চার চারটি কম্পন উত্তর পুবের মানুষের মধ্যে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে

চার চারটি কম্পন উত্তর পুবের মানুষের মধ্যে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে

গুয়াহাটিঃ উত্তর পূর্বাঞ্চল গত শুক্ৰ ও শনিবার উপর্যুপরি চারবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মনে আতঙ্ক দানা বাঁধে। সাধারণ মানুষ এবং বিশেষজ্ঞদেরদের মনে শঙ্কা,উত্তর পূর্বাঞ্চল কি তাহলে বড় ধরনের ভূমিকম্পের মুখে পড়তে যাচ্ছে? শুক্ৰবার ও শনিবার সকালে চার চারবার ভূমিকম্পের ঝটকায় কেঁপে ওঠে অরুণাচল প্ৰদেশ। অসম সহ উত্তর পূর্বের অন্যান্য রাজ্যেও কম্পন অনুভূত হয়। চার চারটি কম্পনের তীব্ৰতা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৫,৫.৬,৩.৮ এবং ৪.৯। চারটি কম্পনের উৎস স্থল ছিল অরুণাচল প্ৰদেশ।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিশেষজ্ঞ মানিক কর বলেন,চার চারবার কম্পন থেকে এটা আঁচ করা যাচ্ছে উত্তর পূর্বাঞ্চলে যেকোনও সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। এটা তারই লক্ষণ। তিনি বলেন,১৯৫০ সালের ১৩ ফেব্ৰুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্ৰুয়ারি পর্যন্ত উপর্যুপরি কম্পন অনুভূত হয়েছিল। ওই একই বছর ১৫ আগস্টে এই অঞ্চলে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছিল,রিখটার স্কেলে যার তীব্ৰতা ছিল ৮.৬।

নগাঁও কলেজের ভূগোল বিষয়ের অবসরপ্ৰাপ্ত অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক তথা তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসার্সের ভিজিটিং প্ৰফেসর কর বলেন,‘মানুষকে এখন আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সাধারনতা এবং সচেতনতার অভাবেই এজাতীয় প্ৰাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে প্ৰাণ হারাতে হয়’-বলেন তিনি।

অন্যদিকে,আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন ফ্যাকাল্টি বলেছেন,‘উত্তর পূর্বাঞ্চলে নিম্নমানের ভূকম্পন স্বাভাবিক যেহেতু গোটা অঞ্চলটি ভূমিকম্প প্ৰবণ জোন-ফাইভে পড়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে কম্পনের এই ঝটকা স্বাভাবিকই বলা যেতে পারে। তবে এই কম্পন যদি নির্দিষ্ট কোনও স্থানে বারবার অনুভূত হয় এবং কম্পনের উৎস স্থল যদি একটা নির্দিষ্ট স্থানে থাকে তাহলে আমাদের এর যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে হবে’-বলেন এই শিক্ষক।

গুয়াহাটি আইআইটি-র একজন শিক্ষক বলেন,আইআইটি রুরকির বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের আগাম সতর্ক সঙ্কেতের একটি পন্থা ইতিমধ্যেই উদ্ভাবন করেছেন। ওই পন্থা বা ওয়ার্নিং সিস্টেমের মাধ্যমে কম্পন শুরুর এক মিনিট আগে মানুষকে সতর্ক করা যাবে। এই সিস্টেম উত্তরাখণ্ডের কিছু এলাকায় ইতিমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে-জানান তিনি।

ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে বর্তমানে যে সব টেকনিক রয়েছে সেগুলি ততটা কার্যকর নয়। স্ট্যাটেসটিক্যাল মেথড ব্যবহার করে মানুষ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানার চেষ্টা করে থাকেন। তবে এগুলোর কোনটাই যথার্থ বলা যাবে না-উল্লেখ করেন তিনি। ভূমিকম্পের আগাম সঙ্কেত দেওয়ার যে ব্যবস্থা রয়েছে তা মানুষকে প্ৰয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্ৰহণে কিছুটা সময় দেবে। তাই উত্তর পূর্বাঞ্চলের সরকারগুলির এই অঞ্চলের কম্পন প্ৰবণতার প্ৰতি লক্ষ্য রেখে রুরকি আইআইটির সঙ্গে সংযোগ রেখে চলা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com