দিল্লির বাজারে সব্জিতে ধাতব পদার্থের মিশ্ৰণ ধরা পড়েছে বিজ্ঞানীদের পরীক্ষায়

নয়াদিল্লিঃ যমুনা ফ্লাডপ্ল্যাইনসে যে সব সব্জি উৎপাদন হয়ে থাকে সেগুলোতে ব্যাপক পরিমাণে বিষাক্ত ধাতব পদার্থের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। ন্যাশনাল এনভায়রনমেণ্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্স ইন্সটিটিউট(এনআইআইটি)এক পরীক্ষার পর একথা উল্লেখ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সব্জি খেলে ক্যান্সার,দুর্বলতা,শরীরে লোহিত কনার উৎপাদন ও গুরুত্বপূর্ণ ইন্দ্ৰিয়গুলির ক্ষতি করা সহ বিভিন্ন রোগে আক্ৰান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এনইউআরআই চলতি বছরের ফেব্ৰুয়ারিতে এই সব্জিগুলো সম্পর্কে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালায়। কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্ৰিয়াল রিসার্সের(সিএসআইআর)অধীনস্থ একটি গবেষণা প্ৰতিষ্ঠান এই এনইইআরআই। সব্জিগুলো পরীক্ষার পর যে তথ্য পাওয়া গেছে তা চলতি বছরের মে মাসে ন্যাশনাল গ্ৰিন ট্ৰাইবুনালে(এনজিটি)পেশ করা হয়েছিল।
এই সব সব্জি আজাদপুর,গাজিপুর এবং ওখলার বিশাল পাইকারি বাজারে বিক্ৰি করা হয় এবং পরে তা সাপ্তাহিক বাজারে বিতরণ করা ছাড়াও খুচরো বিক্ৰেতারা সব্জিগুলো কিনে শহরে বিক্ৰি করে থাকেন। পুব দিল্লির বাজারে বিক্ৰি হওয়া এই সব সব্জিতে বিষাক্ত ধাতব পদার্থ মিশ্ৰিত থাকার বিষয়টি ধরা পড়েছে।
এনআইআইটি-এর বরিষ্ঠ প্ৰধান বিজ্ঞানী এসকে গোয়েল বলেন,‘আমরা সাত ধরনের শীতকালীন সব্জির নমুনা পরীক্ষা করেছি। উসমানপুর,ময়ূর বিহার এবং গীতা কলোনি থেকে এই সব্জিগুলো সংগ্ৰহ করা হয়েছিল। পরীক্ষায় সব্জিগুলোতে ব্যাপকহারে শিষা জাতীয় ধাতব পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যার পরিমাণ গ্ৰহণযোগ্যতার অনেক বেশি। অন্যান্য ধাতব পদার্থ যেমন পারদ,নিকেল ও ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি পাওয়া গেলেও তার পরিমাণ সীমিত।
গোয়েল বলেন,যমুনা ফ্লাডপ্ল্যাইনসের আশেপাশে থাকা কল কারখানা থেকে ধাতব পদার্থ,ব্যাটারি,পেইণ্ট ও পলিথিন ইত্যাদি জলে মিশে সেগুলো খেতের সব্জিতে মিশছে। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অব ইন্ডিয়ার(এফএসএসএআই)সব শাকসব্জিতে ধাতব পদার্থের মিশ্ৰনের সীমা নির্ধারণ করেছে ২.৫ এমজি/কেজি। কিন্তু নমুনা পরীক্ষায় এর পরিমাণ পাওয়া গেছে ২.৮ এমজি/কেজি থেকে ১৩.৮ এমজি/কেজি। শহরের ৭০ শতাংশ দূষিত জল যমুনা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এনজিটি ২০১৫ সালে যমুনা ফ্লাডপ্ল্যাইনসে ভোজ্য শাকসব্জি এবং পশুখাদ্য চাষবাসে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই অঞ্চলে সব্জি উৎপাদন অব্যাহত আছে। যমুনা জিইয়ে অভিযানের মনোজ মিশ্ৰ বলেন,ধাতব পদার্থের বিষক্ৰিয়ায় শিশুদের মানসিক ভারসাম্যের ক্ষতি হতে পারে। তাই কর্তৃপক্ষের ওই অঞ্চলে সব্জি উৎপাদন বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ রসায়নে নোবেল পেলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্ৰ ও ব্ৰিটেনের তিন বিজ্ঞানী