গুয়াহাটিঃ বন্যা বিধ্বস্ত মাজুলিতে সোমবার রাতে একপাল বুনো হাতি রীতিমতো তাণ্ডব চালায়। বুনো হাতিরা নদীদ্বীপের শালমরা গ্ৰামে হানা দিয়ে পাঁচটি পরিবারের ঘরদোর ভেঙে সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে। ওই পালে ৮০টি-র মতো হাতি ছিল। ঘর গুড়িয়ে দিলেও হাতির আক্ৰমণ থেকে কোনও ক্ৰমে প্ৰাণে বেঁচে যান পরিবারগুলোর লোকেরা। রাত থেকে হাতির পাল গ্ৰামে গেড়ে বসায় গ্ৰামের মানুষ সারা রাত জেগেই কাটান। বন বিভাগের লোকেরা চেষ্টা করেও হাতির পালকে নড়াতেই পারেননি। আতঙ্কিত গ্ৰামবাসীরা কোনও ক্ৰমে প্ৰাণ বাঁচাতে সক্ষম হন। মাজুলির শালমরা গ্ৰামের ১নং শৈলস্পারের কাছে একপাল বুনো হাতি অবস্থান করেছে। সোমবার রাতে খাবারের খোঁজে পালটি গ্ৰামে ঢোকে। হাতি দেখে আতঙ্কিত গ্ৰামবাসীরা এদিক-ওদিকে পালাতে শুরু করেন। অকনমান হাজরিকা নামের এক ব্যক্তির ঝুপড়িটি সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দেয় হাতিরা। নদী ভাঙনের মুখে পড়ে সাতবার ভিটে পাল্টেছেন তিনি। মাজুলি সুরক্ষার জন্য নির্মাণ করা স্পারের ওপর ঝুপড়ি বানিয়ে বাস করছিলেন হাজরিকা। দিন হাজিরা খেটে জীবন নির্বাহ করেন তিনি। সারা দিনের খাটা খাটনির শেষে কিছু চাল কিনে এনেছিলেন। হাতিরা সেগুলো খেয়ে ফেলে। আরও একজন অশীতিপর বৃদ্ধা আইতি হাজরিকার ঘরটিও ভেঙে ফেলে হাতিরা। ঘর হারিয়ে একাকি জীবন নির্বাহ করা এই বৃদ্ধা এখন পড়েছেন অথৈ জলে। চোখের জল ফেলে বৃদ্ধা এখন ওই ভাঙা চালার নিচেই মাথা গুজেছেন।
অন্যদিকে দুলাল ভূঞা,ক্ষেমারাম হাজরিকা এবং কনমান চমুয়ার ঘর ভেঙেও লণ্ডভণ্ড করে হাতিরা। গত ১৯ বছর ধরে এই হাতির পাল মাজুলিতে ত্ৰাস চালিয়ে আসছে। এপর্যন্ত ১৪ জন নিরীহ গ্ৰামবাসী হাতির পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু বন বিভাগ হাতির দৌরাত্ম্য কমাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
এমনিতেই ফি বছর মাজুলির মানুষ বন্যা-ভাঙনে ক্ষতিগ্ৰস্ত হন। তার ওপর হাতির তাণ্ডব তাঁদের জীবনে ডেকে আনছে ঘোর অন্ধকার।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ নুমলিগড়ের গ্ৰামে বুনো হাতিরা ৪টি বাড়ি গুড়িয়ে দিল
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Man-Elephant Conflict in Majuli, Many residences destroyed