অর্থাভাব অসমের পর্যটন স্থলগুলির বিকাশে অন্তরায় সৃষ্টি করছে

অর্থাভাব অসমের পর্যটন স্থলগুলির বিকাশে অন্তরায় সৃষ্টি করছে

গুয়াহাটিঃ আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া(এএসআই)উত্তর পূর্বাঞ্চলে কেন্দ্ৰীয় সরকারের দ্বারা সুরক্ষিত ৮০টি সৌধ ও ঐতিহাসিক স্থানের সংরক্ষণ ও পরিবেশ উন্নয়নের কাজ কর্ম দেখাশোনা করছে। এই সব সৌধ ও ঐতিহাসিক স্থানের ৫৫টি অসমের,মেঘালয় ও ত্ৰিপুরার ৮টি করে,নাগাল্যান্ডের ৪টি,৩টি অরুণাচল প্ৰদেশের এবং মিজোরাম ও মণিপুরের ১টি করে। আর্থিক সংকট এই সব ঐতিহাসিক সৌধ ও স্থানগুলিকে পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্ৰ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্ৰে প্ৰতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে।

অসমের শিবসাগর জেলায় আহোম যুগের অনেকগুলো সৌধ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কারেং ঘর,রংঘর ইত্যাদি। বামুনি পাহাড়ে থাকা মন্দির,সিংরি হিল এবং শোণিতপুর জেলার দহ পার্বতীয়া,ডিমাপুরের দুর্গ ও মনোলিথস,বৌদ্ধ ধর্মীয় প্ৰাচীন পরম্পরা এবং পাথরে খোদাই করা ভাস্কর্য ইত্যাদি রয়েছে। কিন্তু অর্থ সংকটের জন্য এই সব ইতিহাস প্ৰসিদ্ধ প্ৰত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি এবং ত্ৰিপুরার মন্দির সমূহ পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্ৰ হিসেবে তুলে ধরার ক্ষেত্ৰে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্ৰত্নতাত্ত্বিক বিভাগের গুয়াহাটি সার্কল অসমের ৫৫টি,মণিপুরের একটির দেখভাল করছে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্ৰাচীন কীর্তিচিহ্নগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে প্ৰত্নতাত্ত্বিক বিভাগের(এএসআই)আইজল সার্কল।

গুয়াহাটি সার্কলের অধীন ঐতিহাসিক সৌধগুলির দেখভাল সুরক্ষা ও পরিবেশ উন্নয়নে কেন্দ্ৰীয় সরকার ২০১৬-১৭ সালে ২.৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। ২০১৭-১৮ সালে এই খাতে বরাদ্দ করা হয়েছিল ৩.৭৭ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ সালে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৩.১৫ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৯-২০ সালে কেন্দ্ৰীয় বরাদ্দের পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। বিভাগের একটি সূত্ৰ একথা জানিয়েছে।

দ্য সেন্টিনেলের সঙ্গে আলোচনার সময় বিভাগটির একজন পদস্থ আধিকারিক বলেন,প্ৰাচীন কীর্তিচিহ্ন ও সৌধগুলির প্ৰতিটিই সম্ভাবনাময়। কিন্তু টাকার অভাবে এই ঐতিহাসিক সৌধের রক্ষণাবেক্ষণ সুরক্ষা ও এগুলিকে সাজিয়ে তোলার ক্ষেত্ৰে বিভাগটিকে প্ৰচণ্ড রকম বেগ পেতে হচ্ছে। এই সব ঐতিহাসিক স্পটে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজে হাত দেওয়া যাচ্ছে না তহবিল সংকটের জন্য। তাছাড়া এই সব পর্যটন স্থলে যাওয়ার সড়ক যোগা্যোগ ব্যবস্থাও আজ অবধি আশানুরূপ ভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কর্মকর্তাটি বলেন,গুয়াহাটি সার্কলের অধীন কেন্দ্ৰীয় সরকারের দ্বারা সংরক্ষিত ৫৬টি সৌধ ও ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে ৫টি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্ৰ বিন্দু এবং এগুলো থেকে রাজস্বও আসছে। ২০১৬-২০১৯ সালের তিনটি আর্থিক বছরে উজান অসমের শিবসাগর জেলায় আহোম রাজরাজড়াদের আমলে স্থাপিত ৫টি সৌধ সারা বিশ্ব এবং দেশীয় পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে।

ওই তিন বছরে অক্টোবর থেকে মে মাস পর্যন্ত শিবসাগর জেলার চার সৌধে পর্যটক আসার ফলে যে রাজস্ব আয় হয়েছে তা নিচে তুলে ধরা হলো।

২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শিবসাগরের এই সৌধগুলিতে পর্যটক আগমনের ফলে মোট রাজস্ব এসেছে ৮৩,৯০,৪৫৫ টাকা। এই সময়ে পর্যটক আগমনের সংখ্যা ছিল ৪,৭২,৬৬৯ জন। এদের অধিকাংশই কারেংঘর পরিদর্শন করে গেছেন।

রংঘর প্যাভিলিয়নে এই সময়সীমায় পর্যটক এসেছেন ৩,৫৯,১৪৩ জন এবং এর থেকে রাজস্ব সংগ্ৰহ হয়েছে ৬৬,৫৬,০৯৫ টাকা। এই সময়ে গড়গাওয়ে থাকা আহোম রাজাদের প্ৰাসাদ পরিদর্শন করেছেন ১,২৬,০২১ জন। এদের পরিদর্শনের ফলে রাজস্ব আয় হয়েছে ২১,৭৫,০৮৫ টাকা। এই একই সময়ে চরাইদেউয়ের চারটি মৈদাম এবং বিষ্ণু দৌল পরিদর্শনে এসেছিলেন ৩৮,৭৯৪ জন পর্যটক। এর থেকে রাজস্ব সংগ্ৰহ হয়েছে ৬,৭৯,৩৮৫ টাকা। এই সব সৌধ এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলির সবকটিই রয়েছে শিবসাগর জেলায়।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com