেলা প্ৰশাসনগুলি বিভিন্ন স্থানে ত্ৰাণ শিবির খোলার পর দুর্গত মানুষ সেগুলোতে আশ্ৰয় নেন। রাজ্য সরকার বানবাসীদের ত্ৰাণ সাহা্য্যের ব্যবস্থা করে। সর্বনাশা বন্যায় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে যায়। পথঘাট ভেঙে সৃষ্টি হয় খানাখন্দের।
ব্ৰহ্মপুত্ৰের কূল ছাপানো জলে বিশ্বখ্যাত কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের বিশাল অংশ তলিয়ে যায়। বানের জলে ভেসে যায় উদ্যানের বহু জীবজন্তু। তবে কাজিরঙায় উদ্যানের ভিতর কয়েকটি উঁচু স্থান নির্মাণ করায় বন্য জীবজন্তুরা প্ৰাণ বাঁচানোর তাগিদে সেগুলোতে গিয়ে আশ্ৰয় নিয়েছিল। বানভাসীদের উদ্ধারে এনডিআরএফ ও এসডিআরএফকে এমনকি সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো হয়েছিল।
এবার আর্থিক সাহায্য নিয়ে রাজ্যের বন্যাপীড়িত মানুষের পাশে ত্ৰাসে দাঁড়িয়েছেন বলিউডের তারকা অমিতাভ বচ্চন,অক্ষয় কুমার রাজ্যের অভিনেতা যতীন বরা এবং হিমা দাস সহ বেশ কজন ক্ৰীড়াবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। এছাড়াও কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰীরাও দুর্যোগের সময়ে অসমের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি রূপায়ণে এনইসিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান সর্বার
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: State Health Minister donates blood at GMCH for PM Modi's birthday week, seva saptah