নয়াদিল্লিঃ অসমে ইনারলাইন পারমিট(আইএলপি)চালু করার দীর্ঘ প্ৰতীক্ষিত দাবিটি আগামি ফেব্ৰুয়ারির পরে যেকোনও সময়ে সত্যে পরিণত হতে পারে। যেহেতু কেন্দ্ৰ এই প্ৰস্তাবটি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে বলে জানা গেছে। অসম চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে গঠিত উচ্চস্তরীয় কমিটির প্ৰাথমিক রিপোর্টে একথা জানা গিয়েছে। উচ্চস্তরীয় এই কমিটি অসমে আইএলপি চালু করার প্ৰয়োজন সম্পর্কে সুপারিশ করেছে। অসমিয়া মানুষের স্বার্থে রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করতে ১৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি রাজ্যে আইএলপি চালু করার পাশাপাশি অসম বিধানসভা,স্থানীয় পর্ষদ এবং তাদের নিয়োগের ক্ষেত্ৰে আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করেছে বলে জানা গেছে।
১৯৮৫ সালে স্বাক্ষরিত অসম চুক্তির ৬নং শর্তে অসমিয়া মানুষের সাংস্কৃতিক,সামাজিক,ভাষিক অস্তিত্ব এবং পরম্পরা সংরক্ষণে সাংবিধানিক,আইনগত এবং প্ৰশাসনিক রক্ষাকবচের ব্যবস্থার কথা উল্লেখ রয়েছে।
এই বিষয়টির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে কমিটির চূড়ান্ত রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক অসমে আইএলপি চালু করা সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। গত ১৫ জানুয়ারি কমিটিকে তাদের কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
কমিটির প্ৰাথমিক রিপোর্ট এবং নতুন করে পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের(ক্যা)বিরুদ্ধে অসমে চলা জোর আন্দোলন যা কয়েক দশক ধরে নিরবচ্ছিন্ন অনুপ্ৰবেশের অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্ৰ করে অসমিয়াদের আতঙ্কিত করেছে। এরই পরিপ্ৰেক্ষিতে অসমে আইএলপি প্ৰবর্তনের বিষয়ে মন্ত্ৰকে বিভিন্ন আলোচনার জন্ম নেয়। নাম প্ৰকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থাকে একথা জানান।।
‘৬নং দফা নিয়ে গঠিত উচ্চস্তরীয় কমিটির প্ৰাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পর থেকে অসমে আইএলপি চালু করার ইস্যু নিয়ে মন্ত্ৰক বিভিন্ন সময়ে আলোচনা করেছে। কমিটি আগামি ১৫ ফেব্ৰুয়ারি চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করার পরই কেন্দ্ৰ আইএলপি সম্পর্কে তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে’-জানান কর্মকর্তাটি।
আইএলপি বহাল থাকা রাজ্যগুলিতে প্ৰবেশ করতে হলে দেশের অন্যান্য রাজ্যের ভ্ৰমণকারীদের অনুমতি নিতে হয়। এই ব্যবস্থা স্থানীয় মানুষের জমি,চাকরিবাকরি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্ৰে সুরক্ষা দেবে। আইএলপি ব্যবস্থার প্ৰধান উদ্দেশ্য হচ্ছে স্থানীয় ভূমিপুত্ৰ মানুষের সুরক্ষায় দেশের অন্যান্য রাজ্যের লোকেদের আইএলপি বহাল থাকা রাজ্যে সংস্থাপন প্ৰতিরোধ করা।
স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী অমিত শাহ গত মাসে সংসদে বলেছিলেন যে অসম চুক্তির ৬নং দফা রূপায়ণে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ক্যা থেকে অসমিয়া মানুষের স্বার্থে রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করবে।
২০১৯-এর জানুয়ারিতে এসম্পর্কে প্ৰথম প্যানেল গঠন করা হয়েছিল প্ৰাক্তন আইএএস অফিসার এমপি বেজবরুয়াকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়ে। কিন্তু বেজবরুয়া এবং অন্যান্য চারজন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯-এর বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ জানিয়ে সরে দাঁড়ানোয় ওই কমিটি ভেঙে যায়।
এরপর ২০১৯-এর জুলাইয়ে গৌহাটি হাইকোর্টের প্ৰাক্তন বিচারপতি বিপ্লব কুমার শর্মাকে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়ে ১৪ সদস্যের উচ্চস্তরীয় কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। ৬নং দফা নিয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের এই কমিটিকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তাদের রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ক্যা নিয়ে বিক্ষোভ-প্ৰতিবাদ চরমে ওঠায় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক কমিটিকে তাদের রিপোর্ট পেশের সময় আরও একমাস বাড়িয়ে দেয়। অসম বিধানসভা ও স্থানীয় পর্ষদগুলোতে আসন সংরক্ষাণের ব্যাপারে রিপোর্টে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
অসম চুক্তির ৬নং দফায় ১৯৭১-এর পরে অসমে আসা হিন্দু,মুসলিম সহ সমস্ত অবৈধ অনুপ্ৰবেশকারীদের শনাক্তকরণ ও বহিষ্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানে বিদেশি শনাক্তকরণ ও বহিষ্কারের ভিত্তি বছর হলো ১৯৫১ সাল।
অসমের মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল সম্প্ৰতি নয়াদিল্লিতে অসম চুক্তির ৬নং দফার বিভিন্ন দিক নিয়ে স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী অমিত শাহর সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ ক্যা নিয়ে পিছু হটছে না কেন্দ্ৰ,বিরোধীদের বললেন অমিত শাহ
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Vivekananda Civil Service Academy inaugurated on Monday in Guwahati