গুয়াহাটিঃ ত্ৰাণের বিধি ব্যবস্থা অনু্যায়ী রাজ্যের বন্যা দুর্গত মানুষদের সরকার যথাসময়ে কেন তহবিল রিলিজ করেনি-এনিয়ে প্ৰশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। দিশপুরের এধরনের গাফিলতি সব সমস্যার জড় বলে মনে করা হচ্ছে,যার দরুন রাজ্যের বন্যাদুর্গতদের ঝক্কির মুখে পড়তে হয়েছে।
ত্ৰাণের অর্থ যথাসময়ে রিলিজ না করা অসমে একটা লাগাতার সমস্যা বলেই ধরে নেওয়া যায়। চলতি বছরে বন্যার সময় রাজ্যের বিভিন্ন ত্ৰাণ শিবিরে আশ্ৰিতদের কাপড়চোপড় ও বাসন ইত্যাদি দেওয়ার কথা ছিল। ত্ৰাণ ব্যবস্থার পরিপ্ৰেক্ষিতে রাজ্য সরকার পরিষ্কার করে জানিয়েছিল যে ত্ৰাণ শিবিরে আশ্ৰিত প্ৰতিটি বন্যাক্লিষ্ট পরিবার শিবির ছাড়ার সময় বস্ত্ৰ ও বাসন-কোষন কেনার জন্য ৩,৮০০ টাকা করে পাবেন। কিন্তু প্ৰকৃত চিত্ৰটি খতিয়ে দেখে জানা গেছে শিবিরে আশ্ৰিতদের ৯০ শতাংশ মানুষ সরকারের প্ৰতিশ্ৰুত ওই অর্থ এখনও হাতে পাননি।
তাছাড়া বন্যাপীড়িত ৮০ শতাংশ মানুষের ঘরদোর-বন্যার তোড়ে ভেঙে গেছে। কিন্তু এই সমস্ত মানুষ এখনও পাননি কোনও ক্ষতিপূরণের অর্থ। বন্যা দুর্গতদের আর্থিক সাহা্য্য দানে বিলম্বের পিছনে অর্থাভাব বড় কারণ নয়। এই বিলম্বের পিছনে আমলাতান্ত্ৰিক লালফিতার ফাঁসই বড় কারণ বলে একটা মহল সন্দেহ পোষণ করেছেন। এব্যাপারে দিশপুর মান্ধাতা আমলের ব্যবস্থাকেই অনুসরণ করছে বলে ওই মহলটি অভিযোগ করেছে। যেখানে বন্যা দুর্গতদের জন্য আর্থিক সাহায্য দানের বিষয়টি তড়িঘড়ি সম্পন্ন করা উচিত ছিল,সেখানে তহবিল রিলিজে ঢিলেমির জন্য দুর্গত মানুষদেরই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি বর্তমানে লালফিতার ফাঁসে ফাইলবন্দি অবস্থায় আটকে রয়েছে। সরকারি সূত্ৰের মতে,বন্যাপীড়িত প্ৰতি পরিবার পিছু ৩,৮০০ টাকা করে দেওয়ার জন্য সরকারকে ৪০ কোটি টাকা রিলিজ করতে হবে। ৪০ কোটি টাকা রিলিজ করা সম্পর্কিত ওই ফাইলটি বর্তমানে রাজ্যের অর্থ দপ্তরে লালফিতার ফাঁসে আটকে আছে।
বন্যা দুর্গতদের অর্থ রিলিজে দেরির কারণ অর্থাভাব নয়। ফাইলটি আমলাতান্ত্ৰিক লালফিতার ফাঁসে আটকে থাকাই এই দেরির কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এব্যাপারে গৃহীত প্ৰক্ৰিয়া মতে,মুখ্য সচিবের নেতৃত্ব গঠিত রাজ্য পর্যায়ের কমিটি বন্যা ত্ৰাণের জন্য সুবিধাভোগীদের তালিকা অনুমোদন করতে হবে। কিন্তু রাজ্য পর্যায়ের ওই কমিটি সুবিধাভোগীদের ওই তালিকা এবং এক্ষেত্ৰে চাওয়া অর্থের বিষয়টিতে এখনও অনুমোদন জানায়নি।
চলতি বছরের বিধ্বংসী বন্যায় রাজ্যে ১.৫ লক্ষ .হেক্টর কৃষি জমির ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন বা নাই করুন,বহু জেলার ক্ষয়ক্ষতির হিসেব এখনও করা হয়নি।
স্ট্যান্ডিং রুলস অনু্যায়ী,বন্যায় ঘরবাড়ি এবং কৃষিজমির ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি লাটমণ্ডলরা সরেজমিনে খতিয়ে দেখে সুবিধাভোগীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের কাছে পাঠিয়ে থাকেন। এরপর জেলাশাসকরা সেই তালিকা সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির সেক্ৰেটারির কাছে পাঠান এবং সেক্ৰেটারিরা ওই তালিকা রাজস্ব বিভাগের কাছে দাখিল করেন। রাজস্ব দপ্তর বিভিন্ন বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া ওই তালিকাগুলি খতিয়ে দেখে তা অর্থ বিভাগের কাছে পাঠিয়ে দেন তহবিল রিলিজ করার জন্য। এত দীর্ঘ প্ৰক্ৰিয়ার পরও যদি এধরনের তালিকাগুলি অর্থ বিভাগে আটকে থাকে তা হলে সমস্ত প্ৰক্ৰিয়া বৃথায় পর্যবসিত হওয়ার উপক্ৰম দেখা দেবে বলে ওই মহলটি মনে করে। তহবিল রিলিজে এই বিলম্বের জন্য বন্যাপীড়িতদের দুর্দশা বাড়বে বৈ কমবে না। তাই লালফিতার এজাতীয় ফাঁস বন্ধ করে ক্ষতিগ্ৰস্তরা যাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উপকৃত হতে পারেন তার জন্য দিশপুরের অবিলম্বে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্ৰহণ একান্ত জরুরি বলে সচেতন মহন মনে করেন।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ নজিরায় পুরনো দিনের ইটের তৈরি রহস্যজনক সুড়ঙ্গ ও কাঠামো উদ্ধার
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: ABYSF, NLFB (pro-talk)& Ex BTF submits memorandum to CM Sonowal