বেলুড়ঃ নতুন নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে সচেতনতা ছড়ানোর জন্য যুবকদের সাহায্য চেয়ে প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি রবিবার অভি্যোগ করেন,একাংশ রাজনৈতিক দল ওই আইনটি বুঝতেই রাজি নয় এবং তারা এসম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে চলেছে। এই আইনে কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। উল্টে কিছু মানুষ এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাবেন।
রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সদর দপ্তর বেলুড় মঠে স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৭ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন মোদি। প্ৰধানমন্ত্ৰী বলেন,১১ ডিসেম্বর সিএএ(ক্যা)সংসদে পাস হওয়ার প্ৰায় একমাস পর গত শুক্ৰবার সেটি কার্যকর হয়েছে। কিন্তু ক্যা সম্পর্কে যুব সমাজ ও দেশের অন্যান্য নাগরিকদের ভড়কানো হচ্ছে।
‘সিএএ হচ্ছে একটা আইন যা নাগরিকত্ব দেবে,কারো নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেবে না। সরকার এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দিচ্ছে,এটা কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে না’-বেলুড়ে যুব সমাজের এই সমাবেশে একথা বলেন প্ৰধানমন্ত্ৰী। উল্লেখ্য,কলকাতার কাছে হাওড়া জেলায় এই বেলুড় মাঠ প্ৰতিষ্ঠা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন সারা দেশে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
‘কিন্তু একাংশ রাজনৈতিক দল সিএএ-র বিষয়টি বুঝতেই রাজি নয়। তারা ভুল ধারণায় ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে’-উল্লেখ করেন মোদি। ‘এই আইনে কি রয়েছে। কেন এই আইন প্ৰয়োজন? এনিয়ে মানুষের মনে নানা রকম প্ৰশ্ন রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন লোকেরা এই ইস্যুটি নিয়ে লাগাতার পরিস্থিতি বিষিয়ে তুলছে। যুব সমাজে ইস্যুটি নিয়ে ব্যাপক সচেতনও রয়েছেন। কিন্তু এরপরও বহু মানুষ ভ্ৰান্ত ধারণা ও গুজবের শিকার হচ্ছেন। এই সমস্ত মানুষজনকে বিষয়টি সম্পর্কে বোঝানোর দায়িত্ব আমাদের। ইস্যুটি নিয়ে তাদের মন থেকে সন্দেহ ঘোচানো আমাদের কর্তব্য’-বলেন মোদি।
প্ৰধানমন্ত্ৰী আরও বলেন,বাংলাদেশ,পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে যারা ভারতে আশ্ৰয় নিয়েছেন সিএএ-র মাধ্যমে শুধু তাঁদেরই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ‘আমরা রাতারাতি এই নতুন আইনটি আনিনি। যে সমস্ত মানুষ ভারতের সংবিধান বিশ্বাস করেন তাদেরই নির্দিষ্ট কিছু আইনি পন্থার মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্ৰস্তাব রয়েছে আইনে’। ‘ভারতে আসার আগে এই সমস্ত শরণার্থীদের সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছিল। তাদের কন্যা,বোনেদের সম্মান নিয়েও টানা টানি হয়েছে। তাঁদের কাছে বাঁচার লড়াইটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। জীবন নিয়েও সংকটের মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের’। তাই এই সমস্ত শরণার্থীদের ফেরৎ পাঠিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া কি সরকারের পক্ষে উচিত হতো-সমাবেশে জানতে চান প্ৰধানমন্ত্ৰী। সমাবেশে উপস্থিত দর্শক এবং মিশন স্কুলের ব্যাপক সংখ্যক ছাত্ৰ সমস্বরে বলেন ‘না’। এরপরই মোদি বলেন,অন্যের জন্য কাজ করা কি সঠিক না ভুল-জবাব আসে সঠিক।
সমাবেশে মোদি আরও একটা প্ৰশ্ন রাখেন,এই ইস্যুতে সমস্ত যুব সমাজ যদি তার পাশে থাকে তাহলে জবাবে হ্যাঁ শব্দটিই প্ৰতিধ্বনিত হবে। প্ৰধানমন্ত্ৰী বলেন,সমাবেশে উপস্থিত প্ৰতিজন যুবক যখন এই সরল সহজ বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন,সেই একই বিষয় একাংশ রাজনৈতিক দল বুঝতে চায় না। তারা লাগাতার ইস্যুটি সম্পর্কে ভুল ধারণা ছড়িয়ে যাচ্ছে। একমাত্ৰ রাজনৈতিক স্বার্থপূরণেই রাজনৈতিক দলগুলি এই ভুল ধারণা ছড়াচ্ছে-বলেন মোদি।
এমনকি জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীও ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ারই পোষকতা করেছিলেন-বলেন প্ৰধানমন্ত্ৰী। আইন সম্পর্কে উত্তরপূর্ব ভারতের জনগণকে আশ্বস্ত করে মোদি বলেন,এই আইনে অঞ্চলটির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ ক্যার সঙ্গে অসম চুক্তির ৬ নং শর্ত জুড়ে জনগণকে বিভ্ৰান্ত না করার আহ্বান সমুজ্জ্বলের
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Protesters, who walked all the way from Tinsukia-Guwahati to protest against CAA 2019, Detained!