শ্বেতা আগরওয়াল হত্যা মামলায় প্ৰধান অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিল আদালত

শ্বেতা আগরওয়াল হত্যা মামলায় প্ৰধান অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিল আদালত

গুয়াহাটিঃ ফাস্ট ট্ৰ্যাক কোর্ট শনিবার শ্বেতা আগরওয়াল হত্যাকাণ্ডের প্ৰধান অভিযুক্ত গোবিন্দ সিংঘালকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে। গোবিন্দের মা কমলা দেবী সিংঘাল ও বোন ভবানী সিংঘালকে যাবজ্জীবন কারাবাসের রায় দিয়েছে কোর্ট। আদালত গত ৩১ জুলাই এই মামলায় তিনজন অভিযুক্তকেই দোষী সাব্যস্ত করেছিল।

শ্বেতা আগরওয়ালের হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। মামলাটি নিয়ে তদন্ত চলাকালেই গোবিন্দ হত্যাকাণ্ডের কথা কবুল করেছিল। হত্যাকাণ্ডের পূর্ব ও পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কেও পুলিশের কাছে ব্যাখ্যা করেছিল গোবিন্দ। হত্যাকাণ্ডের পর মৃতদেহ একটি ব্যাগে পুরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করার কথাও পুলিশের কাছে বর্ণনা করেছে সে। ঘরনার সময় শ্বেতা গুয়াহাটি কেসি দাস কমার্স কলেজের বিকম-এর পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্ৰী ছিল। সিংঘালের ভাড়া বাড়ির বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল শ্বেতার অর্ধদগ্ধ দেহ।

প্ৰাপ্ত রিপোর্ট অনু্যায়ী,২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর শ্বেতা শহরের শান্তিপুর এলাকায় গোবিন্দের(পুরুষ বন্ধু)বাড়িতে গিয়েছিল। ওই সময় গোবিন্দ তাকে বিয়ের জন্য পীড়াপীড়ি করায় উভয়ের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। শ্বেতা রাজি না হওয়ায় ক্ৰোধের বশে গোবিন্দ শ্বেতাকে ধাক্কা মারায় তার মাথা ওয়ালে গিয়ে লাগে। সেই সময়ই শ্বেতার মৃত্যু হয়।

মেধাবী ছাত্ৰী শ্বেতাকে হত্যা করা হয়েছিল ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর। গোবিন্দের মা কমলা দেবী ও বোন ভবানী সিংঘাল শ্বেতার মৃতদেহে আগুন দিতে গোবিন্দকে সাহায্য করেছিলেন। ভরলুমুখের শান্তিপুরে থাকা গোবিন্দের ভাড়া বাড়ি থেকে শ্বেতার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।

শ্বেতার পরিবার,বন্ধু এবং অন্যান্যরা এই ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। শনিবার ফাস্ট ট্ৰ্যাক আদালত দীর্ঘ প্ৰতীক্ষিত এই ঘটনার রায় দান করে।

ঘটনার বিবরণে প্ৰকাশ ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বরে ঘটনাটি ঘটে। গোবিন্দের সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্কই শ্বেতার জীবনে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্ৰী শ্বেতা ২০১৫ সালে হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিল।

গোবিন্দের সঙ্গে শ্বেতার সম্পর্ক গড়ে উঠলেও শ্বেতা স্বপ্ন দেখেছিল গোবিন্দকে নিয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার। সেদিন কি শ্বেতা বুঝতে পেয়েছিল গোবিন্দের সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক একদিনের মধ্যেই তার জীবন দৌড় থামিয়ে দিতে পারে।

১৭ সালের ৪ ডিসেম্বরের ওই অভিশপ্ত দিনে গোবিন্দ তার বাইকে করে শ্বেতাকে ভরলুমুখের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। ওই দিন বিয়ে নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ক্ৰোধের বশে গোবিন্দ শ্বেতাকে ধাক্কা মারলে শ্বেতার মাথা সজোরে ওয়ালে লাগে। মাথায় আঘাত লাগায় মৃত্যু হয় শ্বেতার। অপরাধ চাপা দিতে গোবিন্দ বাইকে করে শ্বেতার মৃতদেহ ভরলুতে ফেলে দেওয়ার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু সেটা করা সম্ভব হয়নি। মৃতদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে গোবিন্দ। ধরা পড়ার ভয়ে ঘরের বাথরুমে শ্বেতার দেহ জ্বালিয়ে প্ৰমাণ লোপাটের চেষ্টা করে। এ কাজে গোবিন্দের মা কমলা দেবী ও বোন ভবানী সাহায্য করে তাকে। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ড,ষড়যন্ত্ৰ ও চূড়ান্ত ও প্ৰমাণ লোপাটের জন্য ৩০২/১২০(বি)/২০১ ধারায় গোবিন্দ,তার মা ও বোনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল। আদালত ১ আগস্ট এই মামলার রায় দেওয়া কথা ছিল। অনিবার্য কারণে ওই দিন রায়দান স্থগিত রাখা হয়।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com