গোলাঘাট জেলায় হাতি-মানুষের সংঘাত ক্ৰমেই বাড়ছে

গোলাঘাট জেলায় হাতি-মানুষের সংঘাত ক্ৰমেই বাড়ছে

নুমলিগড়ঃ গোলাঘাট জেলার বিভিন্ন অংশে গত কয়েক বছর ধরে বুনো হাতির পাল রীতিমতো ত্ৰাস সৃষ্টি করে চলেছে। জেলার নুমলিগড় মরঙি এলাকায় হাতি-মানুষের সংঘাত তো ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। বনাঞ্চলে খাদ্যাভাব,হাতিদের থাকার স্থান সঙ্কুচিত হওয়ায় এবং অন্যান্য কিছু সমস্যার মুখে পড়ে হাতির পাল ঘনঘন লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। সম্প্ৰতি নামবর অভয়ারণ্যের কাছে থুরামুখ এলাকায় রাত নামতেই হাতির পাল খাদ্যের খোঁজে ওই গ্ৰাম ও আশপাশ এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়াও ৪নং রংবং,মুরফুলনি এবং বগিজান এলাকায় হাতির দৌরাত্ম্যে গ্ৰামবাসীরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

ফসলের মরশুমে বিশেষ করে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত হাতির পাল প্ৰতি বছরই ওই জমিগুলোতে হানা দিচ্ছে,ফসল নষ্ট করছে। এখন গ্ৰামের মানুষ তাদের জমিতে বীজ ছড়ানোর প্ৰস্তুতি নিচ্ছেন। বুনো হাতির পাল এসময়ও গ্ৰামে ঢুকছে। এটা গ্ৰামবাসীদের কাছে অত্যন্ত উৎকণ্ঠার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অভয়ারণ্যের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় একজন কর্মীর মতে,হাতি-মানুষের সংঘাত বৃদ্ধির প্ৰাথমিক কারণ হচ্ছে,নামবর-দৈগ্ৰাং সংরক্ষিত বনাঞ্চলের এক্তিয়ারে থাকা বনভূমির পরিসর ক্ৰমশ সঙ্কুচিত হয়ে পড়া। উন্নয়নের নামে মানুষ ওই সব এলাকায় বসতি গড়ে তুলতে বন ধ্বংস করছে। সেইসঙ্গে হাতির করিডর পর্যন্ত বন্ধ করে দিচ্ছে। গোলাঘাট-কার্বি আংলঙের পাহাড়ি এলাকায় পাথর ভাঙার প্ল্যান্ট বসিয়ে হাতিদের চলাচলের অধিকাংশ করিডর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বনাঞ্চলে জবরদখলের ফলে হাতিদের থাকার জায়গাও কমে আসছে। এসব কারণেই বুনো হাতিরা খাদ্য ও জলের সন্ধানে সমতলে নেমে আসছে এবং সেইসঙ্গে মানুষের ঘর বাড়ি ভাঙার পাশাপাশি খেতের ফসল নষ্ট করছে।

২০১৭ সালের গণনা অনু্যায়ী,ভারতে সাকুল্যে হাতি রয়েছে ২৭,৩১২টি যা ১৯৮৬ সাল থেকে বিশ্বের মোট হাতির সংখ্যার ৫৫ শতাংশ। অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে অসম হাতির সংখ্যায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। কর্নাটক রয়েছে সর্বোচ্চ স্থানে। ২০০২ সালে অসমের জঙ্গলে হাতি ছিল ৫২৪৬টি। ২০১৭ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫৭১৯টিতে। কিন্তু বনাঞ্চল সঙ্কুচিত হওয়ায় অসমে হাতিরা এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সরকারি তথ্য অনু্যায়ী,২০১৮-১৯ সালে বুনো হাতিরা রাজ্যে ৭৫৪.৮৯ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করেছে। ২০১৭-১৮ সালে ২৬০.৫৩ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করেছিল হাতিরা। হাতির মৃত্যুর সংখ্যাও গত কয়েক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছ। ২০১০ সালে ২৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৭ সালে হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৪৬টিতে দাঁড়ায়। ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় ২৭টি হাতির। ২০১৮-১৯ সালে বুনো হাতির পাল রাজ্যে ২,০৩৪টি ঘর ধ্বংস করেছে।

অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ ওদালগুড়ির গ্ৰামে বুনো হাতির তাণ্ডব

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com