টংলাঃ ‘২০২১-এ অনুষ্ঠেয় রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে অসমের বিজেপি সরকার মানুষের চরম ক্ষোভের মুখোমুখি হতে প্ৰস্তুত হোক। এই মাটির খিলঞ্জিয়াদের স্বার্থে প্ৰতিজন মানুষ গেরুয়া দলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন’। বৃহস্পতিবার টংলা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের খেলার মাঠে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের(ক্যা)বিরুদ্ধে ডাকা এক বিশাল প্ৰতিবাদ সমাবেশে একথা বলেন আসুর(সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা)সভাপতি দীপাঙ্ক কুমার নাথ। আসু এবং অন্যান্য ৩০টি সংগঠন এই প্ৰতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল। ওদালগুড়ি জেলার এই মাঠে গামোছা গলায় জড়িয়ে জমায়েত হন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। নাগরিকত্ব আইন অসমে চাপানোর প্ৰতিবাদে তারা ওই আইন ও সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন।
নাথ বলেন,‘এটা ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছু নয় যেখানে ষষ্ঠ তফশিলিভুক্ত এলাকা এবং ইনার লাইন পারমিট(আইএলপি)থাকা উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যকে এই আইনের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ব্ৰহ্মপুত্ৰ ও বরাক উপত্যকার নীতির বিষয়েও এই আইনে কোনও সুপারিশ করা হয়নি। এরফলে এই আইন উভয় উপত্যকার ক্ষেত্ৰে ক্ষতিকারকই হবে’। তিনি আরও উল্লেখ করেন আইনের সবচেয়ে বাজে দিকটা হলো ২০১৪-র ডিসেম্বরের আগে রাজ্যে আসা লোকেদের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য বৈধ প্ৰমাণ হিসেবে কোনও নথি দেখাতে হবে না। এতে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে কোনও বিদেশি তার প্ৰবেশের দিন থেকে নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। ‘কোনও ব্যক্তির উপাধি যদি আলি হয় তিনি তার উপাধি পাল্টে সাহা অথবা বসাক-এ পাল্টে নিলে তিনি নাগরিকত্ব পাবেন যেটা অসমের জনবিন্যাসে মারাত্মক প্ৰভাব ফেলবে’। ক্যার সমর্থনে বিজেপি যে শান্তি মিছিল বের করছে তাতে সাড়া না দিতে নাথ জনগণের প্ৰতি আহ্বান জানান। ছাত্ৰদের উদ্দেশে আসু নেতা বলেন,নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদের পাশাপাশি তারা যেন নিজেদের পড়াশোনাও অব্যাহত রাখে। ‘ক্যা-র বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে এবং সরকার প্ৰতিবাদকারীদের ওপর কোনও দমন নীতি প্ৰয়োগ করলে তা বরদাস্ত করা হবে না’-বলেন নাথ। জনপ্ৰিয় শিল্পী জুবিন গার্গ,মানস রবিন,পবিত্ৰ রাভা এবং অন্যান্যরা সরকার যাতে রাজ্যে আইনটি কোনওভাবে চাপাতে না পারে তার জন্য আইনটির বিরুদ্ধে জনগণকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানান। সরকার শিল্পী ও টেকনিশিয়ানদের প্ৰত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার যে প্ৰস্তাব রেখেছে তার সমালোচনা করে জুবিন বলেন,গুয়াহাটিতে খারঘুলির বাড়িতে আমি ব্যক্তিগতভাবে প্ৰতিদিনই এই অর্থের বেশি অঙ্ক অভাবগ্ৰস্তদের দিয়ে আসছি। বিদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়া সম্পর্কে জুবিন বলেন,পণ্য সামগ্ৰী বা পশু পাখির ক্ষেত্ৰে রপ্তানি,আমদানি করা যায়,মানুষের ক্ষেত্ৰে সেটা চলে না। জনপ্ৰিয় সংগীত শিল্পী বিপিন চাওডাং বলেন,শিল্পী সমাজ ক্যার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসমিয়া সমাজের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। সরকার অসম থেকে এই আইন তুলে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ ক্যার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জকারীদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানাবে সরকারঃ মোদি
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Public meeting on Protection of the indigenous communities held in Tinsukia