বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিতে মানুষের দেহদানের প্ৰবণতা বেড়েছে

বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিতে মানুষের দেহদানের প্ৰবণতা বেড়েছে
Published on

গুয়াহাটিঃ অসমের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য মানুষের দেহ দানের প্ৰবণতা অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। মুসলিম সম্প্ৰদায় সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য নিজেদের দেহ দান করার সদিচ্ছা পোষণ করছেন।

রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির ডিসেকশন হলে এপর্যন্ত প্ৰায় ১০০ জন ব্যক্তির মৃতদেহ জমা পড়েছে।

রাজ্যে মানুষের মৃতদেহ এবং অঙ্গ প্ৰত্যঙ্গ সংগ্ৰহের এনজিও ইলোরা বিজ্ঞান মঞ্চ পথিকৃতের ভূমিকা পালন করে আসছে। মঞ্চ বলেছে,অনেক মানুষই তাদের দেহ দান করার প্ৰস্তাব রেখেছেন এবং এই প্ৰবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১০০০-এর বেশি মানুষ তাদের দেহ দান করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। মঞ্চের একজন কর্মকর্তা বলেন,এই মহান উদ্দশ্য নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার বিষয়টি বর্তমানে রাজ্যের মুসলিম সমাজেও দ্ৰুত ছড়াচ্ছে। এই ইস্যুটি নিয়ে মুসলিম সমাজে একসময়ে বেশ জটিলতা থাকতে দেখা গিয়েছে। কর্মকর্তাটি বলেন,তিনজন মুসলমান ব্যক্তি ইতিমধ্যেই এই উদ্দেশ্যে তাদের দেহ দান করেছেন। আরও মানুষ দেহ দানের প্ৰস্তাব রেখেছেন। এই প্ৰবণতা ক্ৰমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইতিমধ্যেই যারা দেহ দান করেছেন তাঁদের তালিকায় রয়েছেন গুয়াহাটির রিহাবাড়ি অঞ্চলের সূর্যব্ৰত লহকর(৮৬)। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে লহকরের মা ১৯৩৯ সালে সতী হয়েছিলেন। একটা সময় এদেশে বিধবারা ইচ্ছাকৃত অথবা বলপূর্বকভাবে স্বামীর চিতাই একই সঙ্গে আগুনে আত্মাহুতি দিতেন। আমি এখানে এজন্যই লহকরের মায়ের প্ৰসঙ্গ তুলেছি যে পরিবারে একসময়ে অন্ধবিশ্বাস,কুসংস্কারে আস্থা ছিল সেই পরিবারের ছেলে আজ বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য নিজের দেহ দান করতে এগিয়ে এসেছেন। এভাবেই আরও মানুষকে দেহ দানের জন্য উৎসাহিত ও অনুপ্ৰাণিত করবে আগামি দিনে-বলেন কর্মকর্তাটি।

কিন্তু রাজ্য সরকারের সক্ৰিয়তার অভাবে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলো পর্যাপ্ত মৃতদেহের অভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। রাজ্য সরকারকে এব্যাপারে প্ৰয়োজনীয় পরিকাঠামো সৃষ্টি করতে হবে যাতে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ তাদের দেহ ও ইন্দ্ৰিয় দানে উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসেন।

একটা মৃতদেহ নিয়ে ছয় থেকে আটজন ছাত্ৰ পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে ২০-৩০ জন ছাত্ৰ একটি মৃতদেহ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে। তেজপুর মেডিক্যাল কলেজের একজন অধ্যাপক একথা জানান। মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃতদেহ দান করা উচিত। মেডিক্যালের ছাত্ৰরা তাদের পাঠক্ৰমের প্ৰথম দুবছর মানুষের দেহ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালায়। আবার স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এক একজন ছাত্ৰের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য একটি করে মৃতদেহ প্ৰয়োজন হয়।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Rajya Sabha MP Biswajit Daimary Press Conference | The Sentinel News

logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com